ঢাকা: গত আসরে ইনজুরির কারণে নিজের সেরাটা দিতে না পারলেও এবার অনেকটাই আত্মবিশ্বাসী আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন দেশসেরা গলফার মোহাম্মদ সিদ্দিকুর রহমান।
মঙ্গলবার (০৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কুর্মিটোলা গলফ কোর্সে প্রি টুর্নামেন্ট বিফ্রিংয়ে এমন আশার কথা গত টুর্নামেন্টে সম্মিলিতভাবে ৩৮ নম্বরে থাকা সিদ্দিকুর।
বিফ্রিংয়ে স্বাগতিক বাংলাদেশ ছাড়াও কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের গলফার তাদের লক্ষের কথা বলেন।
বিশ্বের ৩৫ দেশের প্রায় ১৩৮জন গলফারের অংশগ্রহণে বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) থেকে শুরু হবে দেশের একমাত্র আন্তর্জাতিক গলফ টুর্নামেন্ট ‘বসুন্ধরা বাংলাদেশ ওপেন গলফ ২০১৬’ এর দ্বিতীয় আসর।
কুর্মিটোলা গলফ কোর্সে উদ্বোধনী দিনের প্রথম টি-অফ বাংলাদেশ সময় সকাল ৬টা ৫০মিনিটে।
সিদ্দিকুর বলেন, ‘এখন আমি চ্যাম্পিয়ন হতেই খেলি। গেল আসরে প্রত্যাশিত ফলাফল হয়নি, তাই এবারের আসরে আমি চ্যাম্পিয়ন হতেই খেলবো। ’
গত দু’বছর ইনজুরি নিয়ে কাটিয়েছেন বাংলাদেশের এই স্বনামধন্য গলফার। সেই ইনজুরি নিয়েই প্রথম আসরে অংশ নিয়েছেলেন। তবে, এবার ইনজুরি কাটিয়ে পুরোপুরি সেরে উঠেছেন বলে জানালেন সিদ্দিকুর।
গতবার (২০১৫ সালে) বসুন্ধরা গলফ অনুষ্ঠিত হয়েছিলো মে মাসে। খেলার মাঝে বৃষ্টি হানা দেয়ায় গলফাররা স্বাচ্ছ্যন্দে খেলতে পারেননি, তাই ফলাফল আশানুরূপ হয়নি। এবারের আসরটি ফেব্রুয়ারি মাসে শুরু হওয়ায় সেই ‘ঘাতক’ বৃষ্টির সম্ভাবনা একেবারেই নেই। ফলে চ্যাম্পিয়ন হতে এবছর নিজের সেরা খেলাটি খেলতে পারবেন বলেও দেশবাসীকে আশ্বস্ত করলেন এই বিশ্বনন্দিত গলফার।
তিনি বলেন, ‘এবছরের আসরটি ভাল আবহাওয়ায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বৃষ্টির ভয় নেই। ফলে গলফ কোর্সের কন্ডিশন গেল বারের তুলনায় অনেক ভাল। আশা করছি এবারের খেলা নিজের আয়ত্বে চলে আসবে। ’
শুধু সিদ্দিকুরই নন, গেল বারের ধারাবাহিকতায় বসুন্ধরা গলফ’র এই আসরে স্বাগতিক হয়ে খেলবেন সুজিত, মাজেদ ও দুলালের মতো আরও গলফাররা।
তারা এবারের আসরে কেমন পারফরমেন্স করতে পারবেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে সিদ্দিকুর জানালেন, ‘এবারের আসরে বাংলাদেশর সব গলফারই ভাল করবেন বলে আমি আশা করছি। ’
বিশ্বের ৩৫ দেশের গলফাররা যখন শ্রেষ্ঠত্বের মঞ্চে নিজেদের প্রমাণ করবেন, তখন স্বাগতিক হয়ে কেমন করবেন সিদ্দিকুর। সঙ্গত কারণেই সংবাদ সম্মেলনে তাকে প্রশ্ন করা হলো স্বাগতিক হয়ে সুবিধাজনক অবস্থানে থাকবেন কী না? উত্তরে নির্দিধায় বললেন, ‘অবশ্যই, যেহেতু আমার মাটিতে খেলা তাই স্বাগতিক হিসেবে হোম কন্ডিশনের সুবিধা নিয়ে আমি সফরকারী অন্যান্য গলফারদের তুলনায় এগিয়ে থাকবো। শুধু আমিই না, আমাদের সব গলফারই অন্যান্যদের চাইতে সুবিধাজনক অবস্থানে থাকবো। ’
শুধু গলফেই নয়, যে কোনো খেলায়ই স্বাগতিকরা একটু বেশিই চাপে থাকেন, একদিকে যেমন থাকে দেশকে চ্যাম্পিয়নের মুকুট জয়ের চাপ, অন্যদিকে থাকে ভক্তদের।
গত বারের মতো বসুন্ধরা গলফে এবারের আসরেও সিদ্দিকুরকে সেই চাপ নিতে হবে। তবে সিদ্দিকুর শোনালেন অন্য কথা। এবার তিনি এই রকম কোনো চাপে থাকবেন না বরং থাকবেন নিজের ভেতরকার চাপে, যা তাকে চ্যাম্পিয়নের মুকুট জিততে ক্রমাগত দিয়ে যাচ্ছে তার আত্মা।
বসুন্ধরা গলফের গেল আসরে পারের চাইতে ১৪ শট কম খেলে শিরোপা জিতেছিলেন সিঙ্গাপুরের গলফার মারদান মামাত। তার বাবার শারিরীক অসুস্থতার জন্য তিনি এই আসরে অংশ নিচ্ছেননা।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, বসুন্ধরা গ্রুপের উপদেষ্টা (জনসংযোগ) এবং মানবসম্পদ ও প্রশাসন বিভাগের প্রধান লে. কর্নেল (অব.) খন্দকার আবদুল ওয়াহেদ।
বসুন্ধরা গলফের এবারের আসরে বাংলাদেশ থেকে অংশ নিচ্ছেন ৩১ জন গলফার। এর মধ্যে ২৫জন প্রফেশনাল ও পাঁচজন অ্যামেচার। টুর্নামেন্টের এবারের মোট প্রাইজমানি ৩ লাখ মার্কিন ডলার। এছাড়া আয়োজনের জন্য খরচ হবে আরও ২ লাখ ডলারের মতো। পুরো অর্থ দিচ্ছে টুর্নামেন্টের পৃষ্ঠপোষক বসুন্ধরা গ্রুপ।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০১৬
এইচএল/এসএইচ