প্রতিটি বাড়িতে রয়েছে প্রচুর সংখ্যক নারকেল ও সুপারি গাছ। সবুজে ভরা এ জেলার ঐহিত্য যেনো এই দু’টি গাছ।
দেশি-বিদেশি পর্যটকদের ভ্রমণ পিপাসু মনের তৃষ্ণা মেটায় ডাব-নারকেল। বাগেরহাটের নয়টি উপজেলাতেই রয়েছে নারকেল ও সুপারির বিস্তীর্ণ বাগান। বাণিজ্যিকভাবে বাগান করে নারকেল-সুপারি চাষে অনেকেরই ভাগ্য বদল হয়েছে।
এ এলাকায় উৎপাদিত নারিকেল, সুপারি সারা দেশে নিয়ে যান ব্যবসায়ীরা। এমনকি নারকেল, সুপারি দেশের বাহিরেও রফতানি হয়। এসবের ছোবড়া (খোসা) এবং বিভিন্ন অংশ আচাসহ অন্যান্য পণ্য তৈরির কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করছে শিল্প-কারখানারগুলো।
শনিবার (১৭ ডিসেম্বর) বাগেরহাট সদর, ফকিরহাট, মোল্লাহাট উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এবং স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এক একটি নারকেল-সুপারি বাগানে বছরে কয়েক হাজার নারকেল-সুপারি উৎপাদন হয়। জেলার প্রতিটি হাটেই চলে বেচাকেনা।
স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সরবরাহ করা হয় এ জেলার নারকেল-সুপারি। আবার নারকেল থেকে তৈরি হয় তেল, খৈল। দেশ জুড়ে বাগেরহাটের নারকেল তেলের সুখ্যাতির কারণে এখানে গড়ে উঠেছে বেশ ক’টি নারকেল তেল কারখানা।
খোসা (ছোবড়া) ছাড়িয়ে এসব কারখানায় শুধু নারকেল ব্যবহার করা হয়। আবার খোসা দিয়ে তৈরি হচ্ছে তোষক, জাজিম এবং ম্যাট্রেস। দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও রফতানি হচ্ছে সেসব। এজন্য বাগেরহাটে গড়ে উঠেছে নারিকেলের খোসার ফাইবার কারখানা।
কোকোনাট ফাইবার, ম্যাট্রেস, পাপোস, কার্পেট ইত্যাদি চীন, ইংল্যান্ড, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রফতানি করা হয় বলে জানান শহরের নাগেরবাজার এলাকার ব্যবসায়ী আব্দুল জলিল।
টাউন নওয়াপাড়া এলাকার জমিদার বাড়ির শৈলেন ঘোষ বলেন, বাগেরহাট অঞ্চল অনেক আগে থেকেই নারকেল-সুপারির জন্য বিখ্যাত। আমাদের বাড়িতে দুইশ’ বছর বয়সী নারকেল গাছ রয়েছে।
একটি জাতীয় দৈনিকে ফকিরহাট প্রতিনিধি ফটিক ব্যানার্জী বাংলানিউজকে বলেন, নারকেল-সুপারি এ এলাকার অন্যতম প্রধান অর্থকরী ফসল। বিদেশে রফতানির পাশাপাশি এর ওপর ভিত্তি করে এই অঞ্চলে গড়ে উঠছে রফতানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠান। তবে নানা কারণে বর্তমানে নারকেল, সুপারি চাষ এবং ফলন হ্রাস পেতে শুরু করেছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০১৬
এমআরএম/টিআই/এটি