ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অপার মহিমার রমজান

দান-খয়রাতের উপকারিতা বিষয়ে আজ তারাবির পাঠ

মুফতি মাহফূযুল হক, অতিথি লেখক, ইসলাম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২১ ঘণ্টা, জুন ২৯, ২০১৬
দান-খয়রাতের উপকারিতা বিষয়ে আজ তারাবির পাঠ

চলতি রমজান মাসের আজ ২৪তম খতমে তারাবি অনুষ্ঠিত হবে। আজকের খতমে তারাবিতে তেলাওয়াতকৃত কোরআনে কারিমের আয়াতে বিশেষ আলোচ্য বিষয় হলো- দান-খয়রাত প্রসঙ্গে।

এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ সূরা হাদিদের ২৪ নম্বর আয়াতে ইরশাদ করেছেন, ‘যারা কার্পণ্য করে, মানুষকে কার্পণ্যের নির্দেশ দেয় এবং মুখ ফিরিয়ে নেয়, সে জেনে রাখুক আল্লাহ অভাব মুক্ত ও প্রশংসনীয়। ’

পবিত্র কোরআনের আরও বহু স্থানে দান-খয়রাতের গুরুত্ব ও উপকারিতা নিয়ে আলোচনা রয়েছে। যেমন- ‘যারা নিজেদের ধন-সম্পদ আল্লাহর পথে দান করে তাদের উপমা একটি শস্যবীজ। যা সাতটি শীষ উৎপন্ন করে। প্রত্যেক শীষে এক শত শস্যদানা। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা বহুগুণ বৃদ্ধি করে দেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ। যারা আল্লাহর পথে ধন-সম্পদ দান করে এবং যা দান করে তা মানুষের কাছে বলে বেড়ায় না, (গ্রহীতাকে কটু কথা বলে বা মন্দ আচরণ করে) কষ্ট দেয় না তাদের পুরস্কার তাদের প্রতিপালকের কাছে আছে। আল্লাহ অভাবমুক্ত ও পরম সহনশীল। হে মুমিনগণ! দানের কথা মানুষের কাছে প্রচার করে, গ্রহীতাকে কষ্ট দিয়ে তোমাদের দানকে ওই ব্যক্তির মতো নিষ্ফল করে দিও না; যে ব্যক্তি মানুষকে দেখানোর জন্য নিজের ধন-সম্পদ দান করে থাকে এবং আল্লাহ ও পরকালকে বিশ্বাস করে না। তার উপমা একটি মসৃণ পাথরের মতো। যার ওপর কিছু মাটি থাকে। অতঃপর প্রবল বৃষ্টিপাত তাকে পরিষ্কার করে ফেলে। তারা যা উপার্জন করে তার কিছুই নিজেদের কাজে লাগাতে পারে না। আল্লাহ কাফের সম্প্রদায়কে সৎপথে পরিচালিত করেন না।

যারা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে এবং নিজেদের আত্মাকে বলিষ্ঠ করার উদ্দেশ্যে ধন-সম্পদ দান করে তাদের উপমা কোনো উঁচু ভূমিতে অবস্থিত বাগানের মত। যাতে মুষলধারে বৃষ্টি হয়। ফলে তার ফলমূল দ্বিগুণ উৎপন্ন হয়। যদি মুষলধারে বৃষ্টি নাও হয় তবু হাল্কা বৃষ্টিই যথেষ্ট। তোমরা যা কর আল্লাহ তা দেখেন। ... হে মুমিনগণ! তোমরা যা উপার্জন কর এবং আমি যা ভূমি থেকে তোমাদের জন্য উৎপন্ন করি তা থেকে যা উৎকৃষ্ট তা দান কর। নিকৃষ্ট বস্তু দান করার ইচ্ছাও করবে না। অথচ তোমরা নিজেরাও তা গ্রহণ কর না, যদি না তোমার চোখ বন্ধ থাকে। জেনে রাখ, আল্লাহ অভাবমুক্ত ও প্রশংসিত। শয়তান তোমাদের দারিদ্রের ভয় দেখায় এবং কার্পণ্য করতে নির্দেশ দেয়। আল্লাহ তোমাদেরকে তার ক্ষমা ও অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি দেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ। ’ –সূরা বাকারা: ২৬১-২৬৮

কোরআনে কারিমে আরও ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা মনে করে তাদের সম্পদে প্রার্থী ও সম্পদ বঞ্চিতদের অধিকার রয়েছে ... তারা জান্নাতে সম্মানিত হবে। ’ –সূরা আল মাআরিজ: ২৫

মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘দান-খয়রাত আল্লাহর ক্রোধ নিবারণ করে ও অপমৃত্যু প্রতিহত করে। ’ –সুনানে তিরমিজি: ৬৬৪
আল্লাহর দ্বীনের সেবায়, দ্বীন প্রচারের কাজে, দ্বীন শিক্ষা দানের কাজে, দ্বীন প্রতিষ্ঠার কাজে, ধর্মহীনতাকে প্রতিরোধের কাজে, গরিব, অসহায়, দুঃস্থ মানুষকে, জনকল্যাণে দান করা অনেক বড় একটি ইবাদত।

রমজান মাসে দান করা এ ইবাদতের গুণগত মান আরও বৃদ্ধি করে। সম্পদ বৃদ্ধির অসুস্থ সামাজিক প্রতিযোগিতা বর্তমানের মুসলমানদেরকে কার্পণ্য রোগে আক্রান্ত করে ফেলেছে। নেককার হওয়ার জন্য এ ব্যধি থেকে আরোগ্য লাভ করতে হবে। মুক্ত হস্তে সামর্থের সর্বোচ্চ পরিমাণ আল্লাহর পথে, দ্বীনের পথে, মানব কল্যাণের পথে দান করতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২০ ঘণ্টা, জুন ২৯, ২০১৬
এমএইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।