ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

অপার মহিমার রমজান

রমজান মাসে চারটি কাজ বেশি বেশি করতে হয়: মাওলানা মুহসিন উদ্দিন

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৯ ঘণ্টা, জুন ২০, ২০১৬
রমজান মাসে চারটি কাজ বেশি বেশি করতে হয়: মাওলানা মুহসিন উদ্দিন

বরিশাল: বরিশাল বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের একটি শহর। প্রাচ্যের ভেনিস নামে পরিচিত বরিশাল কীর্তনখোলা নদীর তীরে অবস্থিত।

এর শহরের পুরনো নাম চন্দ্রদ্বীপ। বরিশালে তাবলিগের কাজ পরিচালিত হয় বরিশাল মারকাজ মসজিদ থেকে। দেশ-বিদেশের তাবলিগিদের কাছে রয়েছে এই মসজিদের ব্যাপক পরিচিতি।   বর্তমানে মসজিদের ইমাম ও খতিবের দায়িত্ব পালন করছেন মাওলানা মুহসিন উদ্দিন। বাংলানিউজের স্টাফ করেসপন্ডেন্ট মুশফিক সৌরভ তার মুখোমুখি হয়েছিলেন। কথা বলেছেন রমজানের ইবাদত-বন্দেগি বিষয়ে।

আলোচনার শুরুতে মাওলানা মুহসিন বলেন, পবিত্র রমজান মাসের ফজিলত, মাহাত্ম্য, গুরুত্ব ও তাৎপর্য অনেক। এ সম্পর্কে কোরআন-হাদিসে প্রচুর বর্ণনা রয়েছে। এক হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত সালমান (রা.) বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শাবান মাসের শেষ তারিখে আমাদের নসিহত করেছেন যে, তোমাদের ওপর এমন একটি মাস আসছে যা অত্যন্ত মর্যাদাশীল ও বরকতময়। এ মাসে এমন একটি রাত (শবেকদর) রয়েছে, যা হাজার মাসের চেয়েও উত্তম।

এ মাসে রোজা রাখাকে ফরজ ও এ মাসের রাতের নামাজকে অর্থাৎ তারাবি পড়াকে সওয়াবের কাজ বানিয়েছেন। এ মাসে একটি ফরজ আদায় করা অন্যমাসে সত্তরটি ফরজ আদায় করার সমান। রমজান মাস সবরের মাস, আর সবরের মাধ্যমে আল্লাহতায়ালা জান্নাত রেখেছেন।

মারকাজ মসজিদের খতিব বলেন, রমজান মাস হলো, মানুষের প্রতি সহানুভুতির মাস। এ মাসে মুমিনের রিজিক বাড়িয়ে দেওয়া হয়। যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে ইফতার করাবে, তা তার গোনাহমাফ ও জাহান্নাম হতে মুক্তির কারণ হবে এবং সে রোজাদারের সমান সওয়াবের ভাগী হবে।

রমজান মাসে চারটি কাজ বেশি বেশি করতে হয়, সেগুলো হলো- বেশি বেশি কালেমায়ে তাইয়্যেবা পড়া, ইস্তেগফার পাঠ করা, আল্লাহতায়ালার নিকট জান্নাত লাভ এবং জাহান্নাম হতে মুক্তির জন্য দোয়া করা।

আল্লাহতায়ালা রমজান মাসের রোজা ফরজ করেছেন এবং রাত জাগরণকে অর্থাৎ তারাবির নামাজকে সুন্নত করেছেন। আমাদের সবাইর উচিৎ রমজান মাসে এ বিষয়ের প্রতি অনুগামী হওয়া। অবশ্য যারা রমজান মাসে সফর ইত্যাদি কিংবা অন্য কোনো কারণে নিজ এলাকায় তারাবি পড়তে পারেন না বা তারাবি পড়তে মুশকিল হয়, তাদের জন্য উত্তম হলো- রমজানের শুরুর কয়েকদিনে তারাবির নামাজের মধ্যে পুরো কোরআন শরিফ শুনে নেওয়া, যাতে কোরআন শরিফ অসম্পূর্ণ না থাকে। এর যেখানে সময়-সুযোগ হয়, সেখানে তারাবি পড়ে নেওয়া।

এখানে ভিন্ন দু’টি সুন্নত রয়েছে, একটি হলো- পুরো কোরআন শরিফ তারাবিতে পড়া বা শোনা অপরটি হলো, পুরো রমজান মাসে তারাবি পড়া।

রমজান মাসে কোরআন তেলাওয়াতের প্রতি গুরুত্বারোপ করে বলেন, রমজান মাসে সব আসমানি কিতাব নাজিল হয়েছে। এই রমজান মাসে হজরত জিবরাইল (আ.) প্রতি বছর সম্পূর্ণ কোরআন শরিফ নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে শুনাতেন, আবার কোনো কোনো রেওয়ায়াতে এসেছে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিবরাইলকে শোনাতেন। অর্থাৎ আল্লাহর কালামের সঙ্গে এ মাসের বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে। তাই আমাদেরও উচিৎ এ মাসে বেশি বেশি কোরঅান তেলাওয়াত করা। যারা কোরআন পড়তে জানেন না, তাদের কোরআন শেখার চেষ্টা করা।

আলোচনার শেষে এসে খতিব বলেন, পবিত্র রমজান মাসের একটি মুহূর্তও যেন নষ্ট না হয় অথবা অবহেলায় না কাটে সেদিকে খেয়ালা রাখা। আল্লাহতায়ালা সবার মাঝে হারাম ও অন্যায় কাজ থেকে বিরত থাকার তওফিক দান করুন। আমিন।

বাংলাদেশ সময়: ১৪০৫ ঘণ্টা, জুন ২০, ২০১৬
এমএইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।