বৃহস্পতিবার (১৬ মে) দুপুরে পাবনা প্রেসক্লাবের সামনে জেলা বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি আয়োজনে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন- সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শহিদুল ইসলাম, সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের সহযোগী অধ্যাপক নুরুল আলম, প্রভাষক রাজু আহমেদ, সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজের সহকারী অধ্যাপক কামরুজ্জামান, মারধরের শিকার শিক্ষক মাকসুদুর রহমান প্রমুখ।
শিক্ষককে লাঞ্ছিত এবং মারপিটের ঘটনায় জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও সন্ত্রাসমুক্ত নিরাপদ কর্মস্থলের দাবি জানানো হয়। মানববন্ধন থেকে শিক্ষক নেতারা তিনদিনের (১৯ মে থেকে) প্রতিবাদ কর্মসূচির ঘোষণা দেন। দাবি পূরণ না হলে পরবর্তীতে বৃহত্তর কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে জানান তারা।
সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. হুমায়ূন কবির মজুমদার এবং বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ও এডওয়ার্ড শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. একেএম শওকত আলী খান কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন।
মানববন্ধনে উপস্থিত প্রভাষক মাসুদুর রহমান বলেন, এ ঘটনা শুধু অমার সঙ্গে না গোটা শিক্ষক জাতির সঙ্গে অপরাধ ও অন্যায় করা হয়েছে। পরীক্ষার হলে অনৈতিক সুবিধা না দেওয়ার কারণে আমাকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে। লাঞ্ছিত ও গায়ে আঘাত করার ছয়দিন পর নিজেদের বাঁচাতে নাটক সাজিয়ে আমাকে দোষ দেওয়ার চেষ্টা করছে তারা।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, থানায় যে মামলা করা হয়েছে সে মামলায় প্রভাবশালীদের চাপে প্রকৃত দোষীদের আড়াল করা হয়েছে। তাকে মারধরের ইন্ধনদাতাকে এজাহার থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে শিক্ষককে মারপিটের ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুই যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার ভোরে পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পুলিশ সুপার পদোন্নতিপ্রাপ্ত) গৌতম কুমার বিশ্বাসের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম অভিযান চালিয়ে দুই যুবককে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারা হলেন- ঈশ্বরদী উপজেলার গোকুলনগর গ্রামের শাহেদ আলীর ছেলে সজল (২৩) এবং পাবনা সদর উপজেলার মালঞ্চি গ্রামের ইউসুফ আলী সেখের ছেলে শাফিন (২০)। সজল সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজের হিসাববিজ্ঞান অনার্স শেষ বর্ষের ছাত্র এবং শাফিন একই কলেজের দ্বাদশ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। দু’জনই ছাত্রলীগের কর্মী বলে পুলিশ জানায়।
এর আগে বুধবার (১৫ মে) রাতে সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর এসএম আব্দুল কুদ্দুস বাদী হয়ে পাবনা সদর থানায় মামলা করেন। মামলায় সজল ও শাফিনসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৩-৪ জনকে আসামি করা হয়েছে।
পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওবাইদুল হক বাংলানিউজকে বলেন, শিক্ষক লাঞ্ছিতর ঘটনায় এজাহারভুক্ত দুই আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। এ ঘটনার সঙ্গে আরও যারা জড়িত রয়েছে তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনা হবে।
জানা যায়, গত ৬ মে সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজের ১০৬ নম্বর কক্ষে এইচএসসি উচ্চতর গণিত পরীক্ষা চলাকালে পাবনা সরকারি মহিলা কলেজের দুই ছাত্রী নকল করার চেষ্টা করছিল। এসময় ওই কক্ষের পরিদর্শক সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজের প্রভাষক মাকসুদুর রহমান তাদের নিবৃত্ত করতে না পেরে একপর্যায়ে খাতা কেড়ে নেন।
এ ঘটনার জের ধরে গত ১২ মে দুপুর পৌনে ২টার দিকে ওই শিক্ষক কলেজ থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে বের হওয়ার সময় গেটের সামনেই কিল-ঘুষি-লাথিসহ বেদম মারপিট করা হয়। এ মারধরের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে পাবনাসহ সারাদেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
ভুক্তভোগী শিক্ষক এ ঘটনার জন্য ছাত্রলীগের একজন নেতাকে দায়ী করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৪ ঘণ্টা, মে ১৬, ২০১৯
জিপি