ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অপার মহিমার রমজান

‘রাষ্ট্রীয়ভাবে হাফেজদের পৃষ্ঠপোষকতা দরকার’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩১ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০১৭
‘রাষ্ট্রীয়ভাবে হাফেজদের পৃষ্ঠপোষকতা দরকার’ রাষ্ট্রীয়ভাবে হাফেজদের পৃষ্ঠপোষকতা দরকার: হাফেজ মাওলানা আবদুল আজীজ সিরাজী

বাংলাদেশে হাফেজদের সঠিক পরিসংখ্যান কারও কাছে নেই। তবে অনুমান করা হয় দেশে হাফেজে কোরআনের সংখ্যা ২৫ লাখের মতো।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের (বেফাক) অধীনে চলতি শিক্ষাবর্ষে ১৩ হাজার ৪শ’ হাফেজ সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। এর বাইরে আরও বেশকিছু শিক্ষা বোর্ড রয়েছে, রয়েছে বোর্ডের অধিভুক্ত হয়নি এমন প্রতিষ্ঠান।

সে হিসেবে বলা যায়- প্রতিবছর দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় ২০ হাজার শিক্ষার্থী হাফেজে কোরআন হিসেবে সনদ নিচ্ছেন।

সাধারণত ৮ থেকে ১৫ বছর বয়সের মাঝে একজন শিক্ষার্থী কোরআনের হাফেজ হয়ে যাচ্ছেন। অনেকের আরও কম সময় লাগে। আবার এমনও দেখা যায় যে, একটু বেশি বয়সে এমনকি ৫০ বছর পেরিয়েছে এমন ব্যক্তিও নিজ ইচ্ছায় কোরআন মুখস্থ করছেন।  

কোরআন মুখস্থ করার মতো ফজিলতের কাজে পিছিয়ে নেই নারীরা। প্রচুর অন্ধ হাফেজ রয়েছে আমাদের দেশে। তারা শুধু শুনে শুনে কোরআন মুখস্থ করেছেন।

পবিত্র কোরআনের হাফেজদের নানা প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলেছেন, গাজীপুর মহানগরস্থ টঙ্গি পশ্চিম গোপালপুরের বাইতুল জান্নাত হাজী বাড়ি জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব হাফেজ মাওলানা আবদুল আজীজ সিরাজী। আলাপচারিতায় ছিলেন- মুফতি মুহাম্মাদ শোয়াইব

বাংলানিউজ: আমরা কীভাবে কোরআনের খেদমত করতে পারি?
মাওলানা সিরাজী: ইসলামের স্বার্থে যত খেদমত রয়েছে, তন্মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ খেদমত হচ্ছে- কোরআনে কারিমের খেদমত। নানাভাবে কোরআনের খেদমত করা যায়, সমাজে কোরআনের ধারক-বাহক আলেম ও হাফেজ সম্প্রদায়ের যথাযোগ্য মর্যাদা নিশ্চিত করার মাধ্যমে। যে কোনো মহলে, যে কোনো পরিস্থিতিতে নির্বিঘ্নে কোরআনের আলোচনার পরিবেশ তৈরি করে দেওয়ার মাধ্যমে। সর্বোপরি সমাজে কোরআনের বিধান জারির মাধ্যমে।

বাংলানিউজ: রাষ্ট্রীয়ভাবে কোরআনের খেদমত করতে চাইলে সেটা কীভাবে করা সম্ভব?
মাওলানা সিরাজী: যারা কোরআনের খাদেম ও ধারক-বাহক সমাজে তাদের মর্যাদা নিশ্চিত করার মাধ্যমে এটা সম্ভব। তাদেরকে সম্মানজনক জীবনযাপনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা, যথাযথ কর্মসংস্থান ইত্যাদির ব্যবস্থা করা।

বাংলানিউজ: রাষ্ট্রীয়ভাবে হাফেজদের কেমন মূল্যায়ন করা উচিত?
মাওলানা সিরাজী: ইসলাম হাফেজদের যতটা মর্যাদা দিয়েছে ঠিক ততটুকু মূল্যায়ন নিশ্চিত করা উচিত। আর সমাজ ও রাষ্ট্রের বৃহৎ স্বার্থেই এটা করা দরকার। এরা নিঃসন্দেহে মেধাবী। এই মেধাগুলো কাজে লাগানো দরকার। উচ্চ শিক্ষা থেকে শুরু করে চাকরির ক্ষেত্রে হাফেজদের জন্য বিশেষ কোটা বরাদ্দ রাখা দরকার।  

বাংলানিউজ: হাফেজদের জন্য কি আধুনিক শিক্ষার প্রয়োজন আছে?
মাওলানা সিরাজী: অবশ্যই আছে। হাফেজদের দেশের সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার জন্য আধুনিক শিক্ষার সমন্বয়ে ইসলামি শিক্ষা দেওয়া উচিত।

বাংলানিউজ: সাধারণ শিক্ষাক্ষেত্রে হাফেজদের পিছিয়ে থাকার একটি প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। এর কারণ কী?
মাওলানা সিরাজী: আমাদের দেশের অপরিকল্পিত শিক্ষাব্যবস্থার কারণে হাফেজে কোরআনরা পিছিয়ে পড়ছেন। এক্ষেত্রে হাফেজ ও তার অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে। এক্ষেত্রে আমার অভিমত হলো- তাদের জন্য কোটা ব্যবস্থা সংরক্ষণ করা। কোটার ব্যবস্থা থাকলে একজন হাফেজের জন্য উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করতে বেশি সময় ব্যয় করতে হবে না। আর হাফেজরা উচ্চ শিক্ষা নিয়ে কর্ম জীবনে প্রবেশ করলে বিভিন্ন সেক্টরে হাফেজে কোরআন খুঁজে পাওয়া যেত। তাদের মাধ্যমে আদর্শ সমাজ প্রতিষ্ঠা করা সহজ হতো। যে কাঙ্খিত সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য সবাই হয়রান। সেই সমাজব্যবস্থা খুব সহজেই প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হাফেজে কোরআনদের মাধ্যমে।

ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৩ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০১৭
এমএইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।