চীনের শিনজিয়াং প্রদেশের হোতান শহরে আজও চীনারা প্রাচীন পদ্ধতিতে রেশম পোকার গুটি থেকে সিল্ক সুতা তৈরি করছেন।
শহরটির অ্যাটলাস হ্যান্ডিক্রাফটে গিয়ে দেখা গেছে, শ্রমিকরা রেশম গুটি গরম পানিতে ভিজিয়ে, তা থেকে তৈরি করছেন সুতা।
অ্যাটলাস হ্যান্ডিক্রাফটের বয়স প্রায় ৩৪ বছর। তবে এই প্রতিষ্ঠানে যারা কর্মরত, তাদের অনেকেরই বয়স ৭৫-৮০ বছর। অনেকেই জীবনের প্রায় ৬০ বছর ধরে রেশম পোকার গুটি থেকে সুতা তৈরি করছেন। সিল্ক বুনছেন। সিল্কের সুতা থেকে কাপড় তৈরি করছেন। কার্পেট তৈরি করছেন।
প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা বু উজম ম্যতেসে জানিয়েছেন, প্রতি বছর এখানে যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি, জাপানসহ আরও কয়েক দেশ থেকে ক্রেতারা আসেন। তারা সিল্কের তৈরি পণ্য কিনে থাকেন। এছাড়া চীনের বেইজিং, সাংহাইসহ অন্যান্য প্রদেশ থেকেও প্রচুর লোক এখানে আসেন। গত বছর প্রায় ৭০ হাজার লোক তাদের প্রতিষ্ঠানে এসেছেন। তারা দেখেছেন রেশম পোকার গুটি থেকে কীভাবে সুতা তৈরি করা হয়। আর সেই সুতা থেকে কীভাবে তৈরি করা হয় কাপড়। তারা স্বচক্ষে এসব দেখে আনন্দ পেয়েছেন। আবার অনেকেই পণ্য কিনেছেনও। গত বছর প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ৫ দশমিক ৩ মিলিয়ন আরএমবির পণ্য বিক্রি করেছেন বলে জানান তিনি।
প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা জানান, শিনজিয়াং প্রদেশ হলো চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগের প্রবেশদ্বার। এখান থেকেই পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্যিক রুট চালু করতে চলেছে চীন। সে কারণেই এই অঞ্চলের প্রতি বাইরের মানুষের আগ্রহ বাড়ছে। প্রতিদিনই মানুষের যাতায়াত বাড়ছে এই অঞ্চলে। তাই সিল্ক পণ্যের বিক্রিও বাড়ছে বলে জানান তারা।
প্রায় পাঁচ হাজার বছর আগে চীনারা সিল্কের কাপড় তৈরি শুরু করেন। ধীরে ধীরে সেই কাপড় পশ্চিমাঞ্চলের মধ্যে রফতানি শুরু করেন তারা। যে পথ দিয়ে চীনারা বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন, সিল্কের নাম অনুসারে সেই পথের নাম হয় সিল্ক রুট। এই সিল্ক রুটই ছিল চীনাদের প্রধান বাণিজ্যিক পথ। চীন সরকার বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগ বাস্তবায়নের মধ্যে দিয়ে সেই সিল্ক রুটই পুনরুদ্ধার করতে চায়।
বাংলাদেশ সময়: ১০৫৪ ঘণ্টা, মে ৩, ২০১৯
টিআর/টিএ