ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পর্যটন

ঈদের ছুটি কাটুক নিঝুম দ্বীপে

সোলায়মান হাজারী ডালিম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৬
ঈদের ছুটি কাটুক নিঝুম দ্বীপে ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

নিঝুম দ্বীপ থেকে ফিরে: দ্বীপের মাঝে আরেক দ্বীপ! নৌকায় নদীপথ পেরিয়ে সবুজে মোড়ানো গ্রাম্য মেঠোপথ ধরে যেতে যেতে হারিয়ে ফেলবেন নিজেকে। মনে হবে-প্রকৃতির নিস্বর্গে আছেন আপনি।

এ যেন শিল্পীর ক্যানভাসে আকাঁ ছবি। সবকিছু সাজানো গোছানো, সুনশান নিরবতা।

 

বলছি, নোয়াখালী জেলার মূল ভুখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হাতিয়া উপজেলার নিঝুম দ্বীপপের কথা।
নানান বৈচিত্র্যে ভরপুরে এ দ্বীপ সহজে মন কেড়ে নেয় ভ্রমণ পিপাসুদের। এবারের ঈদে আপনার লম্বা ছুটি কাটিয়ে আসতে পারেন এ দ্বীপে। হলফ করে বলা যায়, মুগ্ধ হবেন যে কেউ। একবার গেলে যেতে ইচ্ছে করবে আবার।

 

বনের চিত্রা হরিণ এ দ্বীপের মূল আকর্ষণ। নিঝুম দ্বীপের মতো দেশের অন্যকোনো বনে এত কাছাকাছি চিত্রা হরিণ দেখা যায় না। শুধু হরিণ নয়- দ্বীপে দেখা মিলবে নানা প্রজাতির পাখি আর বৃক্ষ।  

কথিত আছে, ওসমান নামে এক ব্যক্তি তার মহিষের পাল নিয়ে সর্বপ্রথম এই দ্বীপে নববসতি গড়ার পর তার নামেই দ্বীপটি পরিচিতি পায়। পরে এ দ্বীপের নামকরণ হয় নিঝুম দ্বীপ। ২০০১ সালে নিঝুম দ্বীপ জাতীয় উদ্যানের মর্যাদা পায়। ১৯৭৮ সালে এই বনে প্রথম সুন্দরবন থেকে চার জোড়া চিত্রা হরিণ অবমুক্ত করা হয়। তাদের থেকে বংশ বিস্তার করে এ বনে বর্তমানে হরিণের সংখ্যা ১৬ হাজারের মতো।

বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করলেন বন কর্মকর্তা মো. হাফিজ।
 
এখানকার মূল আকর্ষণ বন। বন দেখতে হলে স্থানীয় ‘নামার’ বাজারের পাশের খাল ধরে নৌকায় যেতে হবে চৌধুরী খালে। এ খাল চলে গেছে, জঙ্গলের ভেতরে। খালে নৌকায় দাঁড়িয়েই দেখা যায় মায়াবী চিত্রা হরিণ।

শুধু যে বন আর হরিণ তা কিন্তু নয়-এ দ্বীপে পাবেন স্বল্প পরিসরে সৈকতও। এখনও সৈকতের বিষয়টি চারদিকে ছড়িয়ে না পড়ায় কোলাহল মুক্ত সৈকতে বেড়াতে পারেন। প্রিয়জনকে নিয়ে কাটতে পারেন একান্ত কিছু সময়।
 
কিভাবে যাবেন
রাজধানী থেকে নিঝুম দ্বীপ যাওয়া যাবে দুই পথে। একটি নৌপথ অন্যটি সড়ক পথ। নৌ পথে ঢাকার সদরঘাট থেকে লঞ্চে হাতিয়ার তমরুদ্দী ঘাট। সেখান থেকে মোটরসাইকের যোগে নিঝুম যাওয়ার বন্দও টিলা ঘাটে যেতে হবে।

সদর ঘাট থেকে হাতিয়া পর্যন্ত লঞ্চের ডেকে জনপ্রতি ভাড়া সাড়ে ৩শ’ টাকা। ঢাকা থেকে বিকেল পাঁচটায় ছেড়ে তমুরুদ্দী পৌঁছাতে ৯ থেকে ১০ ঘণ্টা সময় লাগতে পারে। সড়ক পথে রাজধানীর কমলাপুর অথবা সায়দাবাস বাসস্ট্যান্ড থেকে প্রথমে যেতে হবে নোয়াখালীর সোনাপুর।

সেখান থেকে অটোরিকশা নিয়ে যেতে হবে চর জব্বার ঘাটে। সেখান সি ট্রাক কিংবা ইঞ্জিন নৌকায় চড়ে যেতে হবে হাতিয়ার নলচিরা ঘাট। সেখান থেকে আবার বাস কিংবা অটো রিকশায় জাহাজমারা বাজার। জাহাজমারা বাজার থেকে আবার ইঞ্জিন নৌকায় যেতে হবে নিঝুম দ্বীপ।

থাকার ব্যবস্থা:
এ দ্বীপে এখনো বেসরকারিভাবে তেমন হোটেল মোটেল ঘড়ে ওঠেনি। থাকার জন্য একমাত্র ভালো মানের জায়গা হল অবকাশ পর্যটনের নিঝুম রিসোর্ট। এ নিঝুম দ্বীপের নামার বাজার এলাকায় অবস্থিত। এখানকার পর্যটন রিসোর্টে থাকতে ভাড়া পড়বে রুম প্রতি ৫০০ থেকে এক হাজার ৫০০ পর্যন্ত। বাজারেই আছে মসজিদ বোর্ডিং, এখানে খুবই কম খরচে থাকা যায়। তবে, বিদ্যুতের ব্যবস্থা নেই। গোটা দ্বীপেই সোলার প্যানেল অথবা জেনারেটর ব্যবহার করে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয় সীমিত সময়ের জন্য। কাজেই বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম বুঝেশুনে ব্যবহার করাই ভালো।

খাওয়ার ব্যবস্থা:

রিসোর্ট কিংবা হোটেল রুমে কোনো খাবার পাবেন না। খাবার খেতে হবে স্থানীয় নামার বাজার অথবা বন্দর টিলা বাজারে। দাম অনেক কম পড়বে। কম দামে খেতে পারবেন মেঘনার ইলিশসহ নানা প্রজাতির সুস্বাদু খাবার। মিলবে কাকড়া ফ্রাইও।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৬
পিসি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।