ঢাকা, শনিবার, ২২ ভাদ্র ১৪৩২, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

সারাদেশ

পল্লি চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসায় ঝলসে গেছে শিশুর শরীর

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০:১৯, আগস্ট ৪, ২০২৫
পল্লি চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসায় ঝলসে গেছে শিশুর শরীর কুড়িগ্রামের মানচিত্র

পল্লি চিকিৎসকের দেওয়া ভ‌ুল চিকিৎসা ও ওষুধের পার্শ্বপ্রতি‌ক্রিয়ায় সারা শরীর ঝলসে গেছে নুরজাহান (৯) নামের এক শিশুর। ঝলসানো ক্ষত বিক্ষত শরীর নিয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের বিছানায় কাতরাচ্ছে নুরজাহান।

 

রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসক মোহাম্মদ নূরুন্নবী জানান, রোগীর শারী‌রিক অবস্থা দেখে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়েছে।  

নুরজাহান জেলার নাগেশ্বরী উপজেলার কেদার ইউনিয়নের টেপারকুটি গ্রামের ইউনুস আলীর মেয়ে।  

অভিযুক্ত পল্লি চিকিৎসক আলমগীর হোসেন সবদের মোড় নামক স্থানে আল মদিনা নামে একটি ফার্মেসি খুলে বসেছেন। তার ফার্মেসির অনু‌মোদন নেই। সেখানেই চেম্বার খুলে শিশুসহ সবধরনের রোগীকে চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। তার প্রেসক্রিপশন প্যাডে ডাক্তার লেখেন তিনি। জেনারেল মেডিসিন প্রাকটিশনার বলে নিজেকে দাবি করেন। এছাড়া নিজেকে সরকারি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চিকিৎসক বলেও দাবি করেন তিনি।

নুরজাহানের বাবা ইউনুস আলী জানান, গত ২৯ জুলাই মেয়ের শরীরে জ্বর এলে তাকে নিয়ে একই উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের পল্লি চিকিৎসক আলমগীর হোসেনের সবেদের মোড় ওষুধের দোকোনে যান ইউনুছ আলী। পল্লি চিকিৎসক আলমগীর নুরজাহানকে দেখে তিন প্রকারের ওষুধ দেন। এসব ওষুধ সেবনের পর থেকে নুরজাহানের শরীরে ছোট ছোট ফোসকা পড়তে থাকে। একদিনের ব্যবধানে সারা শরীর কালো হয়ে পুড়ে যাওয়ার মতো হয়ে যায়। এর পর ওই পল্লি চিকিৎসক চিকিৎসা দিতে টালবাহানা করেন। দুই দিনের মাথায় নুরজাহানের শরীরের ত্বক উঠে যেতে থাকে এবং ক্ষতের সৃষ্টি হতে থাকে। পরে ১ আগস্ট তাকে রংপুর মে‌ডি‌কেল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

নুরজাহানের বাবা ইউনুস আলী ব‌লেন, পল্লি চিকিৎসক আলমগী‌রের দেওয়া ওষু‌ধ খাওয়ার পর মে‌য়ের শরীর ঝ‌লসে যে‌তে থাক‌লে আবার তার সঙ্গে কয়েক দফা যোগাযোগ করি। কিন্তু তিনি টালবাহানা করে এড়িয়ে যান। পরে মেয়েকে রংপুর মেডিকে‌লে ভর্তি করি। মেয়ে এমন শরীর নিয়ে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে।  

নুরজাহানের বিষয়ে আলমগীর হোসেন জানান, তিনি ভুল চিকিৎসা দেননি। তিনি জ্বরের কয়েকটি ওষুধ দিয়েছেন মাত্র। মাত্রা অতিরিক্ত প্রয়োগে ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ায় এমন হয়েছে কিনা জানেন না তিনি।  

নাগেশ্বরী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. সুজন সাহা জানান, বিযয়টি জানার পর ওই পল্লি চিকিৎসকের ফার্মেসিতে খোঁজ নিতে আমাদের লোক পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু তি‌নি ফা‌র্মেসি বন্ধ করে পালিয়েছেন। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কুড়িগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. স্বপন কুমার রায় বলেন, ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নির্ণয়ের জন্য রংপুর মে‌ডি‌কেল কলেজ ও হাসপাতালে টিম রয়েছে। তারা প্রতিবেদন দিলে পরবর্তীতে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

সারাদেশ এর সর্বশেষ