এদিয়ে সংসার চলে না তাই অন্যের জমি বর্গা নিয়ে কোনো রকমে চালান তার সংসার। তার এক ছেলে তিন মেয়ে।
শুষ্ক মৌসুম বিশেষ করে ইরি চাষের সময় জমি চাষসহ ফসল উৎপাদন করতে তিনি বেশ সমস্যায় পড়েন। কারণ শুষ্ক মৌসুমে পানির স্তর ক্রমাগত নিচের দিকে নেমে যায়। নদী-পুকুর ও বিলের পানি শুকিয়ে যায়। ফলে তার মতো গবিব কৃষকের পক্ষে আধুনিক যন্ত্রপাতি ক্রয় ও পানি কিনে জমিতে দেওয়া কষ্টদায়ক হয়। যদিও কখনো বাধ্য হয়ে পানি কিনে সেচ কাজে ব্যবহার করেন তখন ফসল উৎপাদনে যে খরচ হয় সবমিলে আর তেমন কিছুই অবশিষ্ট থাকে না।
শনিবার (১০ মার্চ) সংবাদ সংগ্রহে উপজেলা ঘুরে দেখার সময় বাবা ছেলে মিলে দোন/ঢোঙ্গা দিয়ে জমিতে পানি সেচের দৃশ্য চোখে পড়লে বাংলানিউজকে বৃদ্ধ কৃষক মোফাজ্জল হোসেন এই কথাগুলো জানান।
তিনি জানান, হামরা গবিব মানুষ। এখন পানি সেচের জন্য কত আধুনিক যন্ত্রপাতি বাইর হইছে। স্যালো, ডিপ,মর্টার আরও কতো কি ? হামার এত টাকা নাই যে, যা দিয়া হামরা যন্ত্রগুল্যা কিনবাইর পারি। এমনিতেই পানির দাম দিব্যার পারি না।
তিনি আরও জানান, মোর কপাল ভালো যে, মোর ভুইয়ের পাশোত তাও পানি আছে। না হইলে যে মোর কি হইল হয় ?
বদরগঞ্জ মহিলা ডিগ্রি কলেজের জীববিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম জানান, আমি ছোট বেলায় দেখেছিলাম কৃষকরা দোন/ঢোঙ্গা আর সেঁউতি দিয়ে খাল হতে পানি উত্তোলন করে তারা তাদের জমিতে দিতো। এখন আর আগের মতো চোখে পড়ে না। তবে এখনও গ্রামাঞ্চলের কৃষকদের দোন ও সেঁউতি দিয়ে পানি উত্তোলন দেখতে পাওয়া যায়।
বদরগঞ্জ উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা কনক রায় বাংলানিউজকে জানান, এখন আধুনিক যন্ত্রপাতি সহজলভ্য হওয়ায় এবং পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় ও নদী-পুকুরে পর্যাপ্ত পানি না থাকায় দোন/ঢোঙ্গা আর সেঁউতির ব্যবহার আর আগের মতো চোখে পড়ে না। তবে যে জায়গাগুলোতে সেচ পাম্প অপ্রতুল সে জায়গাগুলোতে এখনও দোন ও সেঁউতির ব্যবহার দেখা যায়।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৬ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০১৮
এএটি