সমুদ্রের কোল ঘেঁষে গড়ে উঠেছে কক্সবাজার শহর। শহরের কলাতলি পয়েন্ট দিয়ে একটু সামনে এগোতেই সাগরের গর্জন।
সমুদ্রের এ গর্জন আর উথালপাতাল ঢেউ এক মুহুর্তের জন্যও থামে না। সৈকত জুড়ে বিছিয়ে রাখা চেয়ারগুলোতে বসে তারই সৌন্দর্য দুচোখ ভরে উপভোগ করছেন পর্যটকরা।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সৈকতের লাবণী পয়েন্টে গিয়ে এ দৃশ্যই চোখে পড়ে। অনেকেই সী-বোটে করে সৈকতবর্তী সাগরে ছুটে বেড়াচ্ছেন। কেউবা আনন্দে মেতে সেরে নিচ্ছেন সমুদ্রস্নান। বহুস্তর সমুদ্র নিজের রূপ মেলে ধরেছে সবার সামনে।
এই বিশাল সমুদ্র আর তার উত্তাল জলরাশির গর্জন উপভোগ করতে প্রতিদিনই ভোর থেকে মানুষ সৈকতে ভিড় করেন। গভীর রাত অবধি চলে তাদের সমুদ্র দর্শন। কখনোবা পূর্ণিমার আলোয় ভেসে যায় এই সমুদ্রের নীল জলরাশি। মুছে যায় মানুষের অবসাদ, বিষণ্ণতা আর ক্লান্তি।
সৈকতে সবচেয়ে বেশি পর্যটকের ভিড় জমায় সূর্যোদয় আর সূর্যাস্তের দৃশ্য দেখতে। সোনার ডিমের মতো একটা সুর্য কীভাবে ধীরে ধীরে সাগরের বুকে হারিয়ে যায়, মন মাতানো সেই দৃশ্যের কোনো তুলনা নেই।
ওদিকে কক্সবাজার শহর থেকে বেরিয়ে মেরিন ড্রাইভ রোডে উঠলেই যে কারো মন হারিয়ে যায় প্রকৃতির অপার লীলায়। একদিকে সুউচ্চ পাহাড়, অন্যদিকে ফেনিল, নীল সমুদ্র। দুপাশে সুন্দরের পসরা, তারই মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে মেরিন ড্রাইভ রোড। দুপাশে সুপারি বাগান, আর সাগরে সারি সারি নৌকা, ট্রলার।
হিমছড়ির কাছেই বড় বড় ঢেউ এসে আছড়ে পড়ছে। ইনানী বিচে ছড়িয়ে আছে অজস্র সমুদ্রঝিনুক আর ছোট ছোট পাথর। এরই মাঝে মাঝে হঠাৎ বড় ঢেউগুলো আছড়ে পড়ছে সে সৈকতে। ওদিকে মাঝিরা ট্রলার আর জাহাজে করে মাছ শিকারে বেরিয়েছে।
প্রথমবার সমুদ্র দর্শনে যাওয়া এক শিক্ষার্থী হুমায়রা জানান নিজের উচ্ছ্বাস আর আনন্দের কথা। বন্ধুদের সঙ্গে কক্সবাজার বেড়াতে গেছেন তিনি।
হুমায়রা জানান, প্রথমবার সমুদ্র দেখতে এসেই তার প্রেমে পড়েছেন। এই বিশাল জলরাশির, সাগরের গর্জন, আর তাতে সূর্যাস্তের দৃশ্য যে কী অপরুপ!
আরেক পর্যটক ফাহিমা সুমাইয়া বলেন, কক্সবাজার বহুবার এসেছি, তারপরও ছুটে আসি ক্লান্তি ঝরঝরে আর সতেজ হতে।
তবে কক্সবাজার আরও পর্যটকবান্ধব হওয়া দরকার বলে জানান তিনি। বলেন, কক্সবাজার শহরকে আরও পরিচ্ছন্ন ও আধুনিক করা দরকার। রাস্তাঘাটসহ যেখানে সেখানে ময়লা, আবর্জনা পড়ে থাকে। এতে পর্যটকদের দুর্ভোগ হয়।
আরেক শিক্ষার্থী রৌজান ফেরদৌস বলেন, সাগরের গর্জন মন ভালো করে দেয়। এর আদিগন্ত জলরাশি দেখে বারবার বিমোহিত হই।
বাংলাদেশ সময়: ১৩১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০২০
টিএম/এইচজে