পটুয়াখালী: অস্বাভাবিক তাপমাত্রা এবং অসহ্য গরমে পর্যটকশূন্য হয়ে পড়েছে কুয়াকাটা। কোথাও নেই পর্যটকদের কোলাহল।
স্থানীয় ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তারা বলেছেন, অস্বাভাবিক তাপপ্রবাহের কারণে এবার পর্যটক কমেছে। প্রতিদিন এখানে অনেক দর্শনার্থীদের আগমন হতো। সকাল, দুপুর, বিকাল কিংবা গভীর রাত পর্যন্ত পর্যটকদের পদচারণায় সাগরপাড় মুখরিত থাকতো। সাগরের ঢেউ গর্জন করে তীরে আঁছড়ে পড়ছে। দেখলে মনে হয় যেন এসব মনোরম দৃশ্য দেখার কেউ নেই। কিছু পর্যটক থাকলেও তারা দিনের বেলা হোটেল থেকে বের হচ্ছে না প্রচণ্ড গরমের কারণে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, তীব্র তাপদাহে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে কুয়াকাটা উপকূলের মানুষ। সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবী মানুষ। বৈদ্যুতিক পাখার বাতাসেও মিলছে না স্বস্তি।
তীব্র তাপদাহে দিশেহারা দেশের বিস্তীর্ণ এলাকার চাষিরা। গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে গরমে ঝলসে যাচ্ছে ফসল। গভীর নলকূপ ও পাম্প থেকে সেচ দিয়েও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা যাচ্ছে না। জমিতে পানি দিলেও নিমেষে তা মাটির গভীরে চলে যাচ্ছে। তীব্র রোদে ঝরে যাচ্ছে গাছের আম, লিচু, লেবু ও কাঁঠাল। দেখা দিচ্ছে পানি বাহিত বিভিন্ন রোগ।
হোটেল গ্র্যান্ড সাফা ইন ম্যানেজার মো. সাইদুর রহমান জানান, প্রচণ্ড গরমের কারণে কুয়াকাটা পর্যটক নেই। বর্তমানে হোটেলের বিদ্যুৎ বিল ও কর্মচারীদের বেতন পরিশোধ করা দুষ্কর হয়ে পড়েছে।
জেলে মো. হারুন বলেন, ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে সাগরে মাছ শিকার করি। কিন্তু প্রতিবছর এত তাপ থাকে না। চৈত্র-বৈশাখ মাসে দক্ষিণ কিংবা পূর্বে বাতাস হওয়ার কথা। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে কুয়াকাটায় বসবাস কঠিন হয়ে পড়ছে।
কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোতালেব শরীফ বলেন, গরমে পর্যটক এসে অতিষ্ঠ হয়ে পড়ছেন। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে কিছু ট্যুরিস্ট আসছিল এরপর থেকে প্রচণ্ড গরমের কারণে বর্তমানে হোটেল-মোটেলের সিট ফাঁকা রয়েছে। সাগরের পাড়ে এসে মানুষ উত্তাপে টিকতে পারছে না। লবণাক্ত পানিতে শরীর শুষ্ক হয়ে যাচ্ছে। বেড়ি বাঁধে গাছপালা যা ছিল, কাজ করতে গিয়ে কেটে ফেলেছে।
খেপুপাড়া রাডার স্টেশনের সিনিয়র আবহাওয়া পর্যবেক্ষক মো. জিল্লুর রহমান জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬ দশমিক ০ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। আগামী এক সপ্তাহ এ অবস্থা অপরিবর্তিত থাকতে পারে। তাই তাপমাত্রা না কমা পর্যন্ত সবাইকে সাবধানে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তারা। বরিশালের আশপাশে বৃষ্টি হলেও কুয়াকাটায় বৃষ্টি নেই।
আগামী এক সপ্তাহে বৃষ্টি না হলে অন্য সিমটম দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে নিম্নচাপ কিংবা ঘূর্ণিঝড় হতে পারে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২, ২০২৪
এসএম