কক্সবাজার থেকে: দোহাজারী স্টেশন। দেশের সর্ব দক্ষিণের রেলওয়ে স্টেশন এটি।
অবিভক্ত আসাম রেলওয়ে ১৯২৯-৩১ সালে পূর্বাঞ্চলীয় রেল কর্তৃপক্ষ চট্টগ্রাম শহর থেকে দোহাজারী পর্যন্ত দীর্ঘ ৪৭ কিলোমিটারের এ রেলপথ নির্মাণ করে। এরপর কেটে গেছে সুদীর্ঘ ৮৫ বছর। কিন্তু দক্ষিণে আর বাড়েনি রেলপথের দৈর্ঘ্য। ট্রেন এসে থেমে যায় এই স্টেশনে।
![](http://www.banglanews24.com/media/imgAll/2016March/bg/Ctg-DUHAZARI--RAL-STATION-120160405183721.jpg)
মঙ্গলবার (০৫ এপ্রিল) সকাল সাড়ে সাতটায় দোহাজারী স্টেশনে সরিজমিনে দেখা যায়, দোহাজারী সবজিবাজারের বুক চিরে দক্ষিণে কিছুদূর গিয়ে থেমেছে রেলপথ। ওই স্টেশনে চারটি রেলবিটের মধ্যে তিনটি সচল রয়েছে। তবে তেলবাহী ও পাথরবাহী দুটি ওয়াগন দেখা গেলেও যাত্রীবাহী ট্রেন ছিল না।
![](http://www.banglanews24.com/media/imgAll/2016March/bg/Ctg-DUHAZARI--RAL-STATION-220160405183743.jpg)
স্থানীয় সবজি ব্যবসায়ী আবদুল মোতালেব বলেন, ‘একটা ট্রেন আসে রাত নয়টা-সাড়ে নয়টার দিকে। আবার ভোর সাড়ে পাঁচটায় নগরের উদ্দেশে চলে যায়। এত ভোরে মানুষ কই যাবে? দোহাজারী স্টেশন থেকে প্রতিদিন ১০-১২ জন মানুষ শহরে যায়। ’
![](http://www.banglanews24.com/media/imgAll/2016March/bg/Ctg-DUHAZARI--RAL-STATION-320160405183805.jpg)
মোহাম্মদ আইয়ুব আলী নামের স্থানীয় এক স্কুল শিক্ষক বলেন, ‘সেবার মান বাড়লে মানুষজনও আগ্রহী হবে ট্রেনে। যে ট্রেনটি চলাচল করে সেটি প্রায় মালবাহী ধরনের। পাশাপাশি ট্রেনের শিডিউলেও পরিবর্তন আনা দরকার। তবেই যাত্রীরা আগ্রহী হবে। ’
![](http://www.banglanews24.com/media/imgAll/2016March/bg/Ctg-DUHAZARI--RAL-STATION-420160405183824.jpg)
সকাল পৌনে আটটার দিকে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, একটি কক্ষে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন দারোয়ান অলি আহমেদ। বাইরে ঝাড়ু দিচ্ছিল রেলওয়ের কর্মচারী মাজুরা বেগম।
![](http://www.banglanews24.com/media/imgAll/2016March/bg/Ctg-DUHAZARI--RAL-STATION-520160405183909.jpg)
পরে অনেক তোড়জোড়ে মিলল স্টেশন মাস্টার কাঞ্চন ধরের মোবাইল নম্বর।
কাঞ্চন ধর বাংলানিউজকে বলেন, ‘একটি মাত্র ট্রেন, তাও চলে এক শিডিউলে। তাই যাত্রী একটু কম আমার স্টেশনে। দোহাজারী থেকে চট্টগ্রাম শহরের বটতলী স্টেশন যেতে প্রতি টিকিটের মূল্য ১৪ টাকা। দিনে ২০০-২৫০ টাকার টিকিট বিক্রি হয় এই স্টেশনে। বর্তমানে আমিসহ পাঁচজন কর্মকর্তা কর্মরত আছি স্টেশনটিতে। ’
তবে যাত্রীবাহী ট্রেন সংকট থাকলেও ২০১২ সালে দোহাজারীতে ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পিকিং প্ল্যান্ট স্থাপনের পর ফার্নেস অয়েলবাহী ২/৩ জোড়া ট্রেন নিয়মিত যাতায়াত করে থাকে বলেও জানান কাঞ্চন ধর।
এদিকে রেলওয়ে সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম দোহাজারী রেলপথ সংস্কারের পাশাপাশি কক্সবাজার হয়ে রামু পর্যন্ত এবং রামু থেকে ঘুমধুম পর্যন্ত ১২৮ কিলোমিটার ডুয়েল গেজ রেলপথ নির্মাণ করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে বর্তমান সরকার। সে পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ইতিমধ্যে জমি অধিগ্রহণসহ বিভিন্ন কার্যক্রম দ্রুত এগিয়ে চলছে।
এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে এসব অঞ্চলের মানুষ অনেক কম সময়ে এবং কম ভাড়ায় চট্টগ্রামসহ সারাদেশে যাতায়াত করতে পারবেন, চাপ কমবে যাত্রীবাহী বাসের ওপর। এমনটিই মনে করেন এসব এলাকার মানুষেরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৫, ২০১৬
টিএইচ/এমজেএফ/
** মেঘের সাগরে আয়েসি উড়াল