সরেজমিনে জানা গেছে, সাম্প্রতিক বন্যায় রোপা আমনের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় চারা সংকটে চরম বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। ফলে দূর-দূরান্ত থেকে আমনের দোগাছি সংগ্রহে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন তারা।
পৌরসভাসহ উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা এবারের বন্যায় প্লাবিত হয়। এতে ঘর-বাড়ি, রাস্তা-ঘাটসহ রোপা আমনের ব্যাপক ক্ষতি হয়। রোপা আমন পানিতে তলিয়ে থাকায় পচে যায়। কোথাও কোথাও দ্রুত পানি সরে যাওয়ায় চারাগুলো বেঁচে আছে কোনোমতে।
যেসব জমির রোপা আমন পচে গেছে, সেখানে নতুন করে চারা তৈরি করে লাগানো সম্ভব নয়। তাই কৃষকরা দোগাছি সংগ্রহে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। জমি থেকে আমনের চারা তুলে জমিতে লাগিয়ে দোগাছি তৈরি করা হয়, যাকে এখানকার কৃষকরা ‘চড়াই’ নামে চেনেন। ৫ কাঠার দোগাছি কিনতে হচ্ছে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকায়, যা দিয়ে ২ থেকে ৩ বিঘা জমিতে নতুন করে রোপা আমন লাগানো সম্ভব বলে জানান কৃষক আমিনুর রহমান।
সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ হোমায়রা মণ্ডল জানান, এ বছর উপজেলার মোট ৮ হাজার ২১৭ হেক্টর জমিতে লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও এর বেশি জমিতে রোপা আমন লাগান কৃষকরা। কিন্ত বন্যা তাদেরকে পথে বসিয়েছে। পৌরসভাসহ উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের প্রায় ৩ হাজার ৬৪০ হেক্টর জমির রোপা আমন সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, কৃষকদের দোগাছি সংগ্রহ করতে ও বন্যা পরবর্তী কৃষি ব্যবস্থা নিয়ে লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে। কৃষকরা বিআর-৩৪ জাতের চারা তৈরি করেছেন। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত রোপা আমনের শূন্যতা পূরণেরও অনুরোধ জানানো হয়েছে।
সৈয়দপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোখছেদুল মোমিন জানান, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তাদের মাঝে বীজ, চারা ও দোগাছি বিতরণও চলছে। কৃষকদের পুনর্বাসনে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বজলুর রশীদ জানান, পাঁচ ইউনিয়নই কম-বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যা জনপদ জুড়ে ক্ষতচিহ্ন রেখে গেছে। এলাকায় ত্রাণ সহায়তা অব্যাহত রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে সম্ভব সব কিছুই করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১২২০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০১৭
এএসআর