বাংলাদেশ স্পোর্টস প্রেস অ্যাসোসিয়েশনের(বিএসপিএ) আয়োজনে আজ প্রথমবার অনুষ্ঠিত হলো ‘কায়সার সিনহা সংগঠক সম্মাননা’। বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘর মিলনায়তনে বিএসপিএ সভাপতি সনৎ বাবলার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি নাজমুল হাসান, এমপি।
স্বাধীন জুরিবোর্ডের দৃষ্টিতে সেরা সংগঠকের পুরস্কার পেয়েছেন আবাহনী ক্রীড়া চক্রের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ও বাফুফের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং নির্বাহী সদস্য হারুনুর রশীদ। আজীবন সম্মাননা পেয়েছেন দেশের ক্রিকেটের ভীত গড়ে দেওয়ার অন্যতম কারিগর ও বিসিবির প্রয়াত সাবেক সভাপতি কামাল জিয়াউল ইসলাম (কে জেড ইসলাম)। এছাড়া তৃণমুলের সেরা সংগঠকের পুরস্কার পেয়েছেন বাংলাদেশের প্রথম নারী ফুটবল রেফারি ও বিভিন্ন খেলার সংগঠক নাসরিন আক্তার (বেবি)। সম্মাননা ক্রেস্টের পাশাপাশি প্রত্যেককে এক লক্ষ টাকা অর্থ পুরস্কার দেয়া হয়।
বিসিবির সাবেক প্রয়াত পরিচালক আফজালুর রহমান (কায়সার) সিনহা স্মরণে এই অনুষ্ঠানে ‘বর্ণিল স্মৃতি অমলিন কীর্তি’ নামে স্মারক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন হয়েছে একই মঞ্চে। এই গ্রন্থে কায়সার সিনহাকে নিয়ে লিখেছেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল, বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান, বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনসহ তাঁর ঘনিষ্ঠজনরা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে নাজমুল হাসান বলেন, ‘আমি ঢাকার বাইরে ছিলাম। নানা কাজে অনেক ব্যস্ত থাকলেও কায়সার ভাইয়ের অনুষ্ঠানে না এসে পারলাম না। আমি একবার বিদেশে গিয়েছিলাম। তখন আমার অনুপস্থিতিতে কে সিদ্ধান্ত নেবে, এ নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছিল। আমি সবাইকে বলে দিয়েছিলাম, কায়সার ভাই যা বলবেন সেটাই আমার সিদ্ধান্ত। এতটাই তিনি আস্থাভাজন ছিলেন। এমন একটা আয়োজনের জন্য কায়সার ভাইয়ের পরিবার ও বিএসপিএকে ধন্যবাদ। ’
কায়সার সিনহার বড় ভাই মিজানুর রহমান সিনহা তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় পাক বাহিনীর কাছে আটক হয়েছিল কায়সার। আমার বাবা নির্দেশ দেন তাকে ছাড়িয়ে আনার। কিন্তু কাজটা সহজ ছিল না। আমি যশোর ক্যান্টনমেন্টে যাই। পাক বাহিনী তাকে না ছাড়লেও প্রতিশ্রুতি দেয় হত্যা না করার। শেষ পর্যন্ত তাকে আমরা জীবিত ফিরে পাই কলকাতা থেকে। পরবর্তীতে সে নানা ক্ষেত্রে অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। ’
আফজালুর রহমান সিনহার ছেলে বিসিবির পরিচালক ফাহিম সিনহা বলেন, ‘আমার বাবা ছিলেন আমার শিক্ষক। তিনি ছিলেন ক্রীড়াঙ্গনের নিবেদিত একজন মানুষ। তার কোনও শত্রু ছিল না। আমরাও তার মতো করে ক্রীড়াঙ্গনে থাকতে চাই। আমার বাবার স্মরণে এরকম আয়োজনের জন্য বিএসপিএ’র প্রতি কৃতজ্ঞতা। ’
বিএসপিএ সভাপতি সনৎ বাবলা এই অনুষ্ঠান ও বইয়ের মোড়ক উন্মোচন কতটা চ্যালেঞ্জের ছিল সেটা জানান নিজের বক্তব্যে, ‘আমরা ফাহিম সিনহার কাছে সংগঠক সম্মাননার পাশাপাশি কথার কথা হিসাবে বই প্রকাশের প্রস্তাব দেই। ফাহিম সিনহা রাজি হয়ে গেলে বিপদে পড়ে যাই আমরা! এই টেলিভিশন, অনলাইন আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মুখ দেখানোর যুগে তিনি বাবার স্মৃতিতে বই প্রকাশে আগ্রহী হবেন, ধারণাই ছিল না। তবে আন্তরিক চেষ্টায় কায়সার সিনহার কাছের মানুষদের কাছ থেকে তাকে নিয়ে লেখা সংগ্রহ করেছি। নিজেদের সর্বোচ্চটা দিয়ে করা এই বই হয়ত আরও ভালো হতে পারত। তবে যেটুকু হয়েছে সেটা কাউকে হতাশ করবে না বলে বিশ্বাস করি। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২৩
এএইচএস