তবে এক্ষেত্রে উপকূলের পতিত লবণাক্ত জমিকে চাষের আওতায় এনে কৃষককে পাটচাষে সম্পৃক্ত করা ও বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনে যাওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।
সূত্র জানায়, দেশের উপকূলীয় অঞ্চলের লবণাক্ত জেলাগুলো হল- সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ভোলা, বরগুনা, কক্সবাজার, নোয়াখালী, চট্রগ্রাম, পটুয়াখালী এবং পিরোজপুর পটুয়াখালীতে প্রায় দেড় লাখ হেক্টর জমি খরিপ-১ মৌসুমে লবণাক্ততার কারনে পতিত পড়ে থাকে।
এ বিষয়ে লবণাক্ত সহিষ্ণু পাটের জাত উদ্ভাবক ড. মাহমুদ আল হোসেন বলেন, বাংলাদেশ সরকারের কৃষি মন্ত্রণালয়ের পাট ও পাট জাতীয় ফসলের কৃষি প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও হস্তান্তর প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট কতৃক উদ্ভাবিত লবণাক্ত সহিষ্ণু দেশি পাট-৮ জাতের ১৪ডিএস/মিটার এবং ৯ডিএস/মিটার মাত্রার সহনশীল চারটি লাইন উদ্ভাবন করা হয়েছে। কৃষকের জমিতে মাঠ মূল্যায়নের মাধ্যমে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার পশ্চিম খাজুরায় ১৩.৪৫ডিএস/মিটার, মম্বি পাড়ায় ১১.৬ ডিএস/মিটার, মিশ্রি পাড়ায় ৮.৩০ ডিএস/মিটার এর সফলতা পাওয়া গেছে।
লবণাক্ত সহিষ্ণু পাটের জাত উদ্ভাবক ড. মাহমুদ আল হোসেন আরো বলেন, কৃষি নির্ভরশীল দেশ হলেও ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার কারণে প্রতিনিয়ত কমছে কৃষি জমি। আর তাই অর্থনীতির চাকা আরো গতিশীল করতে উপকূলীয় এলাকার সকল পতিত জমিকে চাষের আওতায় আনতে হবে। ধারাবাহিকতায় লবন সহিষ্ণু পাটজাত এ কার্যক্রমকে আরো গতিশীল করবে।
অপরদিকে উপকূলীয় এলাকার লবণাক্ত জমিতে পাট চাষের সম্ভাবনা নিয়ে আশাবাদী বলে জানিয়েছেন বিজেআরআই মহা পরিচালক ড. মনজুরুল আলম। তিনি বলেন, স্থায়ীভাবে কৃষকদের লবণাক্ততা সমস্যার সমাধান এবং তাদের পাট চাষে সম্পৃক্ত করা গেলে কৃষি অর্থনীতিতে আসবে গতিশীলতা, কৃষক হবে অর্থিকভাবে স্বাবলম্বী।
এদিকে স্থানীয় কৃষকদের মাঝে এ জাতের পাট চাষের আগ্রহ থাকলেও দীর্ঘদিন এ অঞ্চলে পাটের আবাদ না হওয়ায় এবং স্থানীয়ভাবে পাটের বাজার না থাকায় উৎপাদিত পাট বিক্রয় নিয়ে শঙ্কাও রয়েছে।
কুয়াকাটার মিশ্রীপাড়ার কৃষক মাসুম বিল্লাহ বলেন, বর্ষাকালে আমন চাষের জমি পতিত পড়ে থাকে আর শুকনো মৌসুমে লবণের পরিমান বেড়ে যায়। সেচের সমস্যা হলেও পাট গবেষনার কর্মকর্তাদের কথায় তিন বছর ধরে পাট চাষ করে বেশ ভাল ফলন পাওয়া গেছে। তবে স্থানীয়ভাবে পাটের বাজার না থাকায় বিক্রি নিয়ে সমস্যা রয়েছে।
বাংলাদেশ সময় : ১২৫৮ ঘন্টা, আগষ্ট ১৮, ২০১৭
এমএস