ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অপার মহিমার রমজান

জমে উঠছে ইফতারের অভিজাত এলাকা বেইলি রোড

হোসাইন মোহাম্মদ সাগর, ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ৪, ২০২২
জমে উঠছে ইফতারের অভিজাত এলাকা বেইলি রোড ছবি: ডিএইচ বাদল

ঢাকা: যে রাঁধে, সে চুলও বাধে। কথাটা যেন রাজধানীর বেইলি রোডের জন্য এ সময় এসে ভীষণ প্রযোজ্য।

সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের জন্য খ্যাত রাজধানীর বেইলি রোড যেমন নাটকপাড়া হিসেবে বহুল পরিচিত, এর বাইরে এলাকাটি অন্য পরিচয় পায় রোজার সময়ে। পবিত্র রমজান মাসজুড়ে বেইলি রোড পরিণত হয় ইফতার বাজারে। এ অভিজাত ইফতার বাজারের পরিধি এখন বেইলি রোড ছাড়িয়ে এর আশপাশেও ছড়িয়ে পড়েছে।

সোমবার (৪ এপ্রিল) বিকেলে এ এলাকা ঘুরে দেখা যায়, রাজধানীর দূরদূরান্ত থেকে মানুষ ইফতারসামগ্রী কিনতে আসছেন বেইলি রোডে। ছোলা-পেঁয়াজু থেকে শুরু করে মাংস-পরোটা সবই মেলে এখানে। ইফতার কিনতে সাধারণ মানুষরা ভিড় জমিয়েছেন বাহারি সব ইফতারের দোকানগুলোতে।

বেইলি রোডের ইফতারসামগ্রীর মধ্যে আছে বিভিন্ন ধরনের চপ, কাবাব ও মাংসের নানা ধরনের খাবার। মগজ ভুনা, খাসির হালিম, খাসির গ্রিল চাপ, গরুর চাপ, লুচি, কাচ্চি বিরিয়ানি (খাসি), ফিরনি, খাসির লেগ রোস্ট, বোরহানি, চিকেন রোস্ট (আস্ত), চিকেন ফ্রাই, চিকেন সমুচা, চিকেন ললি, জালি কাবাব, শিক কাবাব, ভেজিটেবল রোল, স্প্রিং রোল, কিমার চপ, পেঁয়াজু, বেগুনি, বেসন চপ, ছোলা, বাসমতির জর্দা, চাটনি, পনির সমুচা, নিমক পোড়া, বুন্দিয়া, হালিম, দইবড়া, সুতি কাবাব, রেশমি কাবাব ও কিমা পরোটা এখানে খুবই জনপ্রিয়। ফাস্টফুড আইটেমের মধ্যে বার্গার, হটডগ, স্যান্ডউইচ, সমুচা, চিজ বল, চিকেন সাসলিক, পেস্ট্রি, চিকেন ফ্রাই, পিৎজা ও আইসক্রিম মিলছে।

বেইলি রোডের ইফতারের অন্যতম আকর্ষণ হলো পিঠা ঘরের পিঠা। নিউ বেইলি পিঠাঘর ঘুরে দেখা যায়, এখানে রয়েছে শাহী রস পাকন, শাহী মালাই, মুগসোলা পিঠা, ক্ষীর কুলি পিঠা, পান পিঠা, নারিকেলের ভাজা পুলি, রস ফুল পিঠা, পাটিশাপটা, মাল পোয়া, লবঙ্গ লতিকা, তিল পনির পিঠা উল্লেখযোগ্য। এগুলোর দাম পড়বে প্রকারভেদে ৩৫ থেকে ৫৫ টাকা প্রতি পিস। এছাড়া কাবাবের জন্যও বিখ্যাত এ রেস্টুরেন্টে রয়েছে চিকেন বটি কাবাব, হারিয়ালি কাবাব, আচারি কাবাব, রেশমি কাবাব, বিফ শিক কাবাব, টিক্কা কাবাব, চিকেন তন্তুরি কাবাব, চিকেন সাসলিক কাবাব, চিকেন বারবিকিউসহ প্রায় ৮০ রকমের কাবাব। প্রকারভেদে এগুলোর দাম পড়বে ১৯০ থেকে ৩০০ টাকার মধ্যে প্রতিপিস।

বেইলি রোডে কথা হয় ইফতার কিনতে আসা সাইফুর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে পরিবার নিয়ে ইস্কাটন ও বেইলি রোড এলাকায় আছেন। এখানকার ইফতার তার পরিবারের সদস্যদের খুবই প্রিয়। কারণ বেশির ভাগ দোকানে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশে খাবার তৈরি ও বিক্রি হয়। মানও ভালো। পদ অনেক থাকায় ইফতারে বৈচিত্র্যও থাকে।

বেইলি রোডের ক্রেতা ও দোকানি দুই পক্ষই বললেন, গত বছরের তুলনায় ইফতারের দাম এবার বেড়েছে। এ বিষয়ে চিন চিন চাইনিজ রেস্টুরেন্ট ও ইফতার বাজারের প্রোপাইটর ব্যারিস্টার খালেদ এরশাদ বলেন, দ্রব্যমূল্য বাড়ার কারণেই ইফতারের দাম এবার একটু বেশি। তেল, আটা, মাংস প্রায় সবকিছুর দামই বেড়েছে। বাধ্য হয়ে আমাদেরও দাম বাড়াতে হয়েছে।

তবে দাম বাড়লেও দুপুরের পর থেকেই বিক্রি শুরু হয়ে যায় বেইলি রোডের ইফতারের। চলে ইফতারের আগমুহূর্ত পর্যন্ত। পাশাপাশি বড় বড় ইফতার পার্টির জন্য প্যাকেট ইফতারও এসব দোকান থেকে সংগ্রহ করা হয়। অনেক তরুণরাও এখানকার ফুটপাতে বসে ইফতার করেন।

এ বিষয়ে জ্যাগেরি রেস্টুরেন্ট ও বেইলি পিঠা ঘরের সুপারভাইজার মো. রাজু বলেন, চকবাজারের পরই বেইলি রোড ইফতারের জন্য বিখ্যাত। গত দুই বছর করোনার জন্য তেমন বিক্রি হয়নি বা জমেনি। তবে আশা করছি আগের নামটা যেন এবারও ধরে রাখতে পারি। এবার তেমনই জমবে অভিজাত ইফতারের এ বাজার।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১২ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৪, ২০২২
এইচএমএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।