ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

মালয়েশিয়া

মালয়েশিয়ার মাটিতে বাংলাদেশির হাত ধরে পুঁই-লালশাক-শিম

আসিফ আজিজ, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৭, ২০১৭
মালয়েশিয়ার মাটিতে বাংলাদেশির হাত ধরে পুঁই-লালশাক-শিম মালাক্কার একটি সবজি ক্ষেতে ডাঁটাশাক ও লালশাকের প্লট

মালাক্কা, মালয়েশিয়া: মালয়ীরা মাছ-মাংসের চেয়ে বেশি পছন্দ করে শাক-সবজি। সরিষা শাক বেজায় পছন্দ। কলমি, ডাঁটাশাকসহ স্থানীয় কয়েক প্রকার শাক পাওয়া যায় এখানে। এছাড়া লাউ, ঢেঁড়শ, ঝিঙা, বেগুন, বরবটি তো আছেই। কিন্তু কৃষিকাজে বাংলদেশিদের বিচরণ বাড়ায় তালিকায় যুক্ত হয়েছে আরও তিন জনপ্রিয় সবজি শিম, লালশাক ও পুঁইশাক।

একসময় ক্যামেরুন হাইল্যান্ডে চীনাদের দখলে থাকা কৃষিকাজ এখন বাংলাদেশিদের দখলে। কৃষিক্ষেত্রে বাংলাদেশিরা তাদের দক্ষতায় একের পর এক দেখিয়ে চলেছে তাদের সাফল্য।

নিজে অথবা চাইনিজ,মালয়ীদের মাধ্যমে লিজ নিয়ে দেশটির শীতপ্রধান উঁচু পাহাড়ি অঞ্চল ক্যামেরুন হাইল্যান্ডে কৃষিকাজে পাকাপোক্ত অবস্থান বাংলাদেশিদের। সেখানকার কৃষকরা বাংলাদেশ থেকে শাক-সবজির বীজ এনে ফলাচ্ছেন ফসল।

এমনই তিনটি সবজি শিম, লালশাক ও পুঁইশাক। মাটি ও আবহাওয়া গুণে একেবারে বাংলাদেশের মতো না হলেও মালয়েশিয়ার সবজিতে যুক্ত হয়েছে নতুন তিন পদ।
বাজারে বিক্রি হচ্ছে পুঁইশাক
এসব তথ্য জানা যায় মালয়েশিয়ায় সফল বাংলাদেশি সবজি চাষি আব্দুল হালিম, আব্দুল গফুর, মো. সেলিমের কাছ থেকে।

তারা বলেন, প্রথমে ক্যামেরুন হাইল্যান্ডে শিম, লালশাক ও পুঁইশাক চাষে সফলতা দেখে মালাক্কা, জোহর বারুসহ বিভিন্ন অঞ্চলে এখন চাষ হচ্ছে। চাহিদাও বাড়ছে। প্রথমে শুধু বাঙালিদের মধ্যে এর জনপ্রিয়তা থাকলেও এখন চীনা, মালয়ীরাও পছন্দ করে। এজন্য চাষ বাড়ছে।

তারা বলেন, শিম এখানে হলেও মাটির কারণে একটু শক্ত হয়, কিন্তু ওজনে বেশি পাওয়া যায়। খেতে তাই বলে খারাপ লাগে না। এখানকার লোক সবজি পছন্দ করে বলে জনপ্রিয়তা পেতে সময় লাগেনি।
বাজারে বিক্রি হচ্ছে শিম
কেমন দাম পাওয়া যায় জানতে চাইলে মালাক্কার গফুর বলেন, এই মুহূর্তে আমার ক্ষেতে তিনটির কোনোটি নেই। বোনা হয়েছে। কিছু লালশাক থাকতে পারে। দাম এখন লালশাক পাইকারি ২ রিঙ্গিত, খুচরা ৩ রিঙ্গিত, পুঁইও প্রায় একই দাম। শিমের দামটা বেশি ৬-৭ রিঙ্গিত (১ রিঙ্গিত=২০ টাকা)।

বাংলাদেশ থেকে আনা বীজ সব সময় ভালো ফলন দেয় না কিংবা বীজ ফোটে না বলে জানান তিনি। এ ক্ষেত্রে তিনি বাংলাদেশিদের অসততাকে দায়ী করেন। বলেন, ভালো বীজ বলে দিলেও মোটেই ফোটেনি এমনও হয়েছে।

যারা নতুন করে বীজ আনতে চান তাদের দেখেশুনে আনার পরামর্শ দেন গফুর।
নিজেদের সবজি মাঠে চাষি গফুর
মালক্কার পাইকারি বাজার ও কুয়ালালামপুরের খুচরা বাজারে গিয়ে লালশাক না পেলেও ‍পুঁইশাক আর লম্বা জাতের শিম মিললো। দাম ৫ থেকে ৭ টাকার মধ্যে।

সবচেয়ে বড় কথা ভিন্ন একটি দেশের শাক-সবজিতে নতুন তিন প্রজাতি যোগ করার পরিকল্পনা এবং তাতে সফলতা। এসব সফলতাই প্রবাসে বাংলাদেশিদের এগিয়ে যাওয়ার শক্তি। প্রবাসে ব্যবসা-বাণিজ্য করে প্রতিষ্ঠিত হলে দেশ পায় রেমিটেন্স। নিজেরা সুনাম ধরে রেখে এমন সাফল্য ধরে রাখাই বড় চ্যালেঞ্জ মনে করেন সফল চাষিরা।

আসিফ আজিজ।   আসিফ আজিজ, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর
 
** মালয়েশিয়ার যতো বাহারি ফল

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৭, ২০১৭
এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।