কক্সবাজার: বিজয় দিবসের ছুটি এবং একদিন পরেই সাপ্তাহিক ছুটি যোগ হওয়ায় দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনে পর্যটক সমাগম বেড়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লোকজন পরিবার-পরিজন নিয়ে ছুটছেন সেন্টমার্টিনে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সেন্টমার্টিন হোটেল-মোটেল ও কটেজ মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি ও দ্বীপ আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মুজিবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ‘ডিসেম্বরেই সবচেয়ে বেশি পর্যটক আসে সেন্টমার্টিনে। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে এ বছর একটু পর্যটক সমাগম কম। বিজয় দিবসের ছুটিতে হঠাৎ করে দ্বীপে পর্যটকের আনা গোনা বেড়েছে’। তিনি বলেন, ‘ এখন কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন ও টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে পর্যটকবাহী ছয়টি জাহাজ চলাচল করছে। কোনোটিতে আসন খালি থাকছে না। এসব জাহাজ প্রতিদিন প্রায় তিন হাজার পর্যটক দ্বীপে ভ্রমণে আসতে পারেন’।
এখানকার শতাধিক হোটেল-মোটেল ও কটেজে মোটামুটি ভালোই সাড়া পাওয়া যাচ্ছে বলে যোগ করেন মুজিবুর রহমান।
জানা গেছে, প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন নামটি পর্যটকদের কাছে যেন এক অসাধারণ সুন্দরের হাতছানি। প্রায় ৮ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের দ্বীপটি অনেকের কাছে দ্বীপটি পরিচিত নারিকেল জিঞ্জিরা নামে। দ্বীপের নৈসর্গিক সৌন্দর্য অবলোকনে প্রতিদিন অন্তত ১০ হাজার পর্যটক সেন্টমার্টিন ভ্রমণে যান। যে কারণে দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনের অপার সৌন্দর্য হাতছানি দেয় পর্যটকদের। পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি থেকে সেন্টমার্টিন বেড়াতে আসা পর্যটক স্কুলশিক্ষক সিজি ত্রিপুরা মৌ বাংলানিউজকে বলেন, ‘মেয়ের আবদার পূরণে এবার সেন্টমার্টিন ভ্রমণে আসছি। কক্সবাজার থেকে সাগর পথে সেন্টমার্টিন যাত্রা সেই অনুভূতিই আসলে অন্যরকম। প্রকৃতি যে অসাধারণ রূপ দেখা যায়, আসলেই মুগ্ধতা ছড়ায়। আর সেন্টমার্টিনের সৌন্দর্য তো বলা অপেক্ষা রাখে না।
সি-ট্রাক থেকে নেমে পায়ে হেঁটে জেটি দিয়ে দ্বীপে ওঠার অনুভূতি আমার কাছে অন্য রকম লেগেছে-যোগ করেন মৌ।
কক্সবাজার থেকে সেন্টমার্টিন ভ্রমণে যাওয়া মোহা মারুফুন্নবী বিপ্লব বাংলানিউজকে বলেন, ‘এক কথায় সেন্টমার্টিন ভ্রমণের অভিজ্ঞতা অসাধারণ। মনে হয়, সেন্টমার্টিন গেলেই প্রকৃতির খুব কাছাকাছি যাওয়া যায়। আর যেদিকে যাই শুধুই প্রকৃতির অসাধারণ হাতছানি আর চারদিকে শুধুই মুগ্ধতা’। তিনি বলেন, ‘ছেঁড়াদ্বীপ ভ্রমণের অভিজ্ঞতা আরও ভালো। দ্বীপের নীল জলরাশি প্রাণ ছুঁয়ে যায়’।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আলহাজ নুর আহমদ বাংলানিউজকে বলেন, ‘বিজয় দিবসের ছুটিতে দ্বীপে বেশি পর্যটক আসা শুরু করেছে। বেশি পর্যটক দ্বীপে এসেছেন। লকডাউন পরবর্তী পর্যটন মৌসুম এবং সরকারি ছুটিকে স্মৃতিময় করতে এসব পর্যটক আগামী শনিবার (১৯ ডিসেম্বর) পর্যন্ত প্রবালদ্বীপে অবস্থান করবেন। অনেক পর্যটক হোটেল-কটেজে জায়গা না পেয়ে ইতোমধ্যে তাঁবু ভাড়া নিয়েছেন। তারা নিকটজনদের নিয়ে সৈকতের বালিয়াডিতে রাত কাটাবেন।
সেন্টমার্টিন পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মুস্তাকিম হোসাইন বাংলানিউজকে বলেন, দ্বীপে পর্যটকদের নিরাপত্তা নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা এবং নিরাপদ ভ্রমণ নিশ্চিত করতে জেলা পুলিশ এবং টুরিস্ট পুলিশ যৌথভাবে কাজ করছে। সম্প্রতি পর্যটক সমাগম বেড়ে যাওয়ায় দিনে এবং রাতে টহল আরও বাড়ানো হয়েছে।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, মহান বিজয় দিবসকে ঘিরে কক্সবাজারে প্রচুর পর্যটক এসেছে। একটি বড় অংশ সেন্টমার্টিন ভ্রমণে যাচ্ছে। তাদের ব্যাপারে নিয়মিত খোঁজ-খবর রাখা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০২০
এসবি/এএটি