ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অপার মহিমার রমজান

হাওরবেষ্টিত প্রাচীন মসজিদটি এখনও টিকে আছে স্বমিহমায়

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫০ ঘণ্টা, জুন ১, ২০১৭
হাওরবেষ্টিত প্রাচীন মসজিদটি এখনও টিকে আছে স্বমিহমায় হাওরবেষ্টিত প্রাচীন মসজিদটি এখনও টিকে আছে স্বমিহমায়

নেত্রকোনা: হারুলিয়া গ্রামে হাওরবেষ্টিত দৃষ্টিনন্দন প্রাচীন মসজিদকে ঘিরে জনশ্রুতির শেষ নেই। কারও কাছে পরিচিত ‘গাইনের মসজিদ’, আবার কারও কাছে ‘হারুলিয়া দক্ষিণপাড়া জামে মসজিদ।’

নির্মাণশৈলী এবং নির্মাণ সামগ্রী বিচারে নিশ্চিত করা যায় ধর্মীয় এ স্থাপনাটির বয়স শতবছরের কম নয়। তবে মসজিদের দেওয়ালে লেখা রয়েছে এবং প্রচলিত মত হলো- ১২ শ’ খ্রিস্টাব্দে মসজিদটি নির্মিত হয়েছে।

আর সে হিসেবে এই মসজিদের বয়স ৮১২ বছর! যদিও এর পক্ষে জোরালো কোনো তথ্য-উপাত্ত নেই।  

নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলা শহর থেকে ৬ কিলোমিটার দূরত্বে হাওর এলাকা মোজাফরপুর ইউনিয়নের হারুলিয়া গ্রামে পুরাতন ওই মসজিদটির অবস্থান।  

প্রাচীন এ মসজিদকে ঘিরে আছে নানাজনের নানা মত। সময়ের ব্যবধান দীর্ঘ হওয়ায় সঠিক ইতিহাস না জানার কারণে মসজিদের নাম ও বয়স নিয়ে স্থানীয়রা আজও দ্বিধাবিভক্ত।

সাত শতাংশ ভূমিতে দাঁড়িয়ে থাকা মসজিদটি মতান্তরে তৎকালীন সময়ের উপমহাদেশে নির্মিত আটটি মসজিদের একটি। রাজা লক্ষণ সেনের আমল আবার কারও মতে ইখতিয়ার উদ্দিন মুহাম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজির শাসনামলে এ মসজিদ নির্মিত হয়।

প্রচলিত মতে আরও বলা হয়, বহুবছর আগে দূরদূরান্ত থেকে বর্ষাকালে নৌকা নিয়ে গাইন সম্প্রদায়ের লোকজন এ এলাকায় ব্যবসায়-বাণিজ্যের কাজে এসে অবকাশ যাপন করতেন। তখন কোথাও মসজিদ না থাকায় তারা এ মসজিদটি নির্মাণ করেন। এ জন্য মসজিদটি গাইনের মসজিদ হিসেবে পরিচিত।  

মোজাফরপুর ইউনিয়ন পরিষদের তিনবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বাংলানিউজে বলেন, ‘বহুভাবে প্রচলিত হয়েছে মসজিদটি ৮১২ বছরের পুরাতন। মসজিদ ও প্রতিষ্ঠাতার নাম নিয়েও আছে দ্বিধাবিভক্তি। তবে যুক্তি খুঁজতে গেলে ব্যক্তিগতভাবে আমি মসজিদের বয়স নিয়ে একমত নই। ’

 এ বিষয়ে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সহযোগিতা নেওয়া যেতে পারে বলে মত দেন চেয়ারম্যান।

তবে, ইতিহাস যাই হোক, এলাকাবাসীর প্রচেষ্টায় জালিয়ার বিশাল হাওরবেষ্টিত প্রাচীন এ মসজিদটি আজও তার জৌলুস হারায়নি।  

স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল লতিফ, শহিদুল ইসলাম, মোজাম্মেল হোসেন বাংলানিউজে জানান, প্রশাসনিক অথবা জনপ্রতিনিধিদের কোনো সহযোগিতা না পেলেও এলাকাবাসী মিলে মসজিদটির অল্পস্বল্প কাজ করে টিকিয়ে রেখেছেন। এলাকাবাসী ছাড়া মসজিদটির দিকে কারও কোনো সুদৃষ্টি নেই বললেই চলে।  

মসজিদের ইমাম মাওলানা মোহাম্মদ আবদুল্লাহ এই মসজিদে ইমামতির দায়িত্ব পালন করছেন ১৭ বছর যাবৎ। নামমাত্র হাদিয়া (বেতন) পান তিনি। যা দিয়ে কোনোভাবে জীবন দূরে থাক একদিনের পকেট খরচই চালানো সম্ভব নয় বলে দাবি তার! এখানে প্রতিদিন চল্লিশজন শিশু শিক্ষার্থীকে কোরআন শিক্ষা দেন তিনি। পাশাপাশি রমজানে প্রায় পঞ্চাশের অধিক মুসল্লিকে নিয়ে তারাবির নামাজ আদায় করেন।

ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫১ ঘণ্টা, জুন ০১, ২০১৭
এমএইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।