চাষিরা জানান, প্রতি কেজি কাঁচা মরিচের বর্তমান পাইকারি বাজারদর ৭ থেকে ৯ টাকা। অথচ ক্ষেত থেকে মরিচ ওঠাতে প্রতি কেজিতে শ্রমিকের পারিশ্রমিক দিতে হয় ৪ টাকা থেকে ৫ টাকা।
মানিকগঞ্জের সাতটি উপজেলার মধ্যে মরিচের বেশি আবাদ হয় শিবালয়, ঘিওর ও হরিরামপুরে। এসব এলাকার চাষিরা শিবালয় উপজেলার বরংগাইল পাইকারি হাটে প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তাদের মরিচ নিয়ে এসে পাইকারি দরে বিক্রি করেন।
মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে এ বাজারে বেশ কয়েকজন মরিচ চাষি বলেন, প্রতি বিঘা জমিতে মরিচ চাষে তাদের খরচ হয় ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। ফলন ভালো হলে বিঘাপ্রতি ৭০ থেকে ৮০ মণ মরিচ পান। তবে অতিবৃষ্টি ও আগাম বর্ষা হলে ক্ষতিগ্রস্ত হন।
মহাদেবপুরের মরিচ চাষি মিজানুর রহমান জানান, এবার তিন বিঘা জমিতে মরিচের আবাদ করে বেশ ভালো ফলন পেয়েছেন তিনি। কিন্তু ছয় মণ মরিচ বিক্রি করতে পেরেছেন প্রতি কেজি ৮ টাকা দরে।
ঘিওরের রহমান মিয়া বলেন, এ বাজারদরে চাষিদের ক্ষেত থেকে মরিচ ওঠানোর উপায় নেই। কিন্তু না ওঠালে গাছে আর মরিচ ফলবে না এবং গাছগুলো মরে যাবে। তাই বাধ্য হয়েই ক্ষেত থেকে মরিচ ওঠাচ্ছেন তারা।
কিন্তু এ বাজারদর অব্যাহত থাকলে মরিচ চাষিরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আব্দুল মজিদ আড়তের ম্যানেজার আখতার হোসেন বাংলানিউজকে জানান, মানিকগঞ্জের মরিচের চাহিদা রয়েছে দেশজুড়ে। বরংগাইল হাটের ওই মরিচ ঢাকা, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, ঝিনাইদহ, খুলনা, গাজীপুর, পাবনা ও ময়মনসিংহসহ বিভিন্ন জেলায় বাজারজাত করা হয়। স্বল্প পরিমাণে বিদেশেও রফতানি করা হয়।
আড়তের মালিক জহিরুল ইসলাম জানান, প্রতি কেজি মরিচ ৮ টাকা থেকে ৯ টাকা দরে তিনি প্রায় ৫০ মণ মরিচ কিনেছেন। দেশের বিভিন্ন এলাকায় ওই মরিচ পাঠানো হবে।
বরংগাইল মরিচ হাট-বাজার সমিতির সভাপতি আব্দুল মজিদ বাংলানিউজকে জানান, বরংগাইল মরিচের হাটে ছোট বড় মিলে ৩০/৩৫টি আড়ৎ রয়েছে। প্রতিদিন ওই আড়তগুলো ৫০ থেকে ১০০ মণ পর্যন্ত মরিচ কেনে। ঘিওর, শিবালয় ও হরিরামপুর উপজেলার কয়েকটি গ্রামের চাষিরা এ মরিচ নিয়ে আসেন।
মানিকগঞ্জের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জ্ঞানেশ চন্দ্র রায় বাংলানিউজকে জানান, জেলার বিভিন্ন উপজেলায় চলতি বছর ৪ হাজার ৬৩৬ হেক্টর জমিতে কাঁচা মরিচের আবাদ হয়েছে। ওই জমি থেকে ৭ হাজার ৩২৫ মেট্রিক টন ফলনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।
এ বছর মানিকগঞ্জে কাঁচা মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ০৪১০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০১৭
এএসআর