ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

অপার মহিমার রমজান

ঈদে নতুন জুতো পায়ে বিছানায় লাফিয়ে আনন্দ পেতাম: লিটন

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০২ ঘণ্টা, জুলাই ৩, ২০১৬
ঈদে নতুন জুতো পায়ে বিছানায় লাফিয়ে আনন্দ পেতাম: লিটন ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

পবিত্র রমজান মাসে বাংলানিউজ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমাজে যারা প্রতিষ্ঠিত তাদের শৈশব, কৈশোর ও বাল্যকালের রোজা ও ঈদের স্মৃতি জানার চেষ্টা করেছে। আজকের আয়োজনে কথা বলেছেন জাতীয় চার নেতার অন্যতম বাংলাদেশের প্রথম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামানের ছেলে, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন

বর্তমানে তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্য নির্বাহী কমিটির সদস্য এবং রাজশাহী মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি। বাংলানিউজের স্টাফ করেসপন্ডেন্ট শরীফ সুমন কথা বলেছেন আজকের অতিথির সঙ্গে। সেই আলাপচারিতায় চুম্বুকাংশ পাঠকের জন্য-

রাজনৈতিক কারণে দেশের কাজে আমার বাবা বছরের বেশিরভাগ সময় আমাদের ছেড়েই থাকতেন। দেশের আনাচে-কানাচে ছিল তার বিচরণ। ফলে তাকে ছড়াই আমাদের রমজান, ঈদ বা অন্য কোনো উৎসবের আনন্দঘন মুহূর্তগুলো কাটতো। দেশ ও দেশের মানুষের জন্য স্বার্থের জন্য একটা সময় বাবার অনুপস্থিতিটা আমাদের কাছে ছিল স্বাভাবিক। তবে আমরা পাঁচ ভাই-বোন বাবাকে খুব মিস করতাম। যদিও আমাদের মা তার অকৃত্রিম স্নেহ-মমতা দিয়ে কখনও বাবার শূন্যতা বুঝতে দেননি।

তবে খুব মনে আছে, ছোটবেলায় রমজান মাস এলে আমরা খুব আনন্দে থাকতাম। রমজানের চাঁদ ওঠার পর আমরা ভাই-বোন মিলে বাড়ি ছাদে গিয়ে পটকা ফুটিয়ে আতশবাজি করে রমজানকে স্বাগত জানাতাম। সেহরির সময় গরম ভাত, আলু ভর্তা, ডিম ভাজা আর ঘিয়ের সুগন্ধে ঘুম ভেঙে যেতো। ঘিয়ের গন্ধ আমাদের ঘুম থেকে উঠতে বাধ্য করতো। পুরো রমজান মাসজুড়েই মা অনেক যত্ন করে আমাদের সবার জন্য গরম সেহরির আয়োজন করতেন। সেহরি খেয়ে রোজা রাখতাম ইফতারে ভাঙতাম। এর মাঝে ভুলেও যেন কিছু না খেয়ে ফেলি; তা খুব খেয়াল রাখতাম। প্রতি সপ্তাহের রোববার পরিবারের সবাই আমরা একমঙ্গে ইফতার করতাম। ওই সময় রমজান মাস এলে সেহরি ও ইফতারকে ঘিরে খুব আনন্দ হতো।

তবে মা আমাদের ছোটদের জন্য রোজার মাসের রোজাকে চারভাগে ভাগ করে দিতেন। পয়লা রমজান, ১৫ রমজান, ২৭ রমজান আর ৩০ অর্থাৎ শেষ রমজান। মা বলতেন, ছোটদের এ চার দিন রোজা রাখলেই হবে। অবুঝ শিশু হওয়ায় আল্লাতায়ালা পুরো রমজানের সওয়াব তাদের আমলনামায় দিয়ে দেবেন। সেই সময় মায়ের দেওয়া ভাগ মতে রোজা রাখতাম। পরে সাবালক হওয়ার পর থেকে পুরো রমজান মাসেই রোজা পালন করে আসছি। আমার পরিবারের সবার কাছেই এ মাসটি বিশেষ গুরুত্বের।


আর ছোটবেলায় ঈদের অনুভূতিটা ছিল একেবারে অন্য রকম। ঈদ মানেই ছিল বাঁধ ভাঙা আনন্দের একটি দিন। মূলতঃ ছোটবেলায় ঈদের যে আনন্দ অনুভব করেছি এখন আর তেমনটা মনে হয় না। ঈদের আনন্দঘন মুহূর্তগুলো এখন কৈশোরের সোনালী স্মৃতি।

আমাদের সময় তো এত ফ্যাশন ছিল না। এত কাপড়, এত পোশাকের বাহার ছিল না। বোনদের জন্য থ্রি-পিস আর আমাদের জন্য পায়জামা-পাঞ্জাবি, প্যান্ট-শার্ট আর বাটার জুতো। এখনও মনে আছে, নগরীর রাণী বাজারের বাটার শো’রুম থেকে জুতো কিনে দেওয়া হতো আমাদের। আমরা দু’ভাই বাড়িতে ফিরে সেই নতুন বাটার জুতো পড়ে বিছানার ওপর হাপিয়ে না ওঠা পর্যন্ত লাফালাফি করতাম। সে যে কি সীমাহীন আনন্দ; ছিল তা বলার মতো না। আজ আর ঈদের কোনো কিছুতেই সেই আনন্দ অনুভূত হয় না!

বাংলাদেশ সময়: ১৭০১ ঘণ্টা, জুলাই ০৩, ২০১৬
এসএস/এমএইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।