সরকারের অগ্রাধিকারভিত্তিক প্রকল্প রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র (এনপিপি) বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রধান কাজ। এই বিদ্যুৎকেন্দ্র যথাসময়ে উৎপাদনে আনার লক্ষ্য স্থির করা হয়েছে।
অন্যদিকে করোনা প্রতিরোধে হ্যান্ড স্যানিটাইজারসহ স্বাস্থ্য সুরক্ষার নানা সরঞ্জাম বানাতে দিন-রাত কাজ করছে বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর), যার সুফল পাচ্ছে বিভিন্ন হাসাপাতল। সুরক্ষা সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হয়েছে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর কাছেও। মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমানের বিশেষ তাগিদ রয়েছে এসব কার্যক্রমে।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রনালয়ের একাধিক সূত্র জানায়, মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমানের নিবিড় তত্ত্বাবধানেই চলছে সার্বিক কর্মযজ্ঞ। কখনো মোবাইল ফোনে, কখনো ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভার্চ্যুয়ালি আবার প্রয়োজনে স্বশরীরে নিয়মিত সব প্রকল্পের খোঁজ-খবর রাখছেন এবং প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন তিনি। করোনায় ছুটিকালীন ও এরপর স্বাস্থ্যবিধি মেনে মন্ত্রণালয় ও অধীনস্থ বিভিন্ন দপ্তর ও বিভাগগুলোর জরুরি কার্যক্রম চলছে।
এই মন্ত্রণালয়ের প্রধান প্রকল্প রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি রয়েছে এই সময়ে। গত ১৪ মে সাধারণ ছুটির মধ্যেও রাজধানীর শাহবাগে ‘রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের কার্যালয়ে’ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন প্রকল্পের অগ্রগতি পর্যলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সভাপতিত্ব করেন মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান।
করোনা পরিস্থিতির আগে মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান প্রতি মাসে তিন-চার বারও রূপপুর প্রকল্পে গেছেন এবং কার্যক্রম তদারকি করেছেন। মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য কাজের পাশাপাশি প্রতিনিয়তই তিনি রূপপুর প্রকল্পের কাজের সরাসরি তদারকি করেন এবং প্রয়োজনীয় দিক নির্দশনা দেন।
এদিকে করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে বিভিন্ন হাসপাতালের চিকিৎসক ও রোগীদের সুরক্ষায় বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের (বিসিএসআইআর) তৈরি হ্যান্ড রাব, হ্যান্ড স্যানিটাইজার এবং ডিজইনফ্যাক্টটেন্ট বিতরণ কর্মসূচি অব্যহত রেখেছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। এ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ প্রতিষ্ঠানটিকে মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান বিশেষভাবে নির্দেশনা ও তত্ত্বাবধানের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটির স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী তৈরি কাজ অব্যাহত রেখেছেন।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, করোনা পরিস্থিতির শুরু থেকে এখন পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ), ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে এসব সুরক্ষাসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। এসব হাসপাতালসহ পুলিশ এবং সেনাবাহিনীতে বিসিএসআইআর নির্মিত হ্যান্ড স্যানিটাইজার, জীবাণুনাশক, ভিটিএম এবং বি ক্লিন জার্মিসাইডাল ডিভাইস সরবরাহ করা হচ্ছে। জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশন শুরুর আগে এমপিদের জন্য এই সুরক্ষা সামগ্রী সংসদ সচিবালয়কে সরবরাহ করা হয়। দেশের অন্যান্য জেলা-উপজেলার হাসপাতালেও পর্যায়ক্রমে এসব সামগ্রী বিনামূল্যে বিতরণ করা হচ্ছে।
এই সময়ে দেশের বিজ্ঞানীরা করোনার জিনোম সিকোয়েন্স আবিষ্কার করেছেন। মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমানের নির্দেশনায় বিসিএসআইআরের জিনোমিক রিসার্চ গবেষণাগারে তিনটি কোভিড-১৯ কেসের সম্পূর্ণ সিকোয়েন্সিং সফলতার সঙ্গে সম্পন্ন করা হয়েছে। প্রাপ্ত তথ্যাদি গ্লোবাল ডাটা ব্যাংকে উপস্থাপন করা হয়েছে।
ব্যক্তিগতভাবেও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস অত্যন্ত স্বচ্ছ, নীতিবান ও সৎ মানুষ হিসেবে জীবন যাপন করেন। বর্তমান মেয়াদসহ মোট টানা তিন মেয়াদে তিনি এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। প্রথম ও দ্বিতীয় দফায় কয়েক মাস তিনি প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। পরে তাকে পূর্ণমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়। এই দীর্ঘ সাড়ে ১২ বছরে কর্তব্য পালনে তার বিরুদ্ধে ব্যর্থতার কোনো অভিযোগ নেই। দুর্নীতির ব্যপারেও তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জিরো ট্লারেন্স নীতি শতভাগ অনুসরণ করে চলছেন। তার বিরুদ্ধে আজ পর্যন্ত কোনো অর্থনৈতিক অনিয়মের অভিযোগও ওঠেনি।
এ সব বিষয়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান বাংলানিউজকে বলেন, মন্ত্রণালয়কে দেওয়া সরকারের যে দায়িত্ব তা আমরা যথাযথভাবে ও যথা সময়ে সম্পন্ন করার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। প্রত্যেকে যাতে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন সেভাবেই আমি নির্দেশ দিয়ে থাকি এবং সেভাবেই মন্ত্রণালয়ের কাজ চলছে। দুর্নীতি অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রধানন্ত্রী শেখ হাসিনার জিরো টলারেন্স নীতিই আমার মূল নীতি।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩০ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০২০
এসকে/নিউজ ডেস্ক