গত কিছুদিন দেশের ফুটবলে আলোচিত ঘটনা নারী ফুটবলে কোচ-ফুটবলার দ্বন্দ্ব। পিটার বাটলারকে কোচ হিসেবে চান না ১৮ নারী ফুটবলার।
আজ বাফুফে ভবনে তদন্ত কমিটি তাদের রিপোর্ট জমা করেছে। বাফুফে সভাপতির দফতরে সেই প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। রিপোর্ট জমা দেওয়ার পর বাফুফের সিনিয়র সহসভাপতি এবং তদন্ত কমিটির চেয়ারম্যান ইমরুল হাসান বলেন, ‘আপনা জানেন নারী ফুটবলে এক অচল অবস্থা তৈরি হয়েছে। সেই অচলাবস্থা নিরসনে আমাদের সাত সদস্য বিশিষ্ট এক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমরা গত শনিবার থেকে কাজ করেছি। প্রায় প্রতিদিনই আমরা অনেক রাত পর্যন্ত কাজ করেছি। প্রতিটি পক্ষের সঙ্গেই আমরা কথা বলেছি। তাদের বক্তব্য শুনছি। এই বক্তব্যের আলোকে আমরা কিছু সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি। এবং কিছু সুপারিশের কারণ খুজে পেয়েছি। সেই কারনগুলো প্রতিকারের জন্য কি করনীয়। এবং এর পেছনের কারনগুলো উল্লেখ করে আমরা আমাদের প্রতিবেদন সভাপতি দফতরে জমা দিয়েছি। ’
তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়ার আগেই জানা জায় নারী ফুটবল দল একুশে পদক পেতে যাচ্ছে। তদন্ত রিপোর্টে এর প্রভাব পরবে কিনা? নারী ফুটবল দলের প্রতি ফুটবল ফেডারেশনের বার্তা কি? এমন প্রশ্নের জবাবে ইমরুল হাসান বলেন, ‘নারী ফুটবল দল একুশে পদক পাচ্ছে এটা বাংলাদেশের ফুটবল... শুধু ফুটবল না আমি মনে করি বাংলাদেশের যে কোনও স্পোর্টসের জন্যই এটা একটা দারুণ সংবাদ। এজন্য বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন এবং নারী ফুটবলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আমি আন্তরিক ভাবে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। এর মাধ্যমে বাংলাদেশে ফুটবলের প্রতি বাংলাদেশের আপামর জনসাধরনের আগ্রহ বাড়বে। ফুটবল নিয়ে ভালো এবং ইতিবাচক আলোচনা হবে। ’
‘এরপাশাপাশি আমি এটা জানাতে চাই, তদন্ত কমিটিতে আমরা সাতজন যারা ছিলাম এবং বিশেষ করে এখানে সরকারি কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী ছিলেন তাদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। তারা তাদের নির্ধারিত কার্য সিমার বাইরে এসে আমাদের সময় দিয়েছেন। নারী ফুটবল দল আমাদের অনেক সাফল্য এনে দিয়েছে। সেটা অস্কীকার করার কোনও উপায় নেই। আমরা নারী ফুটবল দলের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। সবচাইতে বড় জিনিস যেটা হচ্ছে রিপোর্টে তাদের সাফল্য কিংবা ব্যার্থতা মূল প্রভাবক হিসেবে কাজ করবে না। ’ যোগ করেন তিনি।
নারী ফুটবলের এই পরিস্থিতি হুট করেই তৈরি হয়নি। গত সাফেই পিটার বাটলারের সঙ্গে নারী ফুটবলারদের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসে। সেখান থেকেই শুরু। আবারও পিটার বাটলারকেই নারী দলের কোচ করার কিছুটা দায় বর্তায় বাফুফে এবং নারী উইংয়ের উপরও। তদন্তে নারী উইং নিয়েও পরামর্শ রয়েছে বলে জানিয়েছেন ইমরুল হাসান। তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রতিবেদনে কিন্তু নারী উইংয়ের করণীয় কী ছিল এবং কী করণীয় থাকা উচিত ছিল, সে সম্পর্কে আলোকপাত করেছি৷’
বাফুফে সূত্রমতে জানা যায় নারীদের শৃঙ্খলা ভঙ্গের পাশাপাশি নারী দলের কোচ পিটার বাটলারের শৃঙ্খলা ভঙ্গের বিষয়েও উল্লেখ রয়েছে। সেক্ষেত্রে করনীয় বিষয় নিয়েও প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে বলে জানা গেছে।
আজ তদন্ত কমিটি তাদের রিপোর্ট জমা দিয়েছে। এই নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল। সেটা তিনি একাই সিদ্ধান্ত নিবেন নাকি নির্বাহি কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন তা এখনোও নিশ্চিত নয়। বেশ কিছুদিন দেশের বাইরে ছিলেন বাফুফে সভাপতি। গতকাল তিনি দেশে আসলেও এখনো বাফুফে ভবনে আসেননি। নারী ফুটবলের এই উদ্ভুত পরিস্থিতিতে তার বাফুফে ভবনে না আসা আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। এই বিষয়ে ইমরুল হাসান বলেন, ‘সভাপতির হাতেই যে প্রতিবেদন দিতে হবে এমন কোন বাধ্যবাধকতা নেই। আমরা সভাপতির দফতরে প্রতিবেদন জমা দিয়েছি। উনি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, ওনার অনেক ধরণের কর্মসূচি থাকতেই পারে। ’
‘আমরা যেহেতু সভাপতির কাছে প্রতিবেদন দিয়েছি। উনি মনে করলে নির্বাহী কমিটির কাছে সেটা উত্থাপন করবেন। আবার এমন হতে পারে খেলোয়াড়দের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেবেন। উনি কি করবেন সেটা ওনাকে জিজ্ঞাসা করলেই ভালো হয়। ’ যোগ করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ২২২২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৬, ২০২৫
এআর