ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

নকলে বাধা দেওয়ায় শিক্ষক লাঞ্ছিত

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৫৯ ঘণ্টা, মে ১৬, ২০১৯
নকলে বাধা দেওয়ায় শিক্ষক লাঞ্ছিত

পাবনা: এইচএসসি পরীক্ষা চলাকালে নকলে বাধা দেওয়ায় পাবনায় কলেজ শিক্ষককে লাঞ্ছিত করেছে ছাত্রলীগের ক্যাডাররা।

গত রোববার (১২ মে) এ ঘটনার ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে সারাদেশে নিন্দার ঝড় উঠে।

তবে, ছাত্রলীগের নেতারা নিজেদের সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করে।

সিসি ক্যামেরা ফুটেজে দেখা যায়, ওইদিন এইচএসসির ব্যবহারিক পরীক্ষা শেষে মোটরসাইকেলে বাড়ি ফিরছিলেন সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক মাসুদুর রহমান। এ সময় কলেজের মূল ফটকের সামনে অতর্কিত হামলা চালিয়ে মাসুদুরকে মারধর শুরু করে একদল যুবক। তখন ওই কলেজের সভাপতি শামসুদ্দীন জুন্নুনকে হামলাকারীদের নিবৃত্ত করতে দেখা গেলেও, শিক্ষকদের অভিযোগ জুন্নুনের নির্দেশেই এ হামলার ঘটনা ঘটে।  

এদিকে, এ ঘটনার পর থানায় অভিযোগ তো দূরের কথা নিরাপত্তার অভাবে ঘর থেকেই বের হচ্ছেন না শিক্ষক মাসুদুর রহমান।

ভুক্তভোগী শিক্ষক মাসুদুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, গত ৬ মে কলেজের ১০৬ নম্বর কক্ষে উচ্চতর গণিত পরীক্ষায় পরীক্ষকের দায়িত্ব পালন করছিলাম। এ সময় দুইজন পরীক্ষার্থী দেখাদেখি করায় তাদের সতর্ক করি। এতেও তারা বিরত না হওয়ায় কিছু সময়ের জন্য খাতা নিলে ছাত্রলীগের ছেলেরা আমার ওপর ক্ষুব্ধ হই। এর জের ধরে গত রোববার বাড়ি ফেরার সময় কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি শামসুদ্দীন জুন্নুনের নির্দেশে বহিরাগত সন্ত্রাসীরা আমাকে কিল, ঘুষি, লাথি দিয়ে ফেলে দেয়। পরে শিক্ষকরা এসে আমাকে উদ্ধার করে।

তিনি বলেন, ঘটনার পর আমি ভয়ে বিষয়টি কাউকে জানাইনি। থানায় অভিযোগ করারও সাহস হয়নি। গত রাতে ফেসবুকে বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ার পর অনেকেই আমাকে সাহস দিয়েছেন।

শিক্ষক মাসুদুর আরও বলেন, আমাকে মারধরের পর ঘটনা আড়াল করতে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা যৌন হয়রানির কথা বলা হচ্ছে। যে নারী শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছে তারাও আমাকে বলেছে তাদের অভিযোগ দিতে বাধ্য করা হয়েছে। আমি সরকারি চাকরিজীবী হিসেবে কর্মরত অবস্থায় লাঞ্ছিত হলাম। এরপরেও যদি বিচার না পাই তবে আর কিছুই বলার নেই।

এদিকে শিক্ষক লাঞ্ছিতের ঘটনায় প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা না নিলেও বানোয়াট অভিযোগের তদন্তে কমিটি করেছে কলেজ প্রশাসন। এ নিয়ে শিক্ষকদের চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি শামসুদ্দিন জুন্নুন বাংলানিউজকে বলেন, শিক্ষক মাসুদুরের ওপর হামলায় আমি বা ছাত্রলীগ জড়িত নয়। বহিরাগত সন্ত্রাসীরা স্যারকে আক্রমণ করলে আমরা প্রতিরোধ করে সন্ত্রাসীদের বের করে দিয়েছি।

কলেজ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ বাংলানিউজকে বলেন, শিক্ষকের ওপর হামলার ঘটনা সমগ্র শিক্ষক সমাজের জন্য অপমানের। আমরা এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই, সুষ্ঠু কর্মপরিবেশ চাই। অন্যথায় কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪০ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০১৯
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।