ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

অপার মহিমার রমজান

অস্ট্রেলিয়ায় মুসলিমদের নিজ উদ্যোগে রোজা পালন করতে হয়

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫৪ ঘণ্টা, মে ২৯, ২০১৭
অস্ট্রেলিয়ায় মুসলিমদের নিজ উদ্যোগে রোজা পালন করতে হয় অস্ট্রেলিয়ায় মুসলিমদের নিজ উদ্যোগে রোজা পালন করতে হয়

বিশ্বের ক্ষুদ্রতম মহাদেশ হলেও অস্ট্রেলিয়া হচ্ছে বিশ্বের ষষ্ঠ বৃহত্তম দেশ। দেশটির বহু মানুষ ইসলাম ধর্মের অনুসারী এবং ইসলাম ধর্ম গ্রহণের হারও অনেক বেশি।

দেশটিতে মুসলমানের সংখ্যা ৬ লাখের মতো।  

এখন চলছে সিয়াম সাধনার মাস রমজান।

আবহাওয়া ও সামাজিক রীতি-নীতির কারণে ওখানকার রমজান সংস্কৃতিতে কিছুটা পার্থক্য থাকবে- এটাই স্বাভাবিক। অন্যান্য অমুসলিম দেশের মতো অস্ট্রেলিয়ার মুসলিমরাও কিছুটা বিপাকে পড়েন রোজার মাসে।  

কারণ অমুসলিম দেশটিতে রমজান মাসের ধর্মীয় পরিবেশ বিরাজ করার মতো কোনো অবস্থা থাকে না। মুসলিমদের নিজেদের উদ্যোগে ও আগ্রহে রোজা পালন করতে হয়। তবু মুসলিম কমিউনিটিগুলো রমজান এলেই সাজ সাজ রব পড়ে যায়। মসজিদের সাথে যোগাযোগ বাড়ে মুসলিমদের। অনেকেই কাজের ফাঁকে একটু ইবাদতের আশায় মসজিদে ঢুকে পড়েন। কেউ কেউ কর্মস্থলের অবসরে জিকির বা মুখস্থ কোরআন তেলাওয়াত করে থাকেন।

ইসলাম একটি যুগোপযোগী ধর্ম এবং এ ধর্ম মানবপ্রকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ জীবনবিধান। একমাত্র ইসলাম ধর্মই দেখায় মানবসমাজের উন্নতি ও সৌভাগ্যের পথ। এ কারণে আমরা দেখতে পাই- যারা জীবনের প্রকৃত অর্থ উপলব্ধি করার চেষ্টা করছেন- তারাই ইসলাম ধর্মের দিকে ঝুঁকছেন। অস্ট্রেলিয়ার এমনই এক আলোকসন্ধানী নারী- ভেরিটি পিটারসন।  

২০০৪ সালে তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন। ওই সময় তার বোনও ইসলাম গ্রহণ করেন। বর্তমানে তিনি হিজাব পড়েন এবং ইসলামি বিধিবিধান মেনে নিজের ছেলেমেয়েদেরও ইসলামি সংস্কৃতির ভাবধারায় বড় করছেন।  

এই নারী শুধু নিজেই ইসলাম গ্রহণ করেননি, তিনি মুসলিম হওয়ার পর থেকে অস্ট্রেলিয়ায় ইসলাম প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছেন। তিনি নওমুসলিমদের কল্যাণে বিভিন্ন ধরনের দাতব্য প্রতিষ্ঠান খুলেছেন।

দেশটিতে ৬০টির বেশি নিবন্ধিত দলের মধ্যে মাত্র একটি ইসলামি দল রয়েছে। সিডনিতে ‘অস্ট্রেলিয়ান মুসলিম পার্টি’ নামে দলটির আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠাতা দিয়া মোহম্মদ বলেস, মুসলমানদের জন্য একটি জোরালো কণ্ঠস্বর চান তিনি।  

তিনি বলেন, ‘বিশেষভাবে ইসলাম ও মুসলমানদের বিরোধিতা করার মতো অনেক দলই আছে (অস্ট্রেলিয়ায়) কিন্তু মুসলমানদের কোনো অফিসিয়াল প্রতিনিধি নেই। ’

অমুসলিম দেশ হওয়ার ফলে অস্ট্রেলিয়ার মুসলিমরা রোজা উপলক্ষে সরকারি কোনো সুযোগ সুবিধার পান না বটে। তবে এর মধ্যেও এ সময় এখানকার মুসলমানদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক ও সম্প্রীতি বৃদ্ধি পায়। তারা পরস্পরের বাসায় ছুটির দিনে একসাথে ইফতার করেন।  

অস্ট্রেলিয়ার মুসলিমরা ইফতারে সাধারণত স্যান্ডউইচ, পনির, মাখন, দুধ জাতীয় খাবার, নানাবিধ ফল ও ফলের রস খেয়ে থাকে। আর সেহরিতে তারা খান বার্গার বা এ জাতীয় কোনো খাবার।  

এ দেশের মুসলমানদের প্রায় ১২ ঘণ্টা রোজা রাখতে হয়।  

অস্ট্রেলিয়ান মুসলমানদের জীবনাচার ও তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়াদী সম্প্রচারের জন্য মাত্র একটি টেলিভিশন চ্যানেল রয়েছে। চ্যানেলটির নাম- ওয়ান পাথ নেটওয়ার্ক।  

সম্প্রতি দেশটির ভিক্টোরিয়া অঙ্গরাজ্যে প্রথমবারের মতো আরিফা মাসউদ নামের এক মুসলিক নারীকে বিচারক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে দেশটির রাজ্য সরকার। তিনি দেশটির ক্যানবেরার অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন।

ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৫ ঘণ্টা, মে ২৯, ২০১৭
এমএইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।