ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

ধানক্ষেতে আলোর ফাঁদ!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট     | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৭ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০২৩
ধানক্ষেতে আলোর ফাঁদ!

সিরাজগঞ্জ: উপকারি ও ক্ষতিকর পোকা শনাক্ত করতে ধানক্ষেতে আলোর ফাঁদ স্থাপন করছে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলা কৃষি বিভাগ। এতে ফসলের ক্ষতি অনেকটাই কমে এসে উৎপাদন বাড়বে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।

 

উল্লাপাড়া কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, প্রতি বছর ইরি-বোরো মৌসুমে ধানক্ষেতে বিভিন্ন ধরনের পোকার উপদ্রব দেখা দেয়। এসব পোকার মধ্যে উপকারী এবং ক্ষতিকারক উভয় থাকে। কৃষকরা না বুঝে এই পোকা দমনে জমিতে নিজেদের ইচ্ছামতো কীটনাশক ও রাসায়নিক সার প্রয়োগ করে। অনেক উপকারী পোকা মারা যায়। ফলে ধানের ফলনে প্রভাব পড়ে। সেই সঙ্গে বিনা কারণে কীটনাশক ব্যয় করে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে হয় কৃষকদের। সব মিলিয়ে কৃষকরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ক্ষতির হাত থেকে রক্ষায় চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে আগেভাগেই উদ্যোগ নেয় কৃষি বিভাগ।

উপজেলার বিভিন্ন মাঠে ক্ষতিকারক পোকা শনাক্তকরণ ও উপস্থিতি পরীক্ষার জন্য ৪৩০টি আলোর ফাঁদ স্থাপনের কাজ চলছে। ইতোমধ্যে অর্ধ শতাধিক ফাঁদ স্থাপন করা
হয়েছে। অন্যগুলো স্থাপনের কাজও চলছে। প্রতি রাতেই উপ-সহকারী কৃষি কর্মকতারা মাঠে নেমে এসব ফাঁদ স্থাপন করছেন।  

ধানক্ষেতের ২০০ মিটার দূরে ধান গাছ থেকেও ২/৩ ফিট উঁচুতে আলোর ফাঁদ স্থাপন করা হচ্ছে। প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে লাইট, ব্যাটারি দিয়ে তৈরি বিশেষ ধরনের ফাঁদের নিচে বালতি অথবা গামলা স্থাপন করা হয়। গামলার ভেতরে রাখা হয় সাবান পানির মিশ্রন। রাতে ৪০/৪৫ মিনিট এই আলোর ফাঁদ জ্বালানো হয়। এতে আকৃষ্ট হয়ে মাঠের পোকা-মাকড় উড়ে এসে সেই ফাঁদে পড়ে মারা যাবে। কৃষি কর্মকতারা সপ্তাহে একদিন করে বিভিন্ন এলাকার মাঠে গিয়ে সেই ফাঁদে পড়া পোকা-মাকড় পরীক্ষা করে কৃষকদের জমিতে প্রয়োজনীয় কীটনাশক ও রাসায়নিক সার প্রয়োগের কথা জানাচ্ছেন। সেই অনুযায়ী কৃষকরা তা জমিতে প্রয়োগ করবেন। এতে পোকা-মাকড় দমনসহ ভালো ফলন মিলবে। একই সঙ্গে ক্ষতিকারক পোকার আক্রমণ থেকে ফসল রক্ষাসহ বাড়তি উৎপাদন যোগ হবে।

উল্লাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকতা সুবর্না ইয়াসমিন সুমি জানান, আমরা ইরি বোরো মৌসুমের শুরুতেই উপজেলার বিভিন্ন মাঠে আলোর ফাঁদ স্থাপন করা শুরু করেছি। নিজেদের অর্থায়নে উপজেলায় ৪৩০ টি আলোর ফাঁদ স্থাপন করছি। রুটিন করে প্রতি সপ্তাহের একদিন করে আমি নিজেসহ আমার মাঠ কর্মীরা বিভিন্ন মাঠে গিয়ে ফাঁদে পড়া পোকা-শনাক্ত করে কৃষকদের কীটনাশক ও রাসায়নিক সার ব্যবহারের প্রয়োজনীয় পরার্মশ দিচ্ছি। এতে ভালো ফলাফল মিলছে। কৃষকরা সঠিক সময়ে প্রয়োজনীয় কীটনাশক ও সার ব্যবহারে অর্থ সাশ্রয়সহ ভালো ফলন মিলবে। এ পদ্ধতির কারণে অন্য জমির ফসলও ক্ষতিকারক পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা করা যাবে। এতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় প্রযুক্তির ব্যবহার করে বাড়তি ফসল উৎপাদন করা যাবে। পোকা দমনে এমন পদ্ধতি পেয়ে কৃষকরাও দারুণ খুশি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০০ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০২৩
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।