কয়েক বছর ধরে পরীক্ষা করার পর এবার তিনি আশার আলো দেখেন। বেগুন গাছে টমেটো ধরেছে।
বাবলু বাংলানিউজকে বলেন, আমি সামান্য একজন চাষি। অন্যের জমি বর্গা নিয়ে চাষাবাদ করি। নিজের কোনো জমিজমা নাই। তবে আমার ইচ্ছা আছে কাজ করার। নিত্য নতুনভাবে ফসল চাষাবাদ করার। বাজারে যেখানে বিষযুক্ত সবজি ভরপুর সেখানে আমি বিষমুক্ত সবজি চাষাবাদ করি।
তিনি বলেন, আমার অনেক দিনের শখ এটা। একটি গাছে অনেকগুলো সবজি বা ফসল ধরবে। তাই আমি গত বছর একটি বেগুন গাছে টমেটোর ডগা কেটে নিয়ে কলম করি। সেখানে কিছুদিন পর দেখা যায় টমেটোর ডগাটি বেগুনের ডগার মতোই বড় হচ্ছে।
কলম করার প্রায় এক মাস পর বেগুন গাছে টমেটোর ডগায় টমেটো ধরে। তারপর কয়েকটি টমেটো পাই ওই বেগুন গাছ থেকে।
উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে এবার ২০টি বেগুন গাছে কলম করি। গাছপ্রতি ৩৫-৪০টা করে টমেটো পেয়েছি। এখনো ১৫-২০টা করে টমেটো গাছে রয়েছে। এক ডগায় বেগুন আর অন্য ডগায় টমেটো। এতে টমেটো গাছের জন্য বাড়তি কোনো সার দেওয়া লাগে না। কম খরচেই এক গাছে দুই ফসল। স্বাদেরও কোনো কমতি নেই। তিনি খুশিতে বলেন, ‘ডালে ডালে টমেটো, বেগুনে ডিস্টাব নাই’।
এ বছর বাবলু দুই বিঘা জমিতে বেগুন-টমেটো ছাড়াও দেড় বিঘা জমিতে লাউ, দেড় বিঘায় ঢ্যাঁড়শ, এক বিঘায় কাঁচামরিচ, ৩ হাজার কলা ও ৬শ’ পেঁপে গাছের চাষ করেছেন।
২০১১ সালে বাবলু ঢ্যাঁড়শ গাছ থেকে পাটের মতো আঁশ উদ্ভাবন করে ব্যাপক সাড়া ফেলেন। ২০১২ সালে রাজধানীতে জনবিজ্ঞান ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত উদ্ভাবনী মেলায় ২৫ স্বশিক্ষিত উদ্ভাবকের একজন বাবলু।
মিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রমেশ চন্দ্র ঘোষ বাংলানিউজকে জানান, বাবলু একজন সফল বিষমুক্ত সবজি চাষি। এ উপজেলার একজন মডেল চাষি হিসেবে তিনি পরিচিত। এছাড়া সবজি চাষ করে এবং উদ্ভাবনী চাষি হিসেবে তিনি বিভিন্ন পুরস্কার পেয়েছেন।
তিনি বলেন, বেগুন, টমেটো, তিতবেগুন একই গোত্রের হওয়ার কারণে বেগুন গাছে খুব সহজেই টমেটোর কলম করা যায়। এছাড়া বেগুনের চেয়ে তিতবেগুনে রোগবালাই কম হয়। এজন্য আমরা তিতবেগুন গাছে কলম করার চেষ্টা করছি।
রমেশ চন্দ্র ঘোষ বলেন, বাবলু তার জমিতে বেগুন গাছে কলম করে টমেটোতে সাফল্য পেয়েছে। সৌখিন ব্যক্তিরা এগুলো বাড়ির ছাদে টবে করতে পারেন।
আগামীতে এ অঞ্চলে বেগুন গাছে টমেটো চাষ খুব জনপ্রিয় হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন এ কৃষি কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ সময়: ০৪২৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০১৮
আরবি/