বৃহস্পতিবার (২৯ জুন) পৌনে ১১টায় আদালতে আসেন খালেদা জিয়া। এরপর আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়।
বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও শীর্ষস্থানীয় আইনজীবীরা আদালতে উপস্থিত আছেন।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় ৩৪২ ধারায় খালেদা জিয়ার আত্মপক্ষ সমর্থনের দিন ধার্য ছিল গত বৃহস্পতিবার (২২ জুন)। কিন্তু মামলাটিতে হাইকোর্টের দেওয়া পুনরায় তদন্তের আবেদন খারিজ করার আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল বিচারাধীন ও আগামী ০৩ জুলাই শুনানির দিন থাকার কথা উল্লেখ করে তা পেছাতে সময়ের আবেদন জানান তিনি। এ আবেদন মঞ্জুর করে আত্মপক্ষ সমর্থন এক সপ্তাহ পিছিয়ে ২৯ জুন ধার্য করেন আদালত।
এরপর চ্যারিটেল ট্রাস্ট মামলায় তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক হারুন-অর রশিদকে খালেদার পক্ষে ফের আংশিক জেরা করেন তার আইনজীবী আমিনুল ইসলাম। জেরায় কয়েকটি প্রশ্ন করার পর জেরাকারী মূল আইনজীবী আব্দুর রেজ্জাক খান চিকুনগুনিয়া জ্বরে আক্রান্ত ও হাসপাতালে ভর্তি জানিয়ে সময়ের আবেদন জানালে আদালত তা মঞ্জুর করে ২৯ জুন অসমাপ্ত জেরার দিন ধার্য করেন।
চ্যারিটেবলে গত বছরের ০১ ডিসেম্বর আত্মপক্ষ সমর্থনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করতে শুরু করেন খালেদা। কিন্তু ওইদিন বক্তব্য শেষ না হওয়ায় সময় চান তিনি। এরপর কয়েক দফায় আদালতে না গিয়ে সময় বাড়িয়ে নেন। এরই মধ্যে গত ০৮ জুন ৩২তম সাক্ষী ও তদন্তকারী কর্মকর্তা হারুন-অর রশিদকে রি-কলের (ফের জেরা) আবেদন জানান খালেদা। আদালত আবেদন মঞ্জুর করলে ওইদিন থেকেই চলছে তাকে আসামিপক্ষের পুনঃজেরা।
অন্যদিকে উচ্চ আদালতে নানা আবেদন ও অসুস্থতার কথা বলে অরফানেজে আত্মপক্ষ সমর্থনের দিন বেশ কয়েকবার পিছিয়ে নিয়েছেন খালেদা।
চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় মোট আসামি চারজন। খালেদা ছাড়া অভিযুক্ত অপর তিন আসামি হলেন খালেদার তৎকালীন রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছ চৌধুরীর তৎকালীন একান্ত সচিব বর্তমানে বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।
এ মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন মোট ৩২ জন সাক্ষী। জামিনে থাকা অন্য দুই আসামি জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও মনিরুল ইসলাম খান আত্মপক্ষ সমর্থন করে আদালতে লিখিত বক্তব্য জমা দিয়েছেন। হারিছ চৌধুরী মামলার শুরু থেকেই পলাতক।
অন্যদিকে অরফানেজ মামলায় খালেদা জিয়াসহ আসামি মোট ছয়জন। অন্য পাঁচ আসামি হলেন- বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ও খালেদার বড় ছেলে তারেক রহমান, মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।
আসামিদের মধ্যে ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান মামলার শুরু থেকেই পলাতক। বিদেশে থাকা তারেক রহমানকেও পলাতক দেখিয়ে মামলার বিচারিক কার্যক্রম চলছে। বাকিরা জামিনে রয়েছেন।
এ মামলায়ও সাক্ষ্য দিয়েছেন ৩২ জন সাক্ষী। জামিনে থাকা অন্য দুই আসামি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল ও শরফুদ্দিন আহমেদ আত্মপক্ষ সমর্থন করে আদালতে লিখিত বক্তব্য জমা দিয়েছেন।
২০১০ সালের ০৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা দায়ের করা হয়। জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগ এনে এ মামলা দায়ের করা হয়।
অন্যদিকে ২০০৮ সালের ০৩ জুলাই রমনা থানায় জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা দায়ের করে দুদক। এতিমদের সহায়তা করার উদ্দেশে একটি বিদেশি ব্যাংক থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ এনে এ মামলা দায়ের করা হয়।
আদালতে খালেদা
বাংলাদেশ সময়: ১২১৬ ঘণ্টা, জুন ২৯, ২০১৭
এমআই/আইএ