শনিবার (২৯ জুলাই) সকালে বাংলানিউজকে এমনটাই জানালেন কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার খলিসাকুন্ডি গ্রামের কচু চাষীরা।
খলিসাকুন্ডি এলাকার কৃষক রজব আলী চলতি বছরে ২ বিঘা জমিতে কচুর চাষ করেছেন।
তিনি জানান, বীজ, জমি সেচ, সার, লাগানোর লেবার, আগাছা পরিষ্কার করে বিঘাপ্রতি খরচ হয়েছে প্রায় ১৫ হাজার টাকা। এর পরে আরো খরচ তোলার সময়। একবিঘা জমিতে প্রায় ১০০ মন কচু হবে। যা মাঠ থেকে তুলে নিয়ে বাজারে বিক্রি করেতেই সব শেষ হয়ে যাচ্ছে। একজন লেবার দিনে জমি থেকে ২মণ কচু তোলে। সে খরচ নেয় ২৫০ টাকা, একমণ কচু পরিষ্কার করতে নেয় ৪০ টাকা, মাঠ থেকে বাজারে নিয়ে যেতে খরচ মণপ্রতি ২০টাকা, বাজারে আড়তদাররা নেয় মণপ্রতি ৪০ টাকা, সেই সাথে একমণ কচুতে ৩-৫ কেজি বেশি দিতে হয়। আর এক মণ কচুর দাম পাচ্ছি আমরা মাত্র ৬০০ টাকা। বেশি হলে ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা। এতে আমাদের থাকলো কি? যা বিক্রি তা এসব খরচেই শেষ হয়ে যাচ্ছে।
রজব আলী সখেদে বললেন, ভেবেছিলাম কচু বিক্রি করে এবার একটা গরু কিনবো। তবে কচুর যে দাম তাতে গরু তো দূরের কথা ছাগল কেনাও হবে না।
কৃষক আরব আলী জানান, কৃষক যেটা কিনতে যায় সেটারই দাম বেশি। আর বিক্রি করতে গেলে কম। আমরা তো লাভের আশায়ই চাষ করি। আমাদের তো লাভ দেখছি না। এবার কচুর যে বাজার দর তাতে তো পুরাই লোকসান। কচুর দাম ৯০০ থেকে ১০০০ টাকা মণ হলে আমাদের একটু লাভ হবে।
খলিসাকুন্ডি কাঁচা বাজারের ব্যবসায়ী বিশারত আলী বাংলানিউজকে জানান, বর্তমানে আমরা কৃষকের কাছ থেকে পাইকারি ৬০০-৭০০ টাকা মণ দরে কচু ক্রয় করছি। কেজিপ্রতি ৫০ পয়সা লাভে আমরা ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলের বাজারে এগুলো বিক্রি করছি।
তিনি আরো জানান, এখান থেকে প্রতিদিন প্রায় ৪-৫ ট্রাক কচুবোঝাই ট্রাক দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে দৌলতপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোসারফ হোসেন বাংলানিউজকে জানান, দৌলতপুর উপজেলায় সবজির চাষ তুলনামূলকভাবে বেশি। তবে কচুর চাষ কম। উপজেলার মধ্যে খলিসাকুন্ডিতে কচু একটু বেশি। তবে কি পরিমাণ কচু চাষ হয়েছে সে তথ্য আমার জানা নেই।
কুষ্টিয়া জেলা কৃষি বিপণন অধিপ্তরের বাজার কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, স্থানীয় খুচরা ও পাইকারি বাজারে কৃষকরা বেশি বিক্রি করেন। যার ফলে কৃষকরা ন্যায্য দাম পান না। তারা যদি আমাদের সাথে যোগাযোগ করেন তাহলে ন্যায্য দাম পেতে আমরা সার্বিক সহযোগিতা করবো। এতে কৃষকরা লাভবান হবেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৯১৬ ঘণ্টা, জুলাই ৩১, ২০১৭
আইএ