ইসলামের দুই পবিত্র নগরী মক্কা ও মদিনায় মসজিদুল হারাম ও মসজিদে নববীতে প্রতি বছরই স্থানীয় ও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লাখ লাখ আল্লাহপ্রেমিক মানুষ আসেন ইতিকাফের জন্য।
এর মধ্যে এ বছর শুধু মসজিদে নববীতে ইতিকাফ করছেন প্রায় পৌনে ২ লাখ মুসল্লি।
মসজিদে নববীর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বেশ কয়েকটি সংস্থা একযোগে কাজ করে। তাদের রয়েছে আলাদা আলাদা কাজ ও দায়িত্ব। শুধু মসজিদে নববীর গেটের নিরাপত্তা ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে ‘ইদারাতু খিদমাতুল আবওয়াব’ নামের একটি বিশেষ সংস্থা। এসব সংস্থার লোকজন ইতিকাফকারীদের সুবিধার কথা চিন্তা করে রমজানের শেষ দশকে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করে থাকেন।
‘ইদারাতু খিদমাতুল আবওয়াব’-এর প্রধান রাশেদ মাগজাবি সৌদি আরবের প্রভাবশালী দৈনিক উকাজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘ইতিকাফকারীদের সুবিধার কথা চিন্তা করে মসজিদে নববীর পশ্চিম ও পূর্ব পার্শে নতুন করে দশটি দরজা খুলে দেওয়া হয়েছে। এতে করে তাদের চলাচল আগের চেয়ে সহজ হবে বলে আশা করা যায়।
ইতিকাফকারীরা অসুস্থ হয়ে পড়লে জরুরিভিত্তিতে চিকিৎসার প্রয়োজনে এ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ জন্য ‘ইদারাতু খিদমাতুল আবওয়াব’ রেড ক্রিসেন্টের সঙ্গে চুক্তি করে রেখেছে। যাতে যেকোনো সময় এ্যাম্বুলেন্স সেবা প্রদান করা যায়।
বিগত কয়েক বছর ধরে ইতিকাফকারীদের জন্য অনলাইনে নিবন্ধনের ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। নিবন্ধন-প্রক্রিয়াটি রাখা হয়েছে মূলতঃ প্রকৃত ইতিকাফকারীদের তথ্য নিশ্চিত করণ, ইতিকাফের স্থান নির্ধারণ, নিরাপত্তা বিধান এবং এ সংক্রান্ত যাবতীয় বিধি-বিধান প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন এবং সর্বোপরি হারামাইন শরীফাইনের আদব ও সম্মান, সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার ও সর্বোচ্চ শৃঙ্খলা বিধান যেন সহজ হয়।
মসজিদে নববীতে ইতিকাফকারীদের জন্য আরও যেসব সেবা ও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে, সেগুলোর অন্যদম হলো- মসজিদে নববীর প্রতিটি গেট ও বৈদ্যুতিক সিড়ির কাছে কিছু পর্যবেক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। যাতে যাতায়াত সহজ হয় এবং চলাচলকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়।
‘ইদারাতু খিদমাতুল আবওয়াব’-এর তত্ত্বাবধানে পরিদর্শকদের বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়- যাতে তারা আল্লাহর ঘরের মেহমানদের সঙ্গে সুন্দর আচরণ করেন ও তাদের প্রতি যথাযোগ্য সম্মান প্রদর্শন করেন।
‘ইদারাতু খিদমাতুল আবওয়াব’-এর পরিকল্পনা রয়েছে মসজিদে নববীর তিন জায়গা থেকে সংস্থাটির অর্থায়নে চলন্ত যানবাহনের ব্যবস্থা করার।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় ইফতারের আয়োজনটি হয়ে থাকে সৌদি আরবের মদিনার মসজিদে নববীতে। এখানে প্রায় ১২ হাজার মিটার জায়গাজুড়ে দস্তরখানা বিছিয়ে ইফতারের ব্যবস্থা করা হয়। ইতিকাফের সময় দস্তরখানের পরিমাণ বাড়ে।
ইফতারের অায়োজন করেন সৌদি সরকার। তবে মদিনার স্থানীয় বাসিন্দারা নিজেদের বাড়ি থেকে গাছের খেজুর ও নানা ধরনের খাবার নিয়ে আসেন। সেগুলো উমরা পালনকারী সেখানে ও ইতিকাফকারীদের মাঝে বিতরণ করা হয়।
-সৌদি দৈনিক উকাজ অবলম্বনে
ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৫ ঘণ্টা, জুন ১৮, ২০১৭
এমএইউ/