ঢাকা: কোপা দেল রে’র সেমিফাইনালের প্রথম লেগে স্বাগতিক হিসেবে ক্যাম্প ন্যুতে মাঠে নেমেছিল স্প্যানিশ জায়ান্ট বার্সেলোনা। আর বার্সার মাঠে আতিথ্য নিয়েছিল ভিয়ারিয়াল।
ম্যাচের শুরুর একাদশে বার্সা কোচ লুইস এনরিক মাঠে নামান টার স্টেগেন, দানি আলভেজ, জেরার্ড পিকে, জেরেমি ম্যাথিউ, জরদি আলবা, জাভিয়ের মাসচেরানো, রাফিনহা, আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা, লিওনেল মেসি, নেইমার আর লুইস সুয়ারেজকে। এনরিক তার শিষ্যদের ৪-৩-৩ ফরমেশনে খেলাতে থাকেন ম্যাচের শুরু থেকে।
কোয়ার্টার ফাইনালে স্প্যানিশ ফেভারিট অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদকে দুই লেগে হারিয়ে মেসিফাইনালে উঠে বার্সা। মেসি, নেইমার, সুয়ারেজ, ইনিয়েস্তারা ৪-২ এগ্রিগেডে জয় নিয়ে অ্যাতলেতিকোকে এ আসর থেকে বিদায় করে সেমিফাইনালের টিকিট করে নেয়। প্রথম লেগে ঘরের মাঠে অ্যাতলেতিকোকে ১-০ গোলে হারিয়ে দ্বিতীয় লেগে অ্যাতলেতিকোর মাঠে ৩-২ গোলের জয় পায় কাতালানরা। অপরদিকে হোম আর অ্যাওয়ে দুই লেগে ১-০ গোলের ব্যবধানে গেটাফেকে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠে ভিয়ারিয়াল।
ম্যাচের প্রথম ২০ মিনিট গোলের দেখা না পেলেও ভিয়ারিয়ালের ডিফেন্সকে ব্যস্ত রাখে বার্সা। ২৮তম মিনিটে ভিয়ারিয়ালের জালে বার্সা বল জড়িয়ে দিলেও তা অফসাইটের কারণে বাতিল হয়ে যায়।
খেলার ৪১ মিনিটের মাথায় স্বাগতিকরা প্রথম গোলের দেখা পায়। প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডারের পা থেকে বল কেড়ে নিয়ে উরুগুয়ের তারকা স্ট্রাইকার সুয়ারেজ বল বাড়িয়ে দেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক মেসিকে। বাঁপায়ের জোড়ালো শটে গোল করেন চারবার ব্যালন ডি অর জয়ী মেসি। ফলে, ১-০ গোলে এগিয়ে যায় বার্সা।
লিড নেওয়ার দুই মিনিট পরপর তিনবার গোলের সুযোগ নষ্ট করেন সুয়ারেজ। ম্যাচের ৪৩ মিনিটে নেইমার থেকে বল পান মেসি। আর্জেন্টাইন তারকা আলতো টোকায় বল বাড়িয়ে দেন সুয়ারেজকে। কিন্তু তার নেওয়া শটটি গোলবারের বেশ খানিকটা বাইরে দিয়ে মেরে দেন সুয়ারেজ। দুই মিনিট পর ইনিয়েস্তার কাছ থেকে বল পেয়েও ঠিকমতো শট নিতে না পারলে গোল হাতছাড়া করেন লিভারপুলের সাবেক তারকা। পরের মিনিটে আবারো একটি সুযোগ নষ্ট হয় তার।
প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ে ভিয়ারিয়াল একটি আক্রমণ চালায় বার্সার শিবিরে। চেরিশেভের বাঁদিক থেকে বাড়ানো বলে ভিয়েত্তো যে শটটি নেন, তা অসাধারণ দক্ষতায় প্রতিহত করেন স্বাগতিক বার্সার গোলরক্ষক টার স্টেগেন। দ্বিতীয়ার্ধের আগে আর কোনো গোল না হলে ১-০ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় বার্সেলোনা।
বিরতি থেকে ফিরে ম্যাচে ফেরে ভিয়ারিয়াল। খেলার ৪৮তম মিনিটে সুয়ারেজ ঠিক মতো বল ক্লিয়ার করতে না পেলে বল পেয়ে গোলবারে জোড়ালো শট নেন ত্রিগুয়েরোজ। তার শটটি বার্সার গোলরক্ষক টার স্টেগেনের হাতে লাগলেও গতির কাছে পরাস্ত হন তিনি। আচমকা নেওয়া এ দ্রুতগতির শটে সমতায় ফেরে অতিথিরা।
তবে, পরের মিনিটেই আবারো লিড নেয় কাতালানরা। বার্সা দলপতি ইনিয়েস্তার গোলে এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা। সুয়ারেজের সাথে ইনিয়েস্তা ওয়ান টু ওয়ান খেলে প্রতিপক্ষের ডি-বক্সে ভেতরে ঢুকতে চাইলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পড়ে যান সুয়ারেজ। তবে, ভিয়ারিয়ালের ডিফেন্সে বাধা পেয়ে ইনিয়েস্তা বল পেলে তা জড়িয়ে দেন জালে। ফলে, ২-১ গোলের লিড নেয় বার্সা।
ম্যাচের ৬৪ মিনিটের মাথায় মেসির নেওয়া কর্নার কিক থেকে পাওয়া বলে হেড করে গোল করে দলকে আরও এগিয়ে নেন পিকে। এ গোলের পর বার্সা নিজেদের মাঠে ৩-১ গোলে এগিয়ে যায়।
ম্যাচের ৭০ মিনিটে পেনাল্টি লাভ করে স্বাগতিকরা। নিজেদের ডি বক্সে ভিয়ারিয়ালের মুসাচিহিওর হাতে বল লাগলে রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাজান। তবে, নেইমারের নেওয়া পেনাল্টি শটটি অসাধারণ দক্ষতায় রুখে দেন ভিয়ারিয়াল গোলরক্ষক সার্জিও আসেনজো। কয়েক সেকেন্ড পর রেকিটিকের নেওয়া জোড়ালো শটটিও প্রতিহত করেন আসেনজো।
৭৯ মিনিটের মাথায় ব্যবধান কমানোর সুযোগ পেয়েছিল ভিয়ারিয়াল। কর্নার কিক থেকে গোল করতে ব্যর্থ হন মেক্সিকান তারকা জিয়োভানি। দুই মিনিট পরে ম্যাথিউয়ের বুদ্ধিদীপ্ত বাধায় গোলবারে শট নিলেও প্রতিহত হয় মই গোমেজের একটি শট।
দ্বিতীয়ার্ধের অতিরিক্ত সময়ে প্রায় মাঝমাঠ থেকে তুলে মারা বলে আবারো গোলের সুযোগ নষ্ট করেন সুয়ারেজ। ভিয়ারিয়ালের গোলরক্ষক আসেনজো গোলবার থেকে বেশ খানিকটা সামনে থাকায় সুয়ারেজ মাঝমাঠ থেকে শটটি করেন। তবে, এখান থেকে কোনো গোল আদায় করতে পারেননি উরুগুয়ের তারকা।
ম্যাচের বাকি সময়ে আর কোনো গোল না হলে ৩-১ ব্যবধান নিয়ে প্রথম লেগে এগিয়ে রইল বার্সেলোনা।
বাংলাদেশ সময়: ০৩০০ ঘণ্টা, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫