এ জন্য রমজান মাসের নফল বা ঐচ্ছিক ইবাদতের মধ্যে কোরআনে কারিম তেলাওয়াত অন্যতম। প্রতি বছর রমজান মাসে হজরত জিবরাইল (আ.) হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে পূর্ণ কোরআন শোনাতেন এবং রাসূলুল্লাহ (সা.) হজরত জিবরাইল আলাইহিস সালামকে পূর্ণ কোরআন শোনাতেন।
আল্লাহর রাসূলের জীবনের শেষ রমজানে দু’বার পুরো কোরআন শুনিয়েছিলেন। এ কারণে প্রত্যেক মুসলিমের উচিত রমজানে কমপক্ষে একবার পুরো কোরআন তেলাওয়াত করা।
ইসলামের ইতিহাসে সকল যুগের নেককাররা রমজান মাসে রোজার পর যে আমলটির প্রতি সবচে’ বেশি গুরুত্বারোপ করতেন সেটা হলো- কোরআনে কারিম তেলাওয়াত।
হাদিস শাস্ত্রের প্রাণপুরুষ ইমাম যুহরি (রহ.) রমজান মাস এলে বলতেন, এটা হলো কোরআন তেলাওয়াত ও খাদ্যদানের মাস। প্রখ্যাত তাবেঈ সুফিয়ান সাওরি (রহ.) রমজান এলে অন্যসব নফল আমল বাদ দিয়ে কোরআন তেলাওয়াতে মশগুল হয়ে যেতেন।
তবে তাড়াহুড়ো করে কিংবা না বুঝে অধিক পরিমাণে কোরআন তেলাওয়াত করার চেয়ে শুদ্ধ ও সঠিকভাবে অর্থ ও মর্ম অনুধাবন করে অল্প তেলাওয়াত করা বেশি উত্তম।
আল্লামা ইবনুল কাইয়িম (রহ.) বলেন, হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসঊদ ও আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.)-এর মতে, ‘তারতিলের সঙ্গে ও বুঝে স্বল্প পরিমাণ কোরআন তেলাওয়াত করা, তাড়াহুড়ো করে অধিক পরিমাণ তেলাওয়াতের চেয়ে উত্তম। ’
কোরআন নাজিলের উদ্দেশ্য হলো- মানবজাতির পথনির্দেশ করা। আর না বুঝে কেবল পাঠ করলে (পাঠের সওয়াব প্রতি হরফের বিনিময়ে ১০ নেকি অর্জিত হলেও) মূল উদ্দেশ্য সাধন হবে না।
তাই কোরআন বুঝে পড়ার অভ্যাস করা উচিত। বোখারি ও মুসলিমে বর্ণিত আছে, হজরত হুযাইফা ইবনুল ইয়ামান (রা.) হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কোরআন তেলাওয়াতের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, একবার আমি তার সঙ্গে রাতে সালাত আদায় করেছি। তিনি খুবই ধীরস্থীরতার সঙ্গে কোরআন তেলাওয়াত করলেন এবং তাসবিহের আয়াত এলে তাসবিহ, কোনো নেয়ামতের আলোচনা এলে তা প্রার্থনা এবং কোনো আজাবের আয়াত এলে তা থেকে পানাহ চাইতেন।
লেখক: প্রিচার অ্যান্ড ট্রান্সলেটর, পশ্চিম দাম্মাম ইসলামি সেন্টার, সৌদি আরব
ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৭ ঘণ্টা, জুন ০৬, ২০১৭
এমএইউ/