ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

অপার মহিমার রমজান

পুরো রমজান মাস জেগে থাকে আমেরিকার ডিয়ারবর্ন শহর

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫১ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০১৭
পুরো রমজান মাস জেগে থাকে আমেরিকার ডিয়ারবর্ন শহর ডিয়ারবর্ন শহরের রাস্তায় ইফতার করছেন স্থানীয়রা

আমেরিকার মিশিগান অঙ্গরাজ্যের অন্যতম শহর ডিয়ারবর্ন। এখানে উল্লেখসংখ্যক আরব-আমেরিকান মুসলমানের বাস। ডিয়ারবর্ন শহরে মোট অধিবাসীর প্রায় এক-তৃতীয়াংশ আরব। বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশি-আমেরিকানও থাকেন এখানে।

ডিয়ারবর্ন শহরে ইসলামিক সেন্টার অব আমেরিকা অবস্থিত। ১৯৬৩ সালে মুহাম্মদ জাওয়াদ চিরি ইসলামিক সেন্টারটি প্রতিষ্ঠা করেন।

 

এখানে একটি মসজিদও রয়েছে। মসজিদটি ২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং প্রতিষ্ঠাতারা এটিকে উত্তর আমেরিকার বৃহত্তম মসজিদ হিসেবে দাবী করেন। সাইয়েদ হাসান আল কাজউইনি বর্তমানে মসজিদের ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

পবিত্র রমজান মাসে এই শহরের অধিবাসীরা নিশাচর হয়ে যান। আমেরিকার সবচেয়ে জনবসতিপূর্ণ শহরটির সর্বত্র ইসলামের পবিত্র মাসের আমেজ চোখে পড়ে।  

রাতে এসব রাস্তায় জ্যাম লেগে থাকে, ইফতারের সময় সেসব রাস্তা খালি হয়ে যায় অথবা লোকজনকে দ্রুত স্থান ত্যাগ করতে দেখা যায়- সেসব স্থানগুলো থাকে মানুষে ভরপুর। শহরের বেকারিগুলো সপ্তাহের ৭ দিন এবং ২৪ ঘণ্টাই খোলা থাকে। তবে ক্যাফেগুলোতে মূল বেচাকেনা শুরু হয় মধ্যরাতের পর। পবিত্র মাসটি উদযাপনের জন্য এই শহরের বাসিন্দারা তাদের বাড়ি-ঞর ভিন্নভাবে সাজান।  

দেশজুড়ে মুসলিমবিদ্বেষীরা শরিয়াহ আইনের বিরুদ্ধে সভা-সমাবেশ করছে। কিন্তু এই শহরে এর কোনো প্রভাব নেই। স্থানীয় মুসলমানরা বলছেন, রমজানের সময় আনন্দঘন উৎসব আয়োজন করা হয় এবং মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজনের মধ্যে সুস্বাদু খাবার পরিবেশন করা হয়। তারাও প্রতিবেশীদের বাসায় খাবার পাঠিয়ে থাকেন।  

রমজান মাসের এই পবিত্রতা স্থানীয় অমুসলিম জনগোষ্ঠীকেও আকর্ষণ করে। অনেক অমুসলিম পবিত্র মাসটির প্রতি সম্মান প্রদর্শনপূর্বক সারাদিন খাদ্য এবং পানীয় গ্রহণ থেকে বিরত থাকেন।

আরব আমেরিকান ন্যাশনাল মিউজিয়ামের ইয়াল্লা ইট ফুড ট্যুরের সমন্বয়কারী নওরন মাত্তার বলেন, মুসলমানদের পবিত্র মাস উপলক্ষে ডিয়ারবর্ন শহরের রেস্টুরেন্টগুলো তাদের খাবারের সময়সূচিতে ব্যাপক পরিবর্তন আনে।  

মাত্তার বলেন, মজার ব্যাপার হলো- রমজান উপলক্ষে রেস্টুরেন্টগুলো নীরব থাকে, তবে বেকারিগুলো এ সময়টাতে বেশ জমজমাট থাকে।

তিনি বলেন, মালিকেরা সারারাত ধরে বেকারি খোলা রাখেন। কারণ আরব সম্প্রদায় বেকারির খাদ্যকে অনেক গুরুত্ব দিয়ে থাকে।  

মাত্তার আরও বলেন, কিছু সংখ্যক রেস্টুরেন্ট দিনের বেলা খোলা রাখা হয় দুপুরের খাবার বিক্রি করার জন্য। তবে তারাও ব্যবসার মূল সময় হিসেবে সন্ধ্যাটাকে ধরে নেন। তার মতে, কিছু অমুসলিম জনসাধারণ রমজানের সময়কার সময়সূচি দেখে বিভ্রান্ত হন- তবে তাদের সব কিছুই কৌতূহলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে।  

মাত্তার জানান, আগামী ২০ জুন জাদুঘরের পক্ষ থেকে মুসলমানদের সম্মানে একটি ইফতার মাহফিল ও রাতের খাবারের আয়োজন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে জনগণকে রমজানের গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হবে।  

-মিডলইস্ট আই অবলম্বনে

ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৩ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০১৭
এমএইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।