মঙ্গলবার (২৮ মে) ঢাকার ৭ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. খাদেম উল কায়েস দুই ভিকটিমের একজনের পরবর্তী জেরা করার জন্য আগামী ২৫ জুন দিন ধার্য করেছেন।
গত ৬ মে আসামি নাঈম আশরাফের পক্ষে আইনজীবী মাহবুবুর রহমান বেলা ১১টা থেকে জেরা শুরু করেন।
মামলায় সাফাত আহমেদের ধর্ষণের শিকার অপর ভিকটিমের সাক্ষ্য ২০১৭ সালের ১৬ অক্টোবর শুরু হয় এবং ৮টি ধার্য তারিখে তাকে জেরার পর ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি তা শেষ হয়।
গত ৮ এপ্রিল মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য ছিল। সাক্ষী এলেও আসামি পক্ষের আইনজীবী অসুস্থ থাকায় সময়ের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত ৬ মে দিন ধার্য করেন।
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু ও ভিকটিমের পক্ষের আইনজীবী ফারুক আহমেদ মামলার প্রধান আসামি আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলে সাফাত আহমেদের জামিন বাতিল চেয়ে শুনানি করেন। শুনানি শেষে আদালত সাফাত আহমেদের জামিন বাতিল করে ও তার বন্ধু নাঈম আশরাফ ওরফে এইচ এম হালিমের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
ওই দিন ধর্ষণের শিকার এক তরুণীকে জেরার দিন ধার্য ছিল। মামলার ৫ আসামিকে সেদিন ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
ধর্ষণের শিকার ওই তরুণী জেরা করার সময় আদালতের উদ্দেশে বলেন, আসামিরা একের পর জামিন পাচ্ছে। আসামিদের জন্য আমার জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে সমস্যা হচ্ছে, তারা হুমকি-ধমকি দিচ্ছে।
ভিকটিম আদালতকে তাড়াতাড়ি সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ করতে অনুরোধ করেন। কারণ হিসেবে ভিকটিম জানান, তিনি একটি চাকরি করেন, বারবার ছুটি চাওয়া যায় না। আর যে বিষয় নিয়ে ছুটি চাইবেন সেটা সবার সামনে প্রকাশ করাও যায় না।
২০১৮ সালের ২৯ নভেম্বর সাফাত আহমেদের জামিন মঞ্জুর করেন একই বিচারক। এর আগে বিভিন্ন সময় ধর্ষণের সহযোগী আসামি সাফাত আহমেদের দেহরক্ষী রহমত আলী ও গাড়িচালক বিল্লাল হোসেন এবং বন্ধু সাদমান সাকিফ হাইকোর্ট থেকে জামিন পান।
২০১৭ সালের ৭ জুন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনের (ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার) পরিদর্শক ইসমত আরা পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করেন।
গত বছরে ১৯ জুন একই ট্রাইব্যুনাল আসামিদের বিরুদ্ধ অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন।
২০১৮ সালের ১৩ জুলাই আসামি সাফাত আহমেদ ও নাঈম আশরাফ ওরফে এইচ এম হালিমের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(১) ধারায় ধর্ষণের অভিযোগ গঠন করা হয়।
অপর আসামি সাফাত আহমেদের বন্ধু সাদমান সাকিফ, দেহরক্ষী রহমত আলী ও গাড়িচালক বিল্লাল হোসেনের বিরুদ্ধে ওই আইনের ৩০ ধারায় ধর্ষণে সহযোগিতার অভিযোগ গঠন করা হয়।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৭ সালের ২৮ মার্চ রাত ৯টা থেকে পরদিন সকাল ১০টা পর্যন্ত আসামিরা মামলার বাদী এবং তার বান্ধবী ও বন্ধুকে আটকে রাখে। অস্ত্র দেখিয়ে ভয়-ভীতি প্রদর্শন ও অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে। বাদী ও তার বান্ধবীকে জোর করে একটি কক্ষে নিয়ে যায় আসামিরা। বাদীকে সাফাত আহমেদ ও তার বান্ধবীকে নাঈম আশরাফ একাধিকবার ধর্ষণ করে।
আসামি সাদমান সাকিফকে দুই বছর ধরে চেনেন মামলার বাদী। তার মাধ্যমেই ঘটনার ১০-১৫ দিন আগে সাফাতের সঙ্গে দুই ছাত্রীর পরিচয় হয়। ওই দুই ছাত্রী সাফাতের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে যান। সাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল ও দেহরক্ষী তাদের বনানীর ২৭ নম্বর রোডে রেইনট্রি হোটেলে নিয়ে যায়।
সাফাত আহম্মেদ ও তার বন্ধু নাঈম আশরাফ ওরফে এইচএম হালিম ছাড়া বাকি আসামিরা জামিনে রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৫ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০১৯
এমএআর/এমজেএফ