শনিবার (২৪ আগস্ট) বাংলানিউজকে দেওয়া এক একান্ত সাক্ষাৎকারে একথা বলেন রাবার বোর্ডের ত্রিপুরা রাজ্যের আঞ্চলিক অধিকর্তা ডা. কে এন রাঘবন।
রাজ্যে রাবার বাগানের সম্ভাবনা নিয়ে তিনি বলেন, মূলত রাবার বাগানের গড় আয়ু ৩০ বছর।
‘রাবার বোর্ডের দ্বিতীয় লক্ষ্য হলো ত্রিপুরা রাজ্যে হেক্টর প্রতি রাবারের উৎপাদন বাড়ানো। যেখানে ভারতে রাবার উৎপাদনের জাতীয় গড় হলো ১৫০০ কেজি প্রতি হেক্টরে, সেখানে বর্তমানে ত্রিপুরা রাজ্যে হেক্টর প্রতি গড় উৎপাদন ১১০০ কেজি। এজন্য উৎপাদন বাড়াতে যেসব বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন সে বিষয়গুলোতে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। উৎপাদনের ক্ষেত্রে ট্যাপিং এবং রাবার গাছের ছালের যে অংশ কেটে তরল রাবার বের করা হয় তার যত্ন নেওয়ার বিষয়। এ দু’টি ক্ষেত্রে রাবার বোর্ড খুব নজর দিচ্ছে। ’
তৃতীয় লক্ষ্য সম্পর্কে বলতে গিয়ে এ আঞ্চলিক অধিকর্তা বলেন, বিষয় হচ্ছে তরল রাবার থেকে ত্রিপুরা রাজ্যে যে রাবার শিট তৈরি হয় এগুলোর গুণগত মান তুলনামূলক কম হয়। তাই জাতীয় গুণগত মান অনুসারে রাবার শিট তৈরির দিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এজন্য রাজ্যের বিভিন্ন জায়গার চাষিদের রাবার শিট শুকানোর জন্য গুণগত মান এবং বিজ্ঞানসম্মত রাবার শিট তৈরির কারখানা এবং স্মোক হাউস তৈরির বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এজন্য তিন, চার জন রাবার চাষিকে এক সঙ্গে যৌথভাবে রাবার শিট তৈরির কারখানা এবং স্মোক হাউস তৈরির জন্য ঋণ দেওয়া হচ্ছে।
‘রাবার চাষিদের শিট বিক্রির জন্য সহায়তা করা হচ্ছে যেন চাষি তার উৎপাদিত রাবারের সর্বোচ্চ মূল্য পায়। এর পাশাপাশি ত্রিপুরা রাজ্যে যেন আরও বেশি পরিমাণ রাবার ভিত্তিক সামগ্রী তৈরির কারখানা স্থাপিত হয় সেজন্য নানা পরিকল্পনা নিচ্ছে বোর্ড। ইতোমধ্যে রাজ্যে একটি ইউনিট চালু হয়েছে। আগামী দিনে আরও কিছু ইউনিট চালু হবে। এর জন্য আলোচনা চলছে। বর্তমানে দেশের মোট উৎপাদিত প্রাকৃতিক রাবারের ১২ শতাংশ ত্রিপুরা রাজ্যে উৎপাদিত হয়ে। আগামী ১০ বছরে উৎপাদন মোট উৎপাদনের ২০ শতাংশে নিয়ে যাওয়া হবে। রাজ্যে রাবার চাষের অনুকূল পরিবেশ রয়েছে, নতুন জমি যুক্ত হচ্ছে এবং আধুনিক পদ্ধতি অনুসরণ করা হচ্ছে। ’
তিনি আরও বলেন, চাষিরা যেন গুণগত মানসম্পন্ন রাবার উৎপাদন করতে পারে তার জন্য রাজ্যে একাধিক সোসাইটি গঠন করা হয়েছে। যারা নজরদারি রাখবে চাষিরা যেন ভালো মানের রাবার উৎপাদন করতে পারে। প্রয়োজনে এ সোসাইটি চাষিদের পরামর্শ দেবে। শুধু ত্রিপুরা নয় সমগ্র উত্তরপূর্ব ভারতে রাবার চাষের দিকে অধিক গুরুত্ব দিচ্ছে বোর্ড। এর কারণ দেশের এ অংশে প্রচুর পরিমাণে জমি এখনো খালি পড়ে আছে। কিন্তু কেরালাসহ দক্ষিণ ভারতে পর্যাপ্ত জমি নেই। তাছাড়া উত্তরপূর্ব ভারতের আবহাওয়ার অনুকূলে বিশেষ প্রজাতির (আরআরআইই ৪২৯) রাবার গাছ উদ্ভাবন করেছে বোর্ড। এর চাষ ইতোমধ্যে উত্তরপূর্ব ভারতে শুরু হয়েছে। এর পাশাপাশি একই বাগানে মিশ্রচাষের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
ত্রিপুরা রাজ্য আনারসের জন্য বিখ্যাত তাই ত্রিপুরার রাবার বাগানে আনারস চাষেরও ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৬ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০১৯
এসসিএন/এইচএডি