পুরুষের চেয়ে নারীদের পারিশ্রমিক কিছুটা সস্তা হওয়ায় চাষিরা নারী শ্রমিকদের দিয়েই কাজ করাতে বেশি আগ্রহী।
কৃষিকাজে শ্রমিক হিসেবে চা শ্রমিকদের পাশাপাশি অংশ নিচ্ছেন সাধারণ ঘরের হিন্দু-মুসলিম,মুণিপুরী নারীরাও।
সরেজমিন কমলগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ঘুরে দেখা যায়, নিম্নবিত্ত পরিবারের অধিকাংশ নারীই কৃষি কাজের সাথে জড়িত। পৌর সদর, আদমপুর, ইসলামপুর, রহিমপুর,মুন্সিবাজার,মাধবপুর ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকার নিম্নবিত্ত মনিপুরী,গারো, হিন্দু ও মুসলিম পরিবারের নারীরা মৌসুমি কৃষি শ্রমিকের কাজ করেন।
পৌর শহরের গোপাল নগর এলাকায় দেখা যায়, শব্দকর পরিবারের নিয়তি,রত্না, লক্ষী, সাবিত্রী, অবলা ও শুক্লা মিলে ধান রোপণ করছেন। তাদের বাড়ি পাশ্ববর্তী করিমপুর গ্রামে।
এছাড়াও এ এলাকায় জোৎসনা বেগম ও শেলী বেগমকে পুরুষের পাশাপাশি কৃষিক্ষেতে কাজ করতে দেখা যায়। তাদের বাড়ি করিমপুরের ধামাইলগাঁও।
গোপালনগরের মাঠে গিয়ে ছবি তুলতেই একজন নারী এগিয়ে এসে সাংবাদিক শুনে বলেন, লিখলে তাদের কি লাভ হবে। খেয়ে না খেয়ে অনেক কষ্টে দিনযাপন করেন।
নিয়তি শব্দকর বাংলানিউজকে বলেন, তাদের গ্রামের ১শ’৫০ জন থেকে ২শ’ জন নারী কৃষি শ্রমিকের কাজ করেন। বীজ বোনা, চারা উঠানো থেকে শুরু করে চারা রোপণ পর্যন্ত সব কাজগুলো তারাই করে থাকেন। সকাল ৮ টা থেকে শুরু করে দুপুর ১টা পর্যন্ত কাজ করলে ২শ’ টাকা করে পান তারা।
রত্না শব্দকর বাংলানিউজকে বলেন, তার স্বামী রিক্সা চালান। তিনি কৃষি শ্রমিকের কাজ করেন। মৌসুম শেষ হলে অন্য কাজ পেলে করেন নতুবা বসে থাকেন। তাদেরকে উন্নত প্রশিক্ষণ দিলে কৃষিক্ষেত্রে তারা আরও ভাল অবদান রাখতে পারবেন বলে জানালেন তিনি।
আব্দুল বাছিত নামক এক চাষি বাংলানিউজকে বলেন, একজন নারী শ্রমিক একদিনে একা ১৩ থেকে ১৫ শতাংশ জমিতে ধানের চারা রোপণ করতে পারেন। পুরুষকে কাজে নিলে মজুরির পাশাপাশি তাকে এক বেলা ভাত খাওয়াতে হয় অথচ মহিলাদের ভাত খাওয়াতে হয় না শুধু এক কাপ চা খাওয়ালেই হয়। এছাড়া পুরুষদের মজুরি ৩ থেকে সাড়ে ৩শ’ টাকা আর মেয়েদের ২শ’ টাকা।
কমলগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সামছুদ্দিন আহমদ বলেন, শুধু মণিপুরী ও চা শ্রমিকদের কয়েকজনকে কৃষি প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হয়েছে। তবে অন্যান্য নারীরাও যে কৃষি কাজে জড়িত তা তার জানা নেই। তবে কৃষিকাজে জড়িত নারী শ্রমিকদের বিষয়ে খোঁজ করে তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থার কথা জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ০২১৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০১৭
আরআই