অর্থের অভাবে চিকিৎসা বন্ধ হওয়া যন্ত্রণায় কাতরানো অসহায়, অভিভাবকহীন শাহানাকে নিয়ে দেশের শীর্ষ অনলাইন নিউজপোর্টাল বাংলানিউজে শনিবার ‘৩ লাখ টাকায় বাঁচতে পারে কলেজ ছাত্রী শাহানার জীবন’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
প্রতিবেদনটি বসুন্ধরা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সাফিয়াত সোবহানের নজরে আসে।
বসুন্ধরা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যানের বদান্যতায় চিকিৎসার আশাতীত সুযোগটি তৈরি হওয়ায় শাহানা আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন।
তিনি বলেন, কোনো দিন ভাবতেও পারিনি বসুন্ধরা গ্রুপের অর্থায়নে আমার চিকিৎসার সুব্যবস্থা হবে। এজন্য আমি বসুন্ধরা গ্রুপের কাছে কৃতজ্ঞ। তাদের সবার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করি।
মা মারা যাওয়া ও শৈশবে বাবা নিরুদ্দেশ হওয়া শাহানার আশ্রয়দাতা ফুফা নুর আলম বলেন, সমাজে যে এখনও ভালো অনেক মানুষ আছেন, সাচ্চাদিল, দরদী মানুষ আছেন তার প্রমাণ বসুন্ধরা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সাফিয়াত সোবহান। আমি শাহানার জন্মদাতা পিতা না হলেও পিতার স্নেহে ওকে এবং ওর ছোট দুই ভাইকে আমার স্বল্প আয়ে সীমিত সামর্থ্যের মধ্যে লেখাপড়া শেখাচ্ছি। ওরা আমার তিন মেয়ের সঙ্গে সমান স্নেহে বড় হচ্ছে। শাহানার হার্টের ভাল্ভ নষ্ট হওয়ার পর থেকে আমি সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি ওর চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে। কিন্তু কোথাও থেকে কোনো সাহায্য-সহযোগিতা পাইনি। এ রকম অসহায়, উপায়হীন অবস্থায় অনেকটা নিরাশ হয়ে এক পর্যায়ে ওর বাঁচার আশাই ছেড়ে দিয়েছিলাম। আল্লাহর অশেষ রহমতে বাংলানিউজে নিউজ হওয়ার পর বসুন্ধরা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সাহায্যের প্রতিশ্রুতি নিয়ে এগিয়ে এলেন। তার সুবাদে আবার আশার আলো দেখছি। এ জন্য বসুন্ধরা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যানসহ বসুন্ধরা গ্রুপের সংশ্লিষ্ট সবার কাছে চিরকৃতজ্ঞ থাকবো। আল্লাহর কাছে তাদের জন্য দোয়া করি।
চিকিৎসার জন্য শাহানাকে ঢাকায় নিয়ে যেতে বলেছে বসুন্ধরা গ্রুপ। এরই মধ্যে তিনি শাহানাকে নিয়ে ঢাকায় যাওয়ার প্রস্তুতিও শুরু করে দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন বাংলানিউজকে।
উল্লেখ্য, খুলনার সরকারি পাইওনিয়ার কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী শাহানা আক্তারের হার্টের একটি ভাল্ভ নষ্ট হয়ে গেছে। অন্য ভাল্ভও অকেজো হওয়ার পথে।
জরুরিভিত্তিতে অস্ত্রোপচার করানোর পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। এজন্য প্রয়োজন প্রায় ৩ লাখ টাকা। কিন্তু শাহানার দরিদ্র স্বজনদের পক্ষে চিকিৎসার এতো বিপুল অর্থ যোগাড় করা অসম্ভব ছিলো।
ছোট বেলায় শাহানার মা মারা যাওয়ার পর বাবা নিরুদ্দেশ হয়ে যান। সেই থেকে তাদের তিন ভাই-বোনকে দরিদ্র ফুফা নুর আলম অনেক কষ্ট করে বড় করেছেন। তাকেই তারা ‘বড় আব্বু’ বলে ডাকে। অসুস্থতার কারণে এ মুহূর্তে শাহানার পড়ালেখা বন্ধ হয়ে আছে। বসুন্ধরা গ্রুপের বদান্যতায় চিকিৎসা পেয়ে সুস্থ হয়ে শাহানা আবার তার পড়ালেখা শুরু করতে চায়। হতে চায় সমাজের একজন স্বাবলম্বী কর্মক্ষম নারী। অবদান রাখতে চায় আপন পরিবারের জন্য, অবদান রাখতে চায় দেশ ও দশের জন্য। সেই স্বপ্নপূরণের আশায় আনন্দে উদ্বেল হয়ে আছে শাহানা।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৫ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০১৯
এমআরএম/জেএম