বৈশাখের শুরুতে কয়েক দফায় বৃষ্টিপাত ও হালকা ঝড় হলেও এখন পর্যন্ত মুকুল ফুটে গুটি হওয়ার লিচুর কোনো ক্ষতি হয়নি। স্বস্তিতে থাকা লিচু চাষিরা তাই ব্যস্ত সময় পার করছেন লিচুর গুটি আর গাছের পরিচর্যায়।
আগামী এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে রসালো লিচু উঠবে বাজারে।
সুস্বাদু হওয়ায় দিনাজপুর জেলার লিচুর খ্যাতি ছড়িয়ে আছে দেশ-বিদেশে। বিভিন্ন প্রজাতির মধ্যে বেদানা, বোম্বাই, মাদ্রাজি, চায়না-থ্রি আর দেশি প্রজাতির লিচু অন্যতম।
দিনাজপুর অঞ্চলের চাহিদা মিটানোর পর দেশের বিভিন্ন স্থানেও পাঠানো হয় এসব লিচু। চলতি মৌসুমে উৎপাদিত লিচু বানিজ্যিকভাবে দেশের বাইরে পাঠানো হবে বলেও জানান লিচু ব্যবসায়ীরা।
দিনাজপুর সদর উপজেলার ঘুঘুডাঙ্গা এলাকার লিচু চাষি মো. মকছেদ আলী বাংলানিউজকে বলেন, পোকা-মাকড়ের আক্রমণ ও রোগ বালাই থেকে গাছ ও ফলকে মুক্ত রাখতে ব্যবহার করা হচ্ছে বালাইনাশক। ভালো ফলনের লক্ষে লিচু গাছ আগাছা মুক্ত করা হচ্ছে।
তিনি জানান, অনান্য মৌসুমে চৈত্র মাস জুড়ে তীব্র তাপের সঙ্গে খরা থাকে। আর তাপের কারণে গাছের মুকুল জ্বলে খসে পড়ে। খরার কারণে গাছের গোড়ায় সেচের পানি সরবরাহ করতে হয়। কিন্তু চলতি মৌসুমে খরা ততোটা তীব্র হয়ে ওঠেনি। সেই সঙ্গে কয়েক দফায় বৃষ্টিপাত হওয়ায় সেচের পানি সরবরাহ করতে হয়নি। যে হারে গুটি দেখা দিয়েছে তাতে প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবার ফলনে রেকর্ড হবে।
ঢাকা থেকে আসা মৌসুমী ফল ব্যবসায়ী মো. সামছুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, দিনাজপুরের লিচুর চাহিদা সারা বিশ্বে। এবার যে পরিমাণে গুটি দেখা দিয়েছে তাতে ফলন ভালো হওয়ার আশা করছি। চলতি মৌসুমের উৎপাদিত লিচু জেলা ও দেশের চাহিদা মিটিয়ে বাণিজ্যিকভাবে দেশের বাইরে পাঠানো হবে।
দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. গোলাম মোস্তফা বাংলানিউজকে বলেন, চলতি মৌসুমে ৪ হাজার ১৮০ হেক্টর জমিতে লিচু চাষের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বর্তমানে প্রতিটি লিচু গাছের ডালে ডালে থোকায় থোকায় লিচুর গুটি ঝুলছে। ঝুলন্ত এই লিচুর গুটি টিকিয়ে রাখতে পরিচর্যায় ব্যস্ত চাষিদের সার্বক্ষণিক সঠিক পরামর্শসহ বিভিন্ন সহযোগিতায় নিয়োজিত রয়েছে কৃষি অধিদপ্তরের মাঠকর্মীরা। অনান্য মৌসুমে প্রচণ্ড তাপ ও খরায় লিচু গাছে রসের ঘাটতি দেখা দেয়। যে কারণে মুকুল ও গুটি জ্বলে ধসে পডে। কিন্তু এবার বৃষ্টিপাত হওয়ায় ওই ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়া গেছে।
বাংলাদেশ সময় : ১১০২ ঘণ্টা, এপিল ১৮, ২০১৭
জেডএম/