ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে

বরসা রিসোর্ট থেকেই দেখুন সুন্দরবন

মাহবুবুর রহমান মুন্না, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২১৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০১৬
বরসা রিসোর্ট থেকেই দেখুন সুন্দরবন বরসা রিসোর্টে প্রবেশ পথ

প্রবেশপথের ফটকের দু’পাশে দাঁড়িয়ে আছে দু’টি বাঘ। গেট দিয়ে রিসোর্টের ভেতরে প্রবেশ করে দেখা যায় উঠোনে ব্যাঙ। মূল ভবনের প্রথম তলার সিঁড়িতে দোয়েল ও ঈগল পাখি। দ্বিতীয় তলায় হরিণ আর বক। তৃতীয় তলায়ও বক-হরিণের অভ্যর্থনা। কৃত্রিম এসব পশু-পাখি  দেখে সুন্দরবনের ধারণা পাওয়া যায়।

সাতক্ষীরা থেকে: প্রবেশপথের ফটকের দু’পাশে দাঁড়িয়ে আছে দু’টি বাঘ। গেট দিয়ে রিসোর্টের ভেতরে প্রবেশ করে দেখা যায় উঠোনে ব্যাঙ।

মূল ভবনের প্রথম তলার সিঁড়িতে দোয়েল ও ঈগল পাখি। দ্বিতীয় তলায় হরিণ আর বক। তৃতীয় তলায়ও বক-হরিণের অভ্যর্থনা। কৃত্রিম এসব পশু-পাখি  দেখে সুন্দরবনের ধারণা পাওয়া যায়। বরসা রিসোর্টের দৃষ্টিনন্দন দৃশ্য।  ছবি তুলেছেন দেলোয়ার হোসেন বাদল

রিসোর্টের ছাদে দাঁড়িয়ে পশ্চিম দিকে তাকালে দেখা যাবে সুন্দরবন। যা দেখে মুগ্ধ হবেন যে কোনো পর্যটক। ছাদে বসে সুন্দরবন দেখার পাশাপাশি শীতের সকালে কাঁচা রোদের উম মাখতে পারবেন গায়ে। একইসঙ্গে পূর্ব দিকে তাকালে বড় একটি পুকুরের চার পাশে শত শত নারিকেল গাছে চিরল পাতার ওপর পাখিদের ওড়াউড়ি ও কিচির-মিচির যে কারও মনে দোলা দেবে। বরসা রিসোর্টের দৃষ্টিনন্দন দৃশ্য।  ছবি তুলেছেন দেলোয়ার হোসেন বাদল

এই বর্ণনা সাতক্ষীরার শ্যামনগরের মুন্সীঞ্জের বরসা রিসোর্টের। প্রায় ৫০ বিঘা জমির ওপর ২০০৯ সালে এটি গড়েছেন পর্যটনবান্ধব ব্যক্তিত্ব এ কে এম আনিছুর রহমান।

বরসা রিসোর্টের দৃষ্টিনন্দন দৃশ্য।  ছবি তুলেছেন দেলোয়ার হোসেন বাদল দৃষ্টিনন্দন এ রিসোর্টে এসে যে কোনো সময় উপভোগ করতে পারেন বিশ্বের সবচেয়ে ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের সৌন্দর্য্য। কেবল সুন্দরবন দেখানোর জন্য নয়, ‍সুন্দরবনকে পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয়ভাবে তুলে ধরতে রিসোর্ট কর্তৃপক্ষ এখানে সুন্দরী, পাইন, গেওয়া, কেওড়াসহ বনের বিভিন্ন গাছ লাগিয়েছে এখানে।

বরসা রিসোর্টের দৃষ্টিনন্দন দৃশ্য।  ছবি তুলেছেন দেলোয়ার হোসেন বাদলকিভাবে আসবেন বরসা রিসোর্টে
সড়কপথে ঢাকা থেকে রিসোর্টের দূরত্ব প্রায় ৪২৫ কি. মি.। ঢাকা থেকে মুন্সীগঞ্জ আসার পর সরাসরি মোটরসাইকেল বা ইঞ্জিনভ্যানে/ইজিবাইকে কলবাড়ি বাজার থেকে একটু গেলেই বরসা রিসোর্ট। একইভাবে দেশের যে কোনো জেলা থেকে সাতক্ষীরার শ্যামনগরের মুন্সীগঞ্জ এসে বরসা রিসোর্টে যাওয়া যায়।

বরসা রিসোর্টের দৃষ্টিনন্দন দৃশ্য।  ছবি তুলেছেন দেলোয়ার হোসেন বাদলএখানে রুম আছে মোট ২০টি, বেড আছে ৩০টি। রিসোর্টের মধ্যে আরও একটি তিন তলা ভবনের কাজ প্রায় শেষ। এটি চালু হলে দ্বিগুণ পর্যটক একসঙ্গে রিসোর্টে থাকতে পারবেন।

এখানে এসে কী খাবেন
এই রিসোর্টে সব টাটকা খাবারের ব্যবস্থা রয়েছে। রিসোর্টের পুকুরের তাজা মাছ ও বাগানের শাক-সবজি ইচ্ছে করলেই খাওয়া যাবে। এছাড়া অর্ডার দিলে আধুনিক সব খাবারের ব্যবস্থা করে দেবে রিসোর্ট কর্তৃপক্ষ।

বরসা রিসোর্টের দৃষ্টিনন্দন দৃশ্য।  ছবি তুলেছেন দেলোয়ার হোসেন বাদলযেসব সুবিধা রয়েছে এখানে
বরসার নিজস্ব কিছু ব্যতিক্রমী আইটেম আছে যা অন্য সব ট্যুরিজম কোম্পানির থেকে পুরোপুরি আলাদা। সেগুলো হচ্ছে- নিজেদের রয়েছে ২টি লঞ্চ, ১টি স্পিড বোট ও ট্রলার এবং ট্যুর গাইড। যা নিয়ে সুন্দরবন ভ্রমণে যাওয়া যায়। রিসোর্টের সামনের চুনা নদীর ঘাটে সেগুলো থাকে। চুনা নদীর ঘাটে দাঁড়িয়ে নদীর ওপারের বনে মাঝে মধ্যে বাঘের আনা গোনা চোখে পড়ে।

বরসা রিসোর্টের দৃষ্টিনন্দন দৃশ্য।  ছবি তুলেছেন দেলোয়ার হোসেন বাদলরিসোর্টে রয়েছে পিকনিক কর্নার, সেমিনার রুম, পুকুরে গোসলের সুবিধা। সিসি ক্যামেরার আওতায় থাকা এ রিসোর্টে শিশুদের বিনোদনের জন্য রয়েছে স্লিপার ও দোলনাসহ বিভিন্ন খেলনা।

কেমন খরচ
অনেকের কাছে বিস্ময়ের হলেও অনেক কম খরচে বরসা রিসোর্ট পর্যটকদের সেবা দিয়ে থাকে।

রিসোর্টের হিসাবরক্ষক আশিকুজ্জামান পলাশ বাংলানিউজকে জানান, তিন ধরনের প্যাকেজ রয়েছে এখানে। ১ নং প্যাকেজ সাতক্ষীরার মুন্সীগঞ্জ থেকে কলাগাছিয়া, কটকা, দুবলার চর, হিরণ পয়েন্ট হয়ে মুন্সীগঞ্জ। তিন দিন চার রাত জনপ্রতি সাড়ে ৭ হাজার টাকা। বরসা রিসোর্টের দৃষ্টিনন্দন দৃশ্য।  ছবি তুলেছেন দেলোয়ার হোসেন বাদল

২ নং প্যাকেজ ঢাকা থেকে সাতক্ষীরার মুন্সীগঞ্জ, কলাগাছিয়া, দোবেকী, হিরণ পয়েন্ট, পুতনী, মান্দারবাড়িয়া, পুষ্পকাটি, নটাবেকি, মুন্সীগঞ্জ হয়ে ঢাকা তিন দিন চার রাত জনপ্রতি সাড়ে ৯ হাজার টাকা। আর ৩ নং প্যাকেজ ঢাকা থেকে সাতক্ষীরার মুন্সীগঞ্জ, কলাগাছিয়া, দোবেকি, কদমতলা, মুন্সীগঞ্জ হয়ে ঢাকা। এক দিন দুই রাত জনপ্রতি সাড়ে ৪ হাজার টাকা।

বরসা রিসোর্টের দৃষ্টিনন্দন দৃশ্য।  ছবি তুলেছেন দেলোয়ার হোসেন বাদলতিনি আরও জানান, রিসোর্টের এসি রুমের ভাড়া ১ হাজার ৫০০ টাকা। নন এসি ১ হাজার টাকা। কনফারেন্স রুম এসি ৫ হাজার, নন এসি ৩ হাজার।

রিসোর্টের ম্যনেজার তাসকিন আব্দুল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, সাতক্ষীরায় সুন্দরবন দেখতে আসা পর্যটকদের আগে থাকার কোনো জায়গা ছিলো না। এটিই প্রথম রিসোর্ট সেন্টার যেখান থেকে পর্যটকদের নিরাপত্তার সঙ্গে গাইড দিয়ে সুন্দরবন দেখানো হয়।

বরসা রিসোর্টের দৃষ্টিনন্দন দৃশ্য।  ছবি তুলেছেন দেলোয়ার হোসেন বাদলআদিগন্ত বিস্তৃর্ণ সবুজে ভরা রূপসী সুন্দরবনকে দেখতে বিশ্বস্ত বরসা রিসোর্ট ট্যুরিজম কোম্পানির সঙ্গী হয়ে আপনিও ঘুরে আসতে পারেন সুন্দরবন। এ জন্য যোগাযোগ করতে পারেন -০১৭৬৫ ০১২৪৩৮ ও ০১৭১৭ ৪৫৪৫৯৬ নাম্বারে। ইমেইল করতে পারেন [email protected] ঠিকানায়। এছাড়া ঢুঁ মারতে পারেন www. Barsaresortandtourism.com ওয়েবসাইটে।

সহযোগিতায়
আরও পড়ুন...

** ভালো সড়কে পর্যটক টানছে বাগেরহাট
** মুড়ি ভাজার শব্দে ঘুম ভাঙে! (ভিডিও)
** নারকেল-সুপারির বাগানে ভরপুর বাগেরহাট

বাংলাদেশ সময়: ০৬০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০১৬
এমআরএম/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে এর সর্বশেষ