সাভার থেকে ইয়াসির উবাইদ: বাংলাদেশ ফুটবল দলে লোডভিক ডি ক্রুইফ ১৬তম বিদেশী কোচ। তবে তার মতো সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্ত বিদেশী কোচ খুঁজলে একটাও পাওয়া যাবে কিনা বলা দুষ্কর।
এরপরও দলের দ্বায়িত্ব থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়নি। কিন্তু শেষ সময়ে টনক নড়ে বাফুফে কর্তৃপক্ষের। শেষ হয় জাতীয় দলের সাথে ক্রুইফের পথচলা। কিন্তু ২০১৫ সালের শুরুতেই বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপকে সামনে রেখে আবারো নিয়োগ দেয়া হল সেই ক্রুইফকে!
শনিবার সকালে তিনি ঢাকা পৌঁছান। বিকেলে সাভার বিকেএসপিতে জাতীয় দলের অনুশীলনে ব্যস্ত সময় পার করেন। পড়ন্ত বিকেলে খানিক সময়ের জন্য তিনি মুখোমুখি হলেন গণমাধ্যমের, জানালেন বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ নিয়ে তার ভাবনা, লক্ষ্য ও দলটির বর্তমান অবস্থা।
মাত্র চার দিন বাকি আছে বঙ্গবন্ধু গোল্ড কাপের। কিন্তু ক্রুইফ বলছেন অন্য কথা, 'গত চার সপ্তাহ ধরে টিটু (সহকারী কোচ) দলটির দ্বায়িত্বে রয়েছে। তারা নিয়মিত অনুশীলন করে যাচ্ছে। দলে বেশ যোগ্য খেলোয়াড় আছে। তারা পুরোপুরি ফিট। '
সময় কম এটিকে কি সমস্যা হিসেবে দেখছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, না, আমি অনেক দূরে থাকলেও দলের সাথে যোগাযোগ ছিল। ছেলেরা নেপাল, শ্রীলঙ্কা, জাপানের বিপক্ষে খেলেছে। তাদের যোগ্যতার পরিচয় দিয়েছে। তাই আমরা প্রতিটি ম্যাচ থেকেই আমাদের প্রাপ্য ৩ পয়েন্ট বুঝে নিতে চাই। '
বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপকে সামনে রেখে বাংলাদেশ দলটির লক্ষ্য কি? 'অবশ্যই প্রতিটি ম্যাচে ভালো করা। প্রতি ম্যাচে ভালো ফলাফল করেই আমরা সেমিফাইনাল ও ফাইনালে খেলতে চাই। তবে খেলাটি যেহেতু ফুটবল, এখানে ম্যাচে ঘটমান প্রতিটি ঘটনা একটি নতুন মোড় নিতে পারে। এমনকি রেফারির একটি হলুদ কিংবা লাল কার্ডও ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে। তাই এ সকল বিষয় সামনে রেখেই একজন কোচকে এগিয়ে যেতে হয়। তবে আমি আশাবাদী, দলে আছে দেশসেরা খেলায়াড়গণ। এখান থেকে ভালো কিছু আশা করতেই পারি। '
প্রথমবার বাংলাদেশ পা রেখেই আপনি বলেছিলেন 'আমি কোন জাদুকর নই, আমার সময় প্রয়োজন। ' এখন এতো কম সময়ের মধ্যে আপনি কিভাবে সকল কিছু সম্ভব বলে ভাবছেন? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'আমি প্রথমবার কাজ করছি না, এ দলটির সাথে আগেও কাজ করে গিয়েছি। দলটি সম্পর্কে আমার পূর্ণ ধারণা আছে। তাই দলটির কাছ থেকে আমি ভালো কিছু আশা করছি। জানি আমি দলটির কাছ থেকে অনেক দূরে (হল্যান্ড) ছিলাম, এর মানে এই নয় আমি দলটি থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলাম। ইন্টারনেটের সুবাদে আমি দলটির ছায়া সঙ্গী ছিলাম। '
কোচের দৃষ্টিতে দুই প্রতিপক্ষের মধ্যে এগিয়ে আছে মালয়েশিয়া। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, 'মালয়েশিয়া দলটির বেশ কিছু ভিডিও দেখেছি। ফিফা র্যাংঙ্কিয়ে বাংলাদেশের থেকে বেশ এগিয়ে তারা। তবে তারা তাদের অনূর্ধ্ব-২৩ দল পাঠাচ্ছে। আর শ্রীলঙ্কা দলটির সাথে বেশ কিছুদিন আগেও আমরা মুখোমুখি হয়েছি। দলটি তেমন শক্তিশালী নয়। তাই মূল লড়াইটা মালয়েশিয়ার সাথেই হবে আমাদের। কিন্তু খেলাটা যেহেতু ফুটবল তাই যে কোন কিছুই হওয়া সম্ভব। '
উল্লেখ্য, বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের আগে জাতীয় দলটি নিজেদের প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচে আবাহনীর কাছে ২-০ গোলে পরাজিত হয়। রোববার ২৫ জানুয়ারি জাতীয় দল নিজেদের দ্বিতীয় প্রস্তুতি মূলক ম্যাচে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ জয়ী শেখ জামাল ক্লাবের মুখোমুখি হবে বিকেল ৩.৩০ মিনিটে। ম্যাচে গণমাধ্যমের প্রবেশ সংরক্ষিত থাকবে বলে জানিয়েছেন ম্যানেজার আমিরুল ইসলাম বাবু।
এখন দেখার বিষয় সাফ ফুটবলের ব্যর্থ কোচ ক্রুইফ এবার দেশের মাটিতে আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ দলকে শিরোপার স্বাদ দিতে পারেন কিনা?
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৫ ঘণ্টা, ২৪ জানুয়ারি ২০১৫