বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ্’র ১২৯তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে ছেঁউড়িয়া প্রাঙ্গনে চলছে তিনদিনব্যাপী লালন মেলা। মেলা থেকে বের হওয়ার পথেই চোখে পড়বে এসব মিষ্টির দোকান।
সরেজমিনে মিষ্টি চত্বরে গিয়ে দেখা যায় শিশু থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সী মানুষ এসব দোকানে ভিড় করেছে। মেলার দর্শনার্থী সোহেল রানা বাংলানিউজকে বলেন, লালন মেলায় এসে খুব ভালো লাগছে। ফেরার পথে বাড়ির জন্য চিনির তৈরী ছাঁচ কিনেছি। সবসময়তো এগুলো পাওয়া যায় না।
উসমান আলী, জয়শ্রী পাল নামের আরও দুই দর্শনার্থীও একই কথা জানান।
দোকানদারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মেলায় বিশাল জনসমাগম ঘিরে তারা কয়েকদিনের জন্য এসব দোকান বসিয়েছে। এতে যেমন তাদের কিছুটা লাভ হবে, দূরদূরান্ত থেকে যাওয়া মানুষজন ও উপকৃত হবে। আর বিক্রি বেশি হওয়ায় তারা দামও তুলনামূলক কম রাখছেন বলে জানান।
কী ধরনের মিষ্টির ব্যাপারে মানুষজের আগ্রহ বেশি জানতে চাইলে তারা বলেন, এখানে অনেক প্রকারের মিষ্টি পাওয়া যায়। তবে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় দানাদার, আর জিলাপি। এছাড়া অন্যান্য মিষ্টিও বিক্রি হয় বেশ ভালো।
দাম সম্পর্কে জানতে চাইলে আবুল কালাম নামের এক দোকানী বলেন, এবারে মেলায় গরম জিলাপি (ফুল ও দেশি) কেজি প্রতি ৮০ টাকা, ছানার জিলাপি ১০০ টাকা, দানাদার ১২০ টাকা, গুড়ের খুরমা ১২০ টাকা, খেজুর মিষ্টি ১০০ টাকা, চিনি মিষ্টি ১০০ টাকা, ছানার পোলাও ২০০ টাকা, রাজভোগ ২২০ টাকা, লেংচা ১৬০ টাকা, প্যারা সন্দেশ ৩২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
গত বছরের তুলনায় এবারে বিক্রি বেশ ভালো। তবে দোকানের পজিশনবাবদ খাজনা কিছুটা বেশি বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, মেলার এই ৩ দিনে দোকানের খাজনা দিতে হয় ২০ হাজার টাকা। আজ শুক্রবার তো শেষ দিন। গত দুদিনে যে বিক্রি হয়েছে তার চেয়ে আজকে বেশি বিক্রি হবে বলে আশা করছি।
কাউসার নামের আরেক দোকানী জানান, বাচ্চারা কদমা, খাগড়াই, খই, ছাঁচ খুবই পছন্দ করে। বেচাবিক্রিও ভালো। কেজি প্রতি কদমা, খাগড়াই, খই, ছাঁচ ১০০ টাকায় বিক্রি করছেন বলে জানান তিনি।
সবুর নামের এক জিলাপী কারিগর জানান, লালন মেলার এ তিনদিন সকাল থেকে শুরু করে গভীর রাত পর্যন্ত জিলাপী ভাজতে হয়। প্রচুর চাহিদা। জিলাপি ভেজে কুলাতে পারি না।
আজ গভীর রাত পর্যন্ত কালী নদীর পাড়ে চলবে লালন উৎসব। আর তাকে ঘিরে বাতি জ্বালিয়ে জেগে থাকবে এই মেলাপ্রাঙ্গণ।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৭ ঘণ্টা, ১৮ অক্টোবর, ২০১৯
জেডএইচজেড/এইচজে