ঢাকা, শনিবার, ৬ পৌষ ১৪৩১, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

কৃষি

নাচোল থেকে হাঁড়িভাঙ্গা আম গেল সুইডেনে

এ কে এস রোকন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৭ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০২৩
নাচোল থেকে হাঁড়িভাঙ্গা আম গেল সুইডেনে

চাঁপাইনবাবগঞ্জ: আমের রাজধানী চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে এবার এক মেট্রিক টন আম সুইডেনে গেছে।  

সোমবার (১২ জুন) বিকেলে আমগুলো নাচোল থেকে সড়কপথে ঢাকা বিমানবন্দরে নেওয়া হয়।

এছাড়া মঙ্গলবার আরও এক মেট্রিক টন আম রপ্তানি হবে একই দেশে।  

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আম রপ্তানিকারক মো. রফিকুল ইসলাম।  

এর আগে গত ২৫ মে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল থেকে প্রথম দফায় সাত মেট্রিক টন খিরসাপাত আম  লন্ডন ও সুইডেনে এবং মে মাসের প্রথম দিকে একই এলাকা থেকে সবজি রপ্তানি হয়েছে সুইডেনে।  

নাচোলের আমচাষি রফিকুল ইসলাম জানান, নাচোলের গোলাবাড়ি ইউনিয়নের তেনবোনা এলাকায় তার নিজের ও লিজ নেওয়া মোট ৮৪০ বিঘা জমিতে আমগাছ রোপণ করেন। তিনি মূলত হাইব্রিড জাতের বারি-৪, ব্যানানা, আম্রপালি, কাটিমন ও দেশি খিরসাপাত জাতের আম চাষ করেন।

গত বছর সীমিত পরিসরে আম রপ্তানি হলেও এ বছর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. পলাশ সরকারের সহযোগিতায় উত্তম কৃষি চর্চা পদ্ধতিতে আম চাষ করার মাধ্যমে রপ্তানির সুযোগ পেয়েছেন তিনি।  

আমের চাহিদা থাকায় এ বছর তার বাগানের প্রায় সব আম বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব হবে জানিয়ে তিনি বলেন, দেশের বাজারে আমের দাম কম হলেও প্রতিমণ আম সুইডেনে তিন হাজার ২০০ টাকা মণ দরে বিক্রি করতে পারছেন।  

মেসার্স এমবিবি অ্যাগ্রো লিমিটেডের স্বত্বাধিকারী মো. বদরুদ্দোজার বাড়ি নাচোলে। তবে তিনি সুইডেনে থাকার কারণে তার মাধ্যমে আমগুলো বিদেশে রপ্তানি করা হচ্ছে।

নাচোল উপজেলার মেসার্স এমবিবি অ্যাগ্রো নামক প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী মো. বদরুদ্দোজা বলেন, আমি ২০১২ সাল থেকে আম ও বিভিন্ন ধরনের সবজি সুইডেনে রপ্তানি করি। এবারও করছি। এ বছর এখন পর্যন্ত চার মেট্রিক টন আম সুইডেনে ও তিন মেট্রিক টন আম লন্ডনে পাঠিয়েছি। সোমবার হাঁড়িভাঙ্গা আম বিদেশে রপ্তানি করা হলো। চাহিদা বাড়লে এলাকার অন্যান্য কৃষক ভাইদের কাছ থেকে আম কিনে সেগুলো বিদেশে রপ্তানি করব।  

তিনি আরও বলেন, মূলত আমি সুইডেনেই থাকি। সুইডেনের স্টকহোমের বিভিন্ন ব্যবসায়ী আমাকে আমের অর্ডার দিয়ে রাখেন। পরে আমি নাচোল থেকে আমগুলো প্যাকিং করে পাঠিয়ে দিই। সুইডেন বিমানবন্দর থেকেই আমগুলো তাদের কাছে পৌঁছে যায়।

এবার ১০০ মেট্রিক টনের বেশি আম বিদেশে রপ্তানি করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

এদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক পলাশ সরকার বলেন, বদরুদ্দোজার মাধ্যমে জেলা থেকে প্রথমবার এ মৌসুমে আম ও সবজি রপ্তানি হয়েছে। সোমবার দ্বিতীয় দফায় আম গেল সুইডেনে। তার আগ্রহ এবং জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রচেষ্টায় ‘উত্তম কৃষি চর্চা’ পদ্ধতির কারণে এ জেলার আমের চাহিদা বিদেশে বাড়ছে। যা জেলার অর্থনীতির উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।

আমের দাম নিয়ে হতাশ কৃষকদের উদ্দেশে তিনি বলেন,  উত্তম কৃষি চর্চার মাধ্যমে ভালোমানের আম রপ্তানি করা সম্ভব। যার প্রমাণ বদরুদ্দোজা। তাই রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদনে আমরা চাষিদের সব সময় বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। সেই সঙ্গে আমরা চেষ্টাও করছি। যেহেতু এ জেলার আম রপ্তানিযোগ্য ও সম্পূর্ণ কেমিক্যালমুক্ত, তাই আশা করছি, বিদেশে রপ্তানির পরিমাণ চলতি বছর আরও বাড়বে।

জেলায় এবার ৩৭ হাজার ৮৫৫ হেক্টর জমিতে আমের চাষ হয়েছে। আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে চার লাখ ২৫ হাজার মেট্রিক টন। আর গত বছর বিদেশে আম রপ্তানি হয়েছে ১৩২ দশমিক ৫৬৯ মেট্রিক টন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪২ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০২৩

এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।