এদিকে এ সুযোগে অতিমুনাফা লোভী মজুতদাররা চাল বাজার অস্থির করে তুলেছেন। তদারকি থাকলেও নিয়ন্ত্রণহীন চালের বাজার।
প্রশাসনের নজরদারি ও বাজার তদারকি থাকা স্বত্ত্বেও পাইকারি ও খুচরা বাজারে চালের মূল্য ক্রমাগত বাড়ছে। গত ক’দিনে বস্তা প্রতি বেড়েছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। খুচরা বাজারে যার প্রভাব পড়েছে দ্বিগুণ। চালের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় চাল কিনতে গিয়ে আরেকদফা হোঁচট খাচ্ছেন ফসলহারা মানুষ।
বিশেষ করে মফস্বল এলাকায় ৫০ কেজি মালা চাল আগে ১ হাজার ৬শ’ টাকায় বিক্রি হলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৪শ’ টাকায়। ২ হাজার ২শ’ টাকার মিনিকেট হয়েছে ২ হাজার ৮শ’ টাকা।
জেলা প্রশাসন থেকে এপ্রিলের শুরুতে চালের বাজার তদারকি শুরু করলেও অতি মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। অসাধু এসব ব্যবসায়ী অধিক লাভের আশায় সিন্ডিকেট করে বাড়িয়ে দিয়েছেন চালের দাম। সব ধরনের চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় নিম্ন আয়ের মানুষ পড়েছেন বিপাকে।
জেলা প্রশাসনের টিম বাজার তদারকিতে নামলেই চালের মূল্য কমে যায়, ফের তদারকি শেষ হলেই বেড়ে যায় দাম! তবে চালের বাজার মূল্য’র উর্ধ্বগতির বিষয়টি স্বীকার করতে চান না ব্যবসায়ীরা।
বুধবার নগরীর কালিঘাট চালের বাজারে ঘুরে দেখা গেছে, কয়েক জাতের চালের দাম খুচরা বাজারে বস্তাপ্রতি ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত বাড়িয়ে দিয়েছেন আড়ৎদাররা।
সিলেটে চালের পাইকারি বাজার কালিঘাটের মেসার্স পাল ট্রেডার্সের স্বত্ত্বাধিকারী তমাল পাল বাংলানিউজকে বলেন,‘সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, কলমাকান্দা, কিশোরগঞ্জ থেকে চাল আসছে না। উত্তরবঙ্গ থেকে প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম চাল আসছে।
কালিঘাটের আরেক ব্যবসায়ী মিনহাজ উদ্দিন বলেন, মূলত ধান-চাল আমদানি না হওয়াতে দাম বাড়ছে। দেশের বাইরে থেকে চাল আমদানির ওপর আরোপিত কর তুলে নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান এই ব্যবসায়ী। কর তুলে নিলে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত এবং অন্যান্য দেশ থেকে চাল আমদানি বাড়বে বলে মনে করেন তিনি।
আম্বরখানা এলাকার খুচরা চাল বিক্রেতা আলতাফ হোসেন বলেন, পাইকারি বাজারে প্রতিবস্তা চালের মূল্য প্রায় ৩০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। তাই বাধ্য হয়ে দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
ক্রেতারা জানান, বন্যার আগে যে চালের বস্তা ছিলো ১ হাজার ৬শ’ টাকা। এখন সেই চাল বস্তা ২ হাজার ৩৫০ বা তারও বেশি।
বুধবার (২৭ এপ্রিল) নগরীর চাল ব্যবসায়ীরা জানান- প্রায় দুই সপ্তাহ আগে প্রতিবস্তা ‘মালা’ ২ হাজার ১০০ থেকে ২ হাজার ১৫০ টাকা ছিল, বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৩০০ থেকে ২ হাজার ৩৫০ টাকা, মিনিকেটের দাম ছিলো ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ২৫০ টাকা, বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৪০০ থেকে ২ হাজার ৪৫০ টাকা, জিরা সিদ্ধের দাম ছিলো ২ হাজার ৪০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা, বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৬০০ থেকে ২ হাজার ৬৫০ টাকা দামে। নাজিরশাইলের দাম ছিলো ২ হাজার ১৫০ থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা, বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৩০০ থেকে ২ হাজার ৪০০ টাকা দামে।
চালের বাজার মনিটরিং প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক রাহাত আনোয়ার বলেন, এ মাসের শুরুর দিকে বৃষ্টি শুরু হওয়ার চালের দাম বৃদ্ধি নিয়ে অভিযোগ পাই। তখনই বাজার তদারকি শুরু করি। এখনও চারটি টিম তদারকি অব্যাহত রেখেছে। প্রতিটি উপজেলা পর্যায়েও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে তদারকি চলছে।
বাংলাদেশ সময়: ১০২৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০১৭
এনইউ/জেডএম