ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

পর্যটন

বছরে ১৪ মিলিয়ন পর্যটক আসে হা লং-এ: ডং হুই হাউ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০১৯
বছরে ১৪ মিলিয়ন পর্যটক আসে হা লং-এ: ডং হুই হাউ ডং হুই হাউ। ছবি: বাংলানিউজ

হা লং ভিয়েতনাম থেকে: বিশ্বের অনেক দেশেই ভিয়েতনাম এক যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ হিসেবে পরিচিত হলেও নিজেদের সেই ‘ইমেজ’ দ্রুতই পাল্টে দিচ্ছে সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতির দেশটি। প্রকৃতির অপার দান এবং মানুষের মেধা অর্থাৎ পর্যটন এবং আইটি খাতকে হাতিয়ার হিসেবে নিয়ে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাচ্ছে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার এই দেশটি। এখানেই অনুষ্ঠিত হচ্ছে এশিয়া প্যাসিফিক আইসিটি অ্যাওয়ার্ড (এপিকটা)-২০১৯ এর ১৯তম আসর। 

পর্যটকদের হা লং শহরের প্রতি আরও আকৃষ্ট করতে এবারের আয়োজনের শহর কোয়াং নিন প্রদেশের এই শহর। এপিকটা আয়োজনের মাঝেই বাংলানিউজের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় অংশ নেন রাজ্যের নেতা এবং প্রভিনসিয়াল পিপলস কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ডং হুই হাউ।

 

বাংলানিউজ: ভিয়েতনামের রাজ্যগুলোর মাঝে হা লং পর্যটকদের কাছে বেশ পরিচিত একটি নাম। আপনাদের রাজ্যের পর্যটন খাতের এখনকার অবস্থা কেমন?
ডং হুই হাউ: আমাদের পর্যটন খাত দিন দিন বৃদ্ধি করছে। দিন দিন দেশ ও বিদেশের পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় হচ্ছে হা লং। আমাদের এখানে প্রতিবছর প্রায় ১৪ মিলিয়ন পর্যটক বেড়াতে আসে যার মাঝে প্রায় পাঁচ মিলিয়ন বিদেশি। এই সংখ্যা আরও বৃদ্ধিতে কাজ করছি আমরা। আমাদের হা লং বে (উপসাগর) দারুণ কিছু দ্বীপ আছে। সেগুলো পরিদর্শন করাতে পর্যটকবাহী প্রায় ৬০টি ক্রুজ জাহাজ প্রতিদিন সাগরে যায়।  

বাংলানিউজ: পর্যটক খাতে ভাল করতে কোন বিষয়গুলো আপনাদের সাহায্য করেছে?
ডং হুই হাউ: এক্ষেত্রে তিনটি বিষয় আমাদের কৌশলগত পরিকল্পনা ও সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে। প্রথমত, আমাদের যা কিছু আছে সেগুলোকে ব্যবহার করা। যেমন হা লং বে ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ। আমরা সেটিকেই বিশ্ববাসীর কাছে ফুটিয়ে তুলেছি। দ্বিতীয়ত, আমাদের দীর্ঘদিনের ঐতিহাসিক এবং সাংস্কৃতিক কিছু বৈশিষ্ট্য আছে। আর সবশেষে আমাদের বৈপ্লবিক কিছু প্রথা আছে। সেগুলোই আমরা সবার সামনে তুলে ধরেছি। এর পাশাপশি অবশ্যই ভৌত অবকাঠামো এবং বিনিয়োগের বিষয় আছে। রাজধানী হ্যানয় থেকে হা লং আসা মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যাপার এবং সড়কগুলো বেশ প্রশস্ত এবং এখানে গতি দিয়ে যানবাহন ছুটতে পারে। হা লং-এর অবকাঠামোর উন্নতি করছি আমরা যা এখনো চলমান রয়েছে।  

বাংলানিউজ: অন্য দেশ বা বাংলাদেশের জন্যই পর্যটন খাতের উন্নয়নে আপনার পরামর্শ কি থাকবে?
ডং হুই হাউ: একটি পরামর্শ আসলে সবার জন্যই প্রযোজ্য। সেটি হচ্ছে নিজেদের শক্তির জায়গাটা জানুন আর নিজেদের যা আছে সেটিকে প্রমোট করুন।

বাংলানিউজ: ভিয়েতনাম তথ্য প্রযুক্তি (আইটি) খাতে অত্র অঞ্চলে ভাল করছে। কোয়াং নিন প্রদেশ এক্ষেত্রে অগ্রগামী। আইটিতে আপনাদের সফলতার ইতিহাস কি?
ডং হুই হাউ: বিদেশি বিনিয়োগ পেতে এবং আমাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে আইটিকে আমরা কার্যকরী মাধ্যম হিসেবে দেখেছি। বিগত প্রায় আট বছর এই খাতে আমরা আরও বেশি জোর দিয়েছি। হা লং দেশের অন্যান্য রাজ্যগুলোর থেকে একটি ব্যতিক্রমী এবং সবার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখে চলা একটি রাজ্য। তাই আমরা কেন্দ্রীয় সরকারের সাহায্য যেমন পেয়েছি তেমনি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে পেরেছে। এখানকার সঙ্গে বহির্বিশ্বের যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই ভাল।  

বাংলানিউজ: আপনাদের আশেপাশের দেশ যেমন চীন, কোরিয়া বা জাপান আইটিতে ইতোমধ্যে অনেক এগিয়ে। তাদের থেকে আপনারা আরও ভাল করতে চাচ্ছেন। কিভাবে? 
ডং হুই হাউ: সত্যি কথা বলতে তাদের অভিজ্ঞতা থেকে আমরা অনেক কিছু শিখেছি। সেই শিক্ষাকেই কাজে লাগিয়ে আমরা ভাল কিছু করার আশা রাখি।  

বাংলানিউজ: আইটি খাত নিয়ে আপনাদের ভবিষ্যত পরিকল্পনা কি?
ডং হুই হাউ: হা লং ভিয়েতনামের অন্যান্য রাজ্যগুলোর থেকে বিনিয়োগের শ্রেষ্ঠ জায়গা। আমাদের এখানে এখন বিদেশি বিনিয়োগে বড় আকারের ২৬টি প্রকল্পের কাজ চলছে। ৩০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ হচ্ছে এখানে। এর পরিধি আমরা আরও বাড়াতে কাজ করছি। বিদেশি বিনিয়োগের জন্য আমরা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম তৈরি করছি, স্মার্ট সিটি গড়ে তুলছি। আইটি পার্ক করছি আমরা। এখানে তারা বিনিয়োগ করতে পারবে।

বাংলানিউজ: বাংলাদেশ এবং ভিয়েতনামের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নিয়ে আপনার মন্তব্য কি থাকবে?
ডং হুই হাউ: ভিয়েতনাম সরকার সবসময়ই আন্তর্জাতিক বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর প্রতি আন্তরিক। আমরা আরও বন্ধু তৈরি করতে চাই এবং যাদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আছে সেটিকে আরও গাঢ় করতে চাই। নিজেদের মধ্যে সাহায্য সহযোগিতা বাড়াতে চাই। এপিকটার মতো এ ধরনের আয়োজন সেই উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। সম্প্রতি আমাদের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশ সফর করেছেন। দুই পক্ষের মধ্যেকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের নজির এটি।  

বাংলানিউজ: সবশেষে এবারের এপিকটা আয়োজন নিয়ে আপনার অনুভূতি কি?
ডং হুই হাউ: ঠিক যেমনটা বললাম, এ ধরনের আয়োজন বহির্বিশ্বের কাছে আমাদের নিজেদের তুলে ধরতে সাহায্য করে। তেমনি তাদের সম্পর্কেও আমরা জানতে পারি। আশাকরি এবারের আয়োজন সফল হবে এবং আপনারা যারা আমাদের অতিথি আছেন তারা হা লং এবং ভিয়েতনামে দারুণ কিছু সময় উপভোগ করবেন।
.

বাংলাদেশ সময়: ০৯০৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০১৯
এসএইচএস/এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।