বিশাল এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে থাকা সবুজ কচি ডগার বুক ভেদ করে বের হয়েছে ফুটন্ত সাদা ফুল। দেখে মনে হচ্ছে যেন প্রকৃতি শিম গাছের ফল ও লতা-পাতা দিয়ে তৈরি করেছে বিশাল এক সবুজ গালিচা।
বুধবার (২১ মার্চ) এমন চিত্র দেখা যায় দিনাজপুর সদর উপজেলার ছয় নম্বর আউলিয়াপুর ইউনিয়নের ফরিদপুর গ্রামের শিমপল্লীতে।
চৈত্রের শুরুতে দিনের বেলায় অসনীয় গরমের পাশাপাশি কঠোর রোদের তাপ। অপরদিকে সন্ধ্যা নামলেই চারপাশে হালকা শীতের অনুভূতি। সবমিলিয়ে দিনে গরম আর রাতে ঠাণ্ডা। এমন কঠিন আবহাওয়ার পরিস্থিতে শিমগাছকে বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা করতে সারাক্ষণ পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষকেরা। ফুল ও ফলে ভরা মাচার পরিচর্যার পাশাপাশি কৃষকেরা শিম সংগ্রহ ও বাজারজাত করছেন প্রতিনিয়ত। আউলিয়াপুর ইউনিয়নের ফরিদপুর গ্রামের শিমপল্লীর কৃষক শামীম আহমেদ বাংলানিউজকে জানান, ইতোপূর্বে শীত মৌসুম শেষ হওয়ার পর শিমক্ষেত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতো। স্থানীয় কৃষি বিভাগের সঠিক পরামর্শে শীত শেষেও শিম চাষ করা সম্ভব হয়েছে। সাধারণত শিমক্ষেতে শুটির মাজরা পোকা ও জাব পোকা আক্রমণ করে থাকে। এছাড়া মরিচা রোগ ও হলুদ মোজাইক রোগে আক্রান্ত হয়। এসব রোগ ও পোকার আক্রমণ থেকে শিমক্ষেতকে রক্ষা করতে নিয়মিত পরিচর্যা করতে হয়।
তিনি জানান, শীতের শুরু থেকে এ পর্যন্ত প্রতিনিয়ত এখান শিম সংগ্রহ করে জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাঠানো হয়। শিম উৎপাদনে এবার রেকর্ড পরিমানে লাভ করেছে স্থানীয় কৃষকেরা। এই পল্লীতে দেশি-বিদেশি কয়েক জাতের শিম চাষ হয়ে থাকে। বর্তমানে দাড়িকা ও ঘিয়া জাতের শিম চাষ করছে কৃষকেরা। আগামী এক থেকে দুই মাস পর্যন্ত এখানকার উৎপাদিত শিম সংগ্রহ করে বাজারজাত করা সম্ভব বলে জানান তিনি।
দিনাজপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. তৌহিদুল ইকবাল বাংলানিউজকে জানান, দিনাজপুর জেলার মধ্যে শিম চাষের জন্য আউলিয়াপুর ইউনিয়নের ফরিদপুর গ্রাম অন্যতম। এখানে প্রতিবছর শিম চাষে স্থানীয় কৃষকরা আগ্রহী হয়ে উঠছে। শিম গাছের চারা রোপণের শুরু থেকে ফলন উত্তোলন করা পর্যন্ত কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক যোগাযোগ বজায় রেখে পরামর্শ দিয়ে আসছেন। আগামীতে এখানে শিম চাষে আরো জমি বাড়বে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৯০৪ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০১৮
এএটি