মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ‘আই’ ব্লকে নির্মাণাধীন জেসিএক্স বিজনেস টাওয়ারের সামনে ফিতা কেটে জাপান স্ট্রিটের উদ্বোধন করেন ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত নাওকি ইতো এবং বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান।
এসময় দেশের শীর্ষ শিল্পোদ্যোক্তা আহমেদ আকবর সোবহান বলেন, গত ৫০ বছর ধরে জাপান আমাদের ভালো বন্ধু।
তিনি বলেন, জাইকা আমাদের দেশের অনেক অবকোঠামো উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে জাপান অর্থনৈতিক অঞ্চল হচ্ছে। আমি নিশ্চিত জাপান আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অংশীদার হিসেবে সবসময় পাশে থাকবে।
বসুন্ধরা চেয়ারম্যান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৪ লাখ সরকারি কর্মকর্তার জন্য পাঁচ শতাংশ সুদে ২০ বছর মেয়াদী আবাসন ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থা করায় দেশের আবাসন খাত আনন্দিত। এতে আবাসন খাতে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ হবে। কেননা, বর্তমান সরকার ব্যবসাবান্ধব।
আহমেদ আকবর সোবহান বলেন, বেসরকারি খাতের আবাসন কোম্পানিগুলোর মধ্যে বসুন্ধরা সবচেয়ে বড়, এতে কোনো সন্দেহ নেই। দেশের একমাত্র বৃহৎ আবাসন প্রকল্প বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা। যেখানে আপনি কোনো বিশৃঙ্খলা ও অনিয়ম খুঁজে পাবেন না। নিরাপত্তার ব্যাপারে আমরা খুব সচেতন।
এসময় বাংলাদেশের আবাসান খাতে জাইকাকে বিনিয়োগ করতে জাপানের রাষ্ট্রদূতের কাছে অনুরোধ জানান দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, আমাদের দেশের মানুষ দুই থেকে তিন শতাংশ সুদে আবাসন ঋণ পাবে। এতে আমাদের দেশের টেকসই প্রবৃদ্ধি হবে।
তিনি বলেন, আমি চাই জাপান বাংলাদেশে আরও বেশি বিনিয়োগ করুক। বিশেষ করে আবাসন খাতে।
বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় বিনিয়োগের জন্য জাপানের রাষ্ট্রদূতের প্রতি আহবান জানিয়ে আহমেদ আকবর সোবহান বলেন, আমি দীর্ঘমেয়াদে জমির ব্যবস্থা করে দেব। আমাদের সরকার এ বিষয়ে খুবই সহযোগিতা করছে। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা ছাড়াও বুড়িগঙ্গা নদীর পাশে ও পূর্বাচলে খুবই ভালো জমি আছে। এছাড়া আমি নিশ্চিত মধ্যম আয়ের মানুষেল আবাসনের অনেক চাহিদা রয়েছে। প্রতি বছর আমরা ৫০০ ফ্ল্যাট তৈরি ও বিক্রি করতে পারব।
তিনি এও বলেন, জাপানের রাষ্ট্রদূত এখানে আসায় আমি সম্মানিত। আমি প্রত্যেকদিন জাপান স্ট্রিট পরিদর্শনের জন্য রাষ্ট্রদূতকে আহবান জানাচ্ছি।
জাপানি রাষ্ট্রদূত নাওকি ইতো বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও জাতি গঠনে জাপান অংশীদার হলেও প্রথমবারের মতো জাপানের নামে একটি রাস্তার নামকরণ করা হলো। আমি খুবই আনন্দিত। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের আবাসন খাতসহ নতুন নতুন খাতে জাপানের বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে। এটা মুজিববর্ষ। আগামী বছর স্বাধীনতার ৫০ বছর উদযাপন করবে বাংলাদেশ। জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সর্ম্পকেরও ৫০ বছর উদযাপন করব ২০২২ সালে। বর্তমানে জাপানের ৩০৯টি কোম্পানি বাংলাদেশে বিনিয়োগ করেছে। এরমধ্যে জাইকা মেগা প্রকল্প এমআরটি, আড়াইহাজার অর্থনৈতিক অঞ্চল, মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ বেশ কয়েকটি মানসম্পন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।
এসময় জেমস গ্রুপের চেয়ারম্যান ও জেসিএক্স গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইকবাল হোসেন জুয়েল বলেন, আবাসন শিল্পে বিনিয়োগ আনা ও বিনিয়োগকারীদের টাকা ফেরত পাঠানোর ক্ষেত্রে অনেক জটিলতা এবং দীর্ঘসূত্রিতা রয়েছে। এ সমস্যার সমাধান খুবই জরুরি। তা না হলে দেশে বিদেশি বিনিয়োগ আনা খুবই কঠিন হবে। আমি আবাসন ও আর্থিক খাতে বিনিয়োগ আনতে সক্ষম হয়েছি। এক্ষেত্রে বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান আমাকে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা ও সহযোগিতা করেছেন। এরই ধারবাহিকতায় বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ব্যাপক বিনিয়োগ করতে পেরেছি।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গর্ভনর ড. মুরশিদ কুলি খান, ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সাবেক সভাপতি আব্দুল আউয়াল মিন্টু, মাতলুব আহমাদ, লীজান গ্রুপের চেয়ারম্যান তানিয়া হক, ক্রিড গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসানোবা কামিয়ামা, জেসিএক্স বিজেনেস টাওয়ারের প্রধান আর্কিটেক হিসায়া সুগিয়ামা প্রমুখ।
বাংলাদেশ ও জাপানের যৌথ বিনিয়োগে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় বেশকিছু আবাসন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে জেসিএক্স ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২০
এসই/টিএ