মঙ্গলবার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে পুরাতন রেলস্টেশন সংলগ্ন ফলমণ্ডিতে অভিযান পরিচালনা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এতে নেতৃত্ব দেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলাম।
ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, ফলের পাইকারি বাজারে অভিযান পরিচালনার সময় আড়তদারদের কাগজ দেখে জানতে পারি- এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে কেজি প্রতি মাল্টা পাইকারিতে ৮০ টাকায় বিক্রি হলেও রমজান উপলক্ষে তা ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
তিনি বলেন, প্রথমে ৮০ থেকে কয়েক ধাপে ১০০-১১৫ টাকায় বিক্রি করলেও রমজান উপলক্ষে কোনো কারণ ছাড়াই মাল্টা পাইকারিতে কেজি প্রতি ১৬০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।
ফলমণ্ডির আড়তদার মেসার্স মক্কা ফল বিতান এবং মেসার্স গরীবে নেওয়াজ ফার্মকে দ্বিগুন দামে মাল্টা বিক্রির প্রমাণ পাওয়ায় ২০ হাজার করে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
অভিযানের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ফলমণ্ডির অধিকাংশ আড়তদারদের কাছে ফল আমদানির তথ্য কিংবা কার কাছ থেকে কত দামে ফল কেনা হয়েছে- সে সংক্রান্ত কোনো কাগজপত্র (ইনভয়েস, রশিদ) নেই। আড়তের সামনে কোনো মূল্যতালিকাও নেই।
ঢাকাভিত্তিক ফল আমদানিকারকরা চট্টগ্রাম বন্দর থেকে মাল খালাসের পর চট্টগ্রামের ফলমণ্ডির বিভিন্ন আড়তদারকে ফল পাঠিয়ে দেন। ফোনে ফোনে আড়তদারকে ফলের দাম নির্ধারণ করে দেন। পেপারলেস মার্কেট তৈরি করে ফলের দাম ইচ্ছেমতো আদায় করেন।
অভিযানে ভ্রাম্যমাণ আদালত ফলমণ্ডির প্রতিটি আড়তে ফলের মূল্য তালিকা টাঙানোর নির্দেশ দেন। মূল্য তালিকা না টাঙানোয় একটি আড়তকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন। ফল ব্যবসায়ী-দোকান মালিক সমিতিকে প্রতিটি ফলের আড়তে মূল্য তালিকা প্রদর্শন নিশ্চিত করার নির্দেশ দেন।
এর আগে নগরের চাক্তাই চালের বাজারে অভিযান পরিচালনা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযানে চালের দাম স্বাভাবিক থাকার প্রমাণ পাওয়ায় চাল ব্যবসায়ীদের ধন্যবাদ দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলাম বাংলানিউকে বলেন, কৃষকরা নতুন ফসল ঘরে তুলতে শুরু করায় চালের বাজার স্থিতিশীল বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছে। নতুন চাল আসলে বাজারে চালের দাম আরও কমবে বলে জানিয়েছেন তারা।
এদিকে নগরের পাহাড়তলী বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুস সামাদ শিকদার। তিনি দোকানে মূল্য তালিকা না রাখায় ৩টি প্রতিষ্ঠানকে ১২ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
ম্যাজিস্ট্রেট আবদুস সামাদ শিকদার বাংলানিউজকে জানান, খাতুনগঞ্জে জেলা প্রশাসনের টানা অভিযানের কারণে অন্যবাজারগুলোতেও তার প্রভাব পড়েছে। কয়েকদিন আগে ২৫০-৩০০ টাকায় বিক্রি হওয়া আদা আজ ১৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে পাহাড়তলীতে।
তিনি বলেন, রসুন গত সপ্তাহে কেজি প্রতি ১৪০ টাকায় বিক্রি হলেও মঙ্গলবারের অভিযানে ১২৮ টাকায় বিক্রির তথ্য পেয়েছি আমরা। চালসহ অন্য নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দামও বাড়তি নিতে পারছেন না দোকানিরা।
চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বদিউল আলম বাংলানিউজকে জানান, চট্টগ্রামের পাইকারি এবং খুচরো বাজারগুলোতে জেলা প্রশাসনের বাজার মনিটরিং কার্যক্রম রমজান মাসজুড়ে অব্যাহত থাকবে।
পণ্য মজুদ করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি কিংবা সিন্ডিকেট করে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ানোর সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০২০
এমআর/টিসি