দিনভর রোজা পালনের পর সন্ধ্যায় ইফতারের সময় মানুষের মাঝে পরম ভ্রাতৃত্বের উন্মেষ ঘটে। ইসলামের শিক্ষা হলো- ইফতারে অন্য মুসলিমকে শরিক করা।
ইসলামের এই মূলনীতিকে সামনে রেখে, ইসলামের বাণী প্রচার করার লক্ষ্যে ইফতারে যদি ভিন্ন ধর্মের মানুষকে দাওয়াত করা করা হয়; তখন এটা নতুন মাত্রা পাবে- তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
সম্প্রতি ম্যানচেস্টারে আত্মঘাতী হামলায় বহু মানুষের প্রাণহানির পর যখন ব্রিটেনের মুসলমরা রয়েছেন প্রচন্ড চাপে। তখন শোনা গেল, ভিন্ন ধর্মের মানুষের কাছে ইসলামের মহান বাণী প্রচারের জন্য কার্ডিফের একটি মসজিদে অভিনব একটি উদ্যোগ নিয়েছে। তারা ইফতারে শরিক হওয়ার জন্য ভিন্ন ধর্মের লোকদের আহ্বান করছে।
মুসলমানদের এই আহবানে শরিকও হচ্ছেন বহু ভিন্ন ধর্মের মানুষ। মূলত ভিন্ন ধর্মের মানুষদের সঙ্গে যোগাযোগ বৃদ্ধি এবং মতবিনিময়ের জন্য এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা।
এই আয়োজনের অন্যতম উদ্যোক্তা হচ্ছেন ওয়েলস ইউনিভার্সিটি হসপিটালের নার্স সারাহ ইভান্স। তিনি জানান, দারুল ইসরা মসজিদে রমজানের সামনের দিনগুলোতে অমুসলিমরা আসবেন এবং বিনামূল্যের ইফতারে অংশ নেবেন।
মসজিদের আরেক সদস্য আলমগীর বলেন, আমরা ছয় বছর ধরে এ আয়োজন চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু সম্প্রতি যে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে তার প্রেক্ষিতে আমরা বলতে পারি যে, সন্ত্রাসীদের কোনো ধর্মবিশ্বাস নেই।
তিনি আরও বলেন, পবিত্র কোরআন মুসলমানদের শিক্ষা দেয়, কেউ যদি এক ব্যক্তির জীবন রক্ষা করে, তাহলে সে যেন গোটা মানবজাতিকে রক্ষা করল। আর কেউ যদি এক ব্যক্তিকে হত্যা করে, তাহলে সে যেন গোটা মানবজাতিকে হত্যা করল।
ম্যানচেস্টারে সম্প্রতি আত্মঘাতী হামলায় ২২ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটেছে। কার্ডিফের মুসলিমরা সেই ঘটনার কঠোর নিন্দা জানিয়েছেন এবং ভিকটিমদের সহায়তায় অর্থ সংগ্রহে সহযোগিতার হাত সম্প্রসারিত করেছেন।
স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের নানা উদ্যোগ সত্ত্বেও একটি গ্রুপ মুসলিমদের বিরুদ্ধে অব্যাহতভাবে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে।
এমতাবস্থায় আয়োজকরা ভাবছেন, মুসলমানদের সম্পর্কে অমুসলিমদের আরও অধিক তথ্য জানা দরকার।
এই ইফতার আয়োজনে ইতোমধ্যে ১৫০ জন অমুসলিম মসজিদে এসেছেন। এ ধরণের অনুষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে- বিভিন্ন ধর্মের অনুসারীদের মধ্যে সকল ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ সমাজ গঠন করা।
ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৪ ঘণ্টা, জুন ০৩, ২০১৭
এমএইউ/