খুলনা: খুলনার পাইকগাছা পৌরসভার ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি মোশারফ হোসেন (৪৪) দলীয় প্রতিপক্ষের হাতে মারপিটের শিকার হয়ে ক্ষোভে বিষপান করে আত্মহত্যা করেছেন।
শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে নগরীর গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) পাইকগাছা পৌরসভা বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে উপজেলা বিএনপির সভাপতি ডা. আব্দুল মজিদ গ্রুপের অনুসারী হিসাবে সভাপতি প্রার্থী ছিলেন মিরাজ ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ছিলেন সেলিম রেজা লাকী। অন্যদিকে উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বহিষ্কৃত এনামুল হকের অনুসারী সভাপতি প্রার্থী ছিলেন আসলাম পারভেজ এবং সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ছিলেন কামাল আহমেদ সেলিম নেওয়াজ। মোশারফ উপজেলা শাখার সভাপতি মজিদ গ্রুপের কর্মী হিসেবে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী লাকির সমর্থনে প্রচারণায় অংশ নেন।
গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চত্বরে দাঁড়িয়ে সেলিম রেজা লাকি বলেন, মোশারফ ছিলেন পাইকগাছা বিএনপির দুঃসময়ের একজন পরীক্ষিত কর্মী। আওয়ামী আমলে অনেক অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করেও বিএনপির সঙ্গে ছিলেন। ৫ আগস্টের আগ পর্যন্ত তিনি ছিলেন ওয়ার্ড বিএনপির আহ্বায়ক। আমরা ডাক্তার সাহেবের অনুসারী হিসাবে সম্মেলনে প্রার্থী ছিলাম। কিন্তু সম্মেলনের দিন বিকেল ৩টার দিকে পৌর বিএনপির নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক কামাল আহমেদের ভাই রাজীব নেওয়াজ গালিগালাজ ও মারপিট করেন মোশারফকে। আগেও তাকে অনেকবার হুমকি ও ভয়ভীতি দেখানো হয়।
মোশারফের ঘনিষ্ঠ বন্ধু অ্যাডভোকেট সাইফুদ্দিন সুমন বলেন, মোশারফ দলকে ভালোবাসতেন। তেমনি প্রচণ্ড আবেগী ছিলেন। তাকে শারীরিকভাবে মারপিট করায় অপমানিত হন। রাতেও অনেক সময় কথা হয়। কিন্তু তিনি ছিলেন নীরব। ভোর সাড়ে ৬টার দিকে তার মেয়ে ফোন করে জানায়, তার আব্বু বিষ পান করেছে। তাকে প্রথমে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে আইসিইউ না পাওয়ায় গাজী মেডিকেলে আনা হয়েছিল। ’
তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘মোশারফ আত্মহত্যা করতে পারে না। তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। ’
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে কামাল আহমেদ সেলিম নেওয়াজের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। তিনি বলেন, ‘আমাকে ফোন দিয়েছেন কেন? নেতাদের ফোন দেন। আসলাম পারভেজকে ফোন দেন। ’
মোশারফকে আপনার ভাই মারপিট করেছিলেন কি না জানতে চাইলে তিনি উত্তেজিত হয়ে ফোনকল কেটে দেন।
এমআরএম